বিএনপি ওয়াকআউট করেছে, ওঁরা শুধু নাম বদলান, কিন্তু কোন কাজ করেন না ॥ শিক্ষামন্ত্রী- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বিল

 বরিশালে শহীদ জিয়াউর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে সংসদ অধিবেশন শুরুর মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেছে বিরোধী দল। যদিও ১২ মিনিট পর তারা পুনরায় ফিরে এসে সংসদ কার্যক্রমে অংশ নেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বিলটির তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, দিনবদলের কথা বলে বর্তমান সরকার এখন শহীদ জিয়ার নামবদলে ব্যসত্ম। জবাবে শিৰামন্ত্রী নুরম্নল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট শুধু নাম বদল করে জিয়ার নাম বসালেও বরিশালে বিশ্ববিদ্যালয় করেনি। বর্তমান সরকার আগের নামই বহাল রেখে বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মাণ করছে।
৩০ মিনিট বিলম্বে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরম্ন হয়। দিনের কার্যসূচীতে থাকা প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপন এবং জনগুরম্নত্বসম্পন্ন নোটিসের কার্যক্রম স্থগিত করে দেন স্পীকার। এরপরই শিৰামন্ত্রী নুরম্নল ইসলাম নাহিদ শহীদ জিয়াউর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় বরিশাল আইন সংশোধন করে 'বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়' নামকরণ করে একটি বিল উত্থাপন করার সঙ্গে সঙ্গে এ বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
বিলটির বিরোধিতা করে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, দেশের মানুষের অনেক সমস্যা। পানি, বিদ্যুত ও গ্যাসের সঙ্কটে হাহাকার চলছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশের কোন মানুষের আজ নিরাপত্তা নেই। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশের মানুষের এসব সমস্যার দিকে কোন নজর না দিয়ে বর্তমান সরকার শহীদ জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় এভাবে কোটি কোটি মানুষের হৃদয় থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা যাবে না। দিনবদলের নামে ভোট নিয়ে এখন জিয়াউর রহমানের নামবদলের খেলা শুরম্ন করেছে। জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে, দিনবদলের নামে জিয়াউর রহমান, তাঁর পরিবার এবং জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র থাকলে বর্তমান সরকারকে আগামী নির্বাচনে আবারও বিরোধী দলে আসতে হবে। অবশ্যই আমরা আগামী নির্বাচনে সরকার গঠন করব। তখন পরিবর্তিত নামগুলো ফের পূর্বের স্থানে বসানো হবে।
সরকারের এমন প্রতিহিংসামূলক কর্মকা-ের প্রতিবাদে আমরা সংসদ থেকে ওয়াকআউট করছি বললেও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর হসত্মৰেপে কিছু সময় অপেৰা করেন। এ সময় স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ বলেন, মনে হচ্ছে উভয় দলই নাম পরিবর্তন করে ওলি-আউলিয়ার নাম দিয়ে ছওয়াব কামাই করছে। আগে বিএনপির সময় চট্টগ্রামের এম এ হান্নানের নাম পরিবর্তন করে পীর আউলিয়া শাহ আমানত (র) করে ছওয়াব কামাই করে। আবার এখন জিয়ার নাম পরিবর্তন করে হযরত শাহজাহাল (র) নামকরণ করে ছওয়াব কামাই করছে।
এ সময় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের বক্তব্যের জবাব দিতে দাঁড়িয়ে শিৰামন্ত্রী নুরম্নল ইসলাম নাহিদ বলেন, নাম পরিবর্তন নয়, আগের নামই ফেরত আনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। মিথ্যা ও অসত্য বক্তব্যে দিয়ে মওদুদ আহমেদ জাতিকে বিভ্রানত্ম করতে চাইছেন। তিনি বলেন, '৯৬-২০০১ পর্যনত্ম আওয়ামী লীগের গত সরকার দেশের নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যায় উচ্চশিৰিত করে গড়ে তুলতে দেশের ১২টি স্থানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধানত্ম নেয়।
তিনি বলেন, ওই সিদ্ধানত্ম অনুযায়ী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আইন পাস করা হয়। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ৰমতায় এসেই এসব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে শহীদ জিয়াউর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট বরিশাল বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে জিয়ার নাম দিলেও তা নির্মাণ করেনি। শুধু যে নামফলকটি স্থাপন করা হয়েছিল অনেক আগেই তার চিহ্নটি পর্যনত্ম নিশ্চিহ্ন হয়েছে।
শিৰামন্ত্রী বলেন, নাম পরিবর্তন করেও যদি বরিশালে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করত খুশি হতাম। এখন অন্য স্থানে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মাণ করছে। ওই এলাকার প্রতিটি মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম এলাকার নামেই করার প্রসত্মাব দিয়েছেন। একজনও জিয়ার নামে রাখার পৰে কথা বলেননি। আগেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ ছিল, এখনও তাই সেই নামেই আছে। মাঝে কিছু সময়ের জন্য পরিবর্তন করা হয়েছিল। কোন কিছু বলার মুখ নেই বলেই তারা ওয়াকআউটের নাটক করছেন।

No comments

Powered by Blogger.