বলিউড-হলিউড- এবারও সেরা বিদ্যা

‘দ্য ডার্টি পিকচার’ ও ‘কাহানি’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বিদ্যা বালান বলিউডের শীর্ষ নায়িকার আসনটি দখল করে নিয়েছেন। দ্য ডার্টি পিকচার ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের কারণে গত বছর তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।
এবার তিনি ‘কাহানি’ ছবির মাধ্যমে ফিল্ম ফেয়ার-২০১২ এর সেরা অভিনেত্রীর খেতাব অর্জন করলেন। গত রোববার রাতে তার হাতে সেরা অভিনেত্রী ট্রপিটি তুলে দিয়েছেন সত্তর দশকের নন্দিত অভিনেত্রী রেখা। এ প্রসঙ্গে বিদ্যা বলেন- আমি শৈশবে টিভির পর্দায় আইফা অনুষ্ঠান দেখে বেশ পুলকিত হতাম। আজ আমার হাতেই সেরা অভিনেত্রীর ট্রফিটি উঠেছে। মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি। পুরস্কারটি পেয়ে আমি সত্যি সত্যিই গর্বিত এবং উচ্ছ্বসিত। এদিকে সেরা অভিনেত্রীর ট্রফিটি রকস্টারখ্যাত রণবীর কাপুরের ঘরে গেছে। তিনি নির্বাক চলচ্চিত্র ‘বরফি’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের সুবাধে এ পুরস্কারটি লাভ করেন। অন্যদিকে ইরফান খান (পান সিং তুমার) এবং রিচি চাড্ডা গ্যোংস অফ ওয়াসিপুর সেরা সমালোচক পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। আইফার ৫৮তম আসনটি সঞ্চালনা করেছেন প্রযোজক, নির্মাতা এবং সঞ্চালক করণ জোহর। এবারও এ অনুষ্ঠানে বলিউডের সব রথী মহারথীরা উপস্থিত ছিলেন।

বলিউডে আলোচনায় ‘ইলিয়েনা’
আলিয়া ভাট, সানি লিওন, এশাগুপ্ত, ইয়ামি গৌতম, হুমা কোরেসি ও ফারা খানেরা হিংসার আগুনে জ্বলেপুড়ে ছারখার হতেই পারেন কিন্তু সত্যি কথাটি বলতেই হবে- তাই সবাইকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত কিনা ইলিয়েনা ডি ক্রুজ একাই শ্রেষ্ঠ নতুন অভিনেত্রীর পুরস্কার ঘরে তুলে নিলেন ফিল্ম ফেয়ার সবইতে ঝুলিতে ভরলেন ২৫ বছরের ইলিয়েনা। নতুন নায়িকাদের হিংসার হেতুটিও ফেলে দেয়ার মতো নয়। মিস ডি ক্রুজ সাত বছর আগেও ফিল্ম ফেয়ার থেকে একই পুরস্কার পেয়েছিলেন। অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ নতুন অভিনেত্রী পুরস্কার। সেটি অবশ্য ছিল দক্ষিণী ছবির জন্য। ২০০৬ সালে প্রথম তেলেগু ছবি দেভাদাসুতে অভিনয় করে এ পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন ইলিয়েনা। এরপর আরও ১৫টি তেলুগ, ২টি তামিল, ১টি কানারা ছবিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা পুঁজি করে ক্যারিয়ারের প্রথম হিন্দী ছবি বরফিতে বাঙালী বধূ শ্রুতি ঘোষের চরিত্রে অভিনয় করেন ইলিয়েনা। তেলেগু ছবির সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত ইলিয়েনা ছবি পিছু যা নেন তা বলিউড অভিনেত্রীর কাছে রেকর্ডতুল্য। এই অভিনেত্রী তার প্রথম বলিউডি প্রকল্পে সু অভিনয় করে সমালোকদের ভ্রƒ নাচাতে বাধ্য করবেন এটাই তো স্বাভাবিক। শুধু কি সু অভিনয়? ইলিয়েনার ক্যারিয়ারের ৯০ শতাংশ ছবিই সুপারহিট, নয়ত ব্লকবাস্টার হিট। অভিনয় জীবনের প্রথম বছরেই পোকিরি ছবিতে ধুন্দুমার জনপ্রিয়তা পেয়ে যান ইলিয়েনা। সেই ছবি সালমান খান রিমেকও করেন বলিউডে ওয়ারেন্ট নাম দিয়ে। নায়িকা চরিত্রে ইলিয়েনাকেই প্রথম পছন্দ ছিল সালমান ও পরিচালক প্রভু দেবার। কিন্তু ম্যাডাম ডি ক্রুজ তখনো নাকি বলিউমুখী হওয়ার ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছিলেন। বলিউডবাসীর আবার কারও আশায় বসে থাকার মতো সময় নেই। ইলিয়েনার ‘না’ আয়শা টাকিয়ার ক্যারিয়ারের বড় ধরনের সাফল্য এনে দেয়। সেই আফসোসের ক্ষত এখনো শুকায়নি ইলিয়েনার মনে। ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া ইলিয়েনার ‘কিক’ ছবিটি এবার সালমান খানই রিমেক করেছেন। আর নায়িকা চরিত্রে লাইন ধরেছেন প্রিয়াঙ্কা থেকে দীপিকা, সোন, সোনাক্ষী ও পরিণীতা আর লাইনের খুঁটিটি শক্ত করে ধরে আছেন একমাত্র ইলিয়েনাই। মূল ছবিতে যে তিনি অভিনয় করেছিলেন এবার হয়ত ভাগ্যের দিকে ছিকে ছিঁড়বে, খান সাহেবের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ মিলবে। অবশ্য প্রথম হিন্দী ছবিতেও ইলিয়েনার অন্তর্ভুক্তি অনেকটা সিনেমার চিত্রনাট্যের মতো। শুরুতে ক্যাটরিনা কাইফ ‘শিডিউল নেই’ অজুহাত দেখিয়ে এবং পরবর্তী সময় দীপিকা পাড়–কোন চরিত্র পছন্দ হয়নি বলে পরিচালককে হতাশ করেন। বাধ্য হয়েই অনুরাগ বসু সিদ্ধান্ত নেন নতুন কাউকে ‘ব্রেক দিয়ে দেখিয়ে দেবেন তথাকথিত গ্ল্যামডলদের। প্রথম হিন্দী ছবি বরফি সব মিলিয়ে ১৭৫ কোটি রুপী ঘরে তোলার পর ইলিয়েনা মাত্র ছবিকেই হ্যাঁ বলেছেন এখন পর্যন্ত রাজ কুমার সন্তোষীর ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো (শহীদ কাপুর) শহীদ কাপুরের অন্য নায়িকাদের মতো ইলিয়েনাও নাকি প্রেম প্রেম খেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ‘লাভটয়’ শহীদের সঙ্গে। অবশ্য ‘যতসব গুঞ্জন’ আওড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ান যুবকের সঙ্গেই এখানে সেখানে দেখা যাচ্ছে ম্যাডাম ক্রুজকে। বিজ্ঞজনদের মতো ইলিয়েনা বলেন, প্রেম করার মতো সময় আমার নেই। আমার ধ্যান-জ্ঞান এখন কাজ নিয়ে। তল্পিতল্পা গুটিয়ে এখন মুম্বাইয়ে নিবাস গড়েছেন ইলিয়েনা। (সূত্র- বলিউড টাইমস, বলিউড হাঙ্গামা, ফিল্মফেয়ার, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও হিন্দুস্থান টাইমস)

হলিউডে সময় এখন জেসিকার
জেসিকা চ্যাস্টেন একাই হেঁটেছেন দীর্ঘ ক্লান্ত পথ। অবশেষে পৌঁছেছেন স্বর্গের দুয়ারে। যে চ্যাস্টেইনের মধ্যে প্রতিভার ছিটেফোঁটাও খুঁজে পানটি দুঁদে পরিচালকরা, সেই তাঁরই দুটো ছবি বক্স অফিসের শীর্ষ দুটো জায়গা দখল করে আছে এখন। দুই নম্বরে হরর ছবি মামা তিনে লাদেন- বধের কাহিনী নিয়ে নির্মিত জিরো ডার্ক থার্টি। এ ছবির জন্য মাত্র কদিন আগে গেল্ডেন গ্লোব জিতলেন কদিন আগে। গত বছর টেক শেল্টার করিওলানুস দ্য ডে, ড্য ট্রি অব লাইফ ও দ্য হেল্প এই পাঁচ ছবির কারণে বাসার ট্রফিকেস ভরে গিয়েছিল একের পর এক পুরস্কারে। এবারও জিরো ডার্ক থার্টি পূর্বাভাস দিচ্ছে পুরস্কারের ভারি বর্ষণের মঞ্চ কাঁপানো এই অভিনেত্রীর রুপালি পর্দায় অভিষেকই ২০০৮ সালে ৩১ বয়সে। প্রথম বারের মতো নজরে আসে ২০১১ সালে। এ বছরই মুক্তি পায় ট্রি অব লাইফ ও দ্য হেল্প। সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর মনোনয়ন পান অস্কার গেল্ডেন গ্লোব, বাফটা এবং স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার। টাইম সাময়িকী ২০১২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তিত্বের একজন হিসেবে মনোনীত করে মার্কিন এই অভিনেত্রীকে। চ্যাস্টেইনের সাত সাতটি ছবি মুক্তি পায় ২০১১ সালে। হলিউডে যে সংখ্যাটি সত্যি অবিশ্বাস্য। এ বছর মুক্তি পাওয়ার অপেক্ষায় আছে আরও দুটি ছবি। বেশি বেশি কাজ করতে গিয়ে অভিনয়ের মানও যে হারিয়ে ফেলেননি, সেটির সাক্ষ্য দিচ্ছেন অস্কার বা গোল্ডেন গ্লোব। মুখে অবশ্য বলছেন- পুরস্কারের লোভে কাজ করেন না। তবে এটাও বলতে বাধ্য হচ্ছেন আমি পুরস্কারের লোভে কাজ করি না। ১৯৭৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার জন্ম নেয়া বাবুর্চি মা এবং অগ্নিনির্বাপণ কর্মী বাবার মেয়ে চ্যাস্টেইন ছোট থেকেই স্বাধীনচেতা। সেই চরিত্রটির দেখা মিলবে জিরো ডার্ক থার্টির মায়ার মধ্যে। সিআইএ এজেন্ট মায়ারাই অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল লাদেনের গোপন আস্তানা আবিষ্কার। আসল মায়ার সঙ্গে এখনও আমার দেখা হয়নি। কারণ সে এখনও সিআইএর হয়ে কাজ করছে কিন্তু মাঝে মধ্যে আমার মনে হয় আমরা যেন একই ঘরে এক সময় থাকতাম বলেছেন চ্যাস্টেইন। ৩৫ বছর বয়সী এখন হলিউডের সেই সব বিরল নারী শিল্পীর একজন, যাদের কারণে চিত্রনাট্যে নারী চরিত্রটি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে নির্মাতাদের। হলিউডে নারীরা বেশিরভাগই উপস্থাপিত হয়েছেন পর্দার জৌলুস বাড়ানোর কাজে। কিন্তু সেই ধারার এখন পরিবর্তনের ঢেউ দেখতে পাচ্ছেন চ্যাস্টেইন। (তথ্য- এল এ টাইমস ও হলিউড রিপোর্ট)
খন্দকার এনামুল হক মুকুল

No comments

Powered by Blogger.