ভোলা-৩ আসনে উপনির্বাচন ২৪ এপ্রিল

আগামী ২৪ এপ্রিলই ভোলা-৩ আসনে উপনির্বাচন হবে। অসত্য তথ্য দেয়ার অভিযোগে হাইকোর্টের রায়ে শূন্য ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য জসিম উদ্দিনের এ আসনে উপনির্বাচনের চূড়ান্ত তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার ইসি সচিবালয়ের সম্মেলন কৰে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা এ ঘোষণা দেন। তফসিলে আগামী ২৪ এপ্রিল ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৯ মার্চ মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ সময়, ৩১ মার্চ মনোনয়নপত্র বাছাই ও ৮ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার সময় সিইসির সঙ্গে দুই নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) এম সাখাওয়াত হোসেন এবং সচিব মুহম্মদ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ২৪ এপ্রিল উপনির্বাচনের দিন নির্ধারণ করে প্রাথমিক তফসিল প্রসত্মুত করেছিল ইসি।
তফসিল ঘোষণার সময় সিইসি জানান, লালমোহন উপজেলা ও তজুমুদ্দিন উপজেলা নিয়ে এ নির্বাচনী এলাকা। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৬৯। ভোটকেন্দ্র ৮৬টি ও ভোটক ৫৪৭টি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সরকারের সময়ে ইতোমধ্যে আটটি উপনির্বাচন করেছি আমরা। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ভোলা-৩ শূন্য আসনের নির্বাচনকে একটি মডেল নির্বাচন হিসাবে আমরা উপস্থাপন করতে চাই। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপে নির্বাচন করার লৰ্যে এ নির্বাচনে সরকারের কোন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা একই পদমর্যাদার কেউ প্রচার কাজে অংশ নিতে পারবেন না।
সিইসি জানান, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ২৪ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এর মধ্যে একজন এসআই-এর নেতৃত্বে ১৪ অস্ত্রধারী সদস্য থাকবে। ভোটকেন্দ্রের বাইরে নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স, র্যাব-পুলিশের সদস্য থাকবে। এছাড়া কেন্দ্রে ইসির নিজস্ব পর্যবেক কর্মকর্তাও নিয়োজিত থাকবে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরম্নদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সিইসি বলেন, কোন অভিযোগ পেলেই তদনত্ম করা হবে। আর তদনত্মে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর শাসত্মিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে সাঁটানো বহুরঙা প্রচারমূলক পোস্টার ২২ মার্চের মধ্যে তুলে ফেলার অনুরোধ জানান তিনি।
উলেস্নখ্য, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদকে হারিয়ে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের মেজর (অব) মোঃ জসিম উদ্দিন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-এর ১২ (চ) ধারা মতে অবসরের ৩ বছরের মধ্যে এবং ১২ (ছ) ধারা মতে বাধ্যতামূলক অবসরের ৫ বছরের মধ্যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যায় না। জসিম উদ্দিনের বাধ্যতামূলক অবসরের ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই তিনি জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাকে ২০০৪ সালের ৩১ আগস্ট বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। ফলে হাফিজউদ্দিন আহমেদের আবেদনে ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রম্নয়ারি হাইকোর্ট জসিম উদ্দিনের সংসদ সদস্য পদ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। সংসদ সদস্য পদ অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরম্নদ্ধে গত ১৮ অক্টোবর ভোলা-৩ আসনের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য জসিম উদ্দিনের আপীল আবেদন খারিজ করে দেয় আপীল বিভাগ। আদালতের রায়ের কপি পাওয়ার পর গত ৩ ফেব্রম্নয়ারি ভোলা-৩ আসন শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে জাতীয় সংসদের স্পীকার এ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ তা সংসদে অবহিত করেন।

No comments

Powered by Blogger.