মাঠে নামছে বড় দুই দল

অবশেষে তৃণমূলে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। আগামী ১৮ মার্চ থেকে শুরম্ন হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাদের দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফর। প্রায় এক মাসব্যাপী কেন্দ্রীয় নেতারা ১৬টি টিমে বিভক্ত হয়ে ৭২টি সাংগঠনিক জেলা সফর করবেন।
সেখানে সভা-সমাবেশ এবং বর্ধিত সভার মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ অভিযানকে জোরদার করা ছাড়াও সরকারের এক বছরের সাফল্য তুলে ধরবেন। বিরোধী দলের 'নেতিবাচক রাজনীতি' সম্পর্কে সচেতন করবেন দেশবাসীকে।
বুধবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানম-ির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকম-লীর জরম্নরী বৈঠকে এসব সিদ্ধানত্ম হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতিম-লীর সিনিয়র সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
বৈঠক সূত্র জানায়, সভার শুরম্নতেই সারাদেশের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। উপস্থাপন করা হয় কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক সফরের খসড়া কর্মসূচী। আলোচনার পর কিছু পরিবর্তন ও সংযোজন করে সফরসূচী চূড়ানত্ম করার সিদ্ধানত্ম হয়। এ ৰেত্রে সাত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা স্ব স্ব বিভাগের জেলার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে দেশব্যাপী সফরের তারিখ চূড়ানত্ম করবেন। সফরকালে দেশের তরম্নণ ও নারী ভোটারদের আওয়ামী লীগের পতাকাতলে আনতে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধানত্ম হয়।
বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ জানান, কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরকালে প্রতিটি জেলায় জনসভা, বর্ধিত সভা এবং সদস্য সংগ্রহ অভিযান চালানো হবে। এসব সভা-সমাবেশ থেকে সরকারের এক বছরের সফলতার পাশাপাশি আগামীতে সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মসূচী জনগণের কাছে তুলে ধরা হবে। একই সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের কাছ থেকে সরকারের কাছে জনগণের চাওয়া-পাওয়া এবং দাবি-দাওয়া সংগ্রহ করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট সরকারের হাইকমান্ডের কাছে জমা দেয়া হবে।
তিনি জানান, সফরকালে শুধু সাংগঠনিক তৎপরতাই নয়, বিরোধী দলের সন্ত্রাস, নৈরাজ্যসহ পরিকল্পিতভাবে সরকার ও সংসদকে অস্থিতিশীল করার বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র, তাদের পাঁচ বছরের দুনর্ীতি-দুঃশাসনের বিরম্নদ্ধে জনমত সৃষ্টি করা হবে। একই সঙ্গে বিরোধী দল যাতে তাদের নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে সঠিক পথে আসে, সেজন্য জনগণের মধ্য থেকেই চাপ সৃষ্টির পদৰেপ নেয়া হবে। তিনি আরও জানান, দলকে সাংগঠনিকভাবে গতিশীল ও শক্তিশালী করতে কেন্দ্রীয়ভাবে সাংগঠনিক তৎপরতা চলবে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগ পর্যনত্ম। এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব-উল-আলম হানিফ জানান, দলের কেন্দ্রীয় বিভাগীয় উপ-কমিটিগুলো গঠনেরও কাজ চলছে। চলতি মাসের মধ্যেই এসব উপ-কমিটি ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডিমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অসুস্থ থাকায় বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডা. দীপু মনি, আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ফরিদুন্নাহার লাইলী, এ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুলস্নাহ, ড. হাছান মাহমুদ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, মৃণাল কানত্মি দাস।

জিয়ার ২৭ মার্চ ঘোষণার দিনে বিএনপির চট্টগ্রামে জনসভা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারবিরোধী আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে চট্টগ্রামে ২৭ মার্চ জনসভার মধ্য দিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে জনসংযোগ শুরম্ন করবেন বিরোধী দলের নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পর্যায়ক্রমে অন্য পাঁচ বিভাগীয় শহরেও জনসভা করবেন তিনি। বিভাগীয় পর্যায়ে জনসভার পর রাজধানী ঢাকায় মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। মহাসমাবেশ থেকে বেগম খালেদা জিয়া সরকারের বিরম্নদ্ধে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে পারেন বলে মনত্মব্য করেন বিএনপি নেতারা। চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামে জনসভা করার প্রসত্মুতি নিয়েছে বিএনপি। জনসভাকে সামনে রেখে শনিবার চট্টগ্রামে দলীয় নেতারা আবার বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বিভাগীয় শহরে জনসভার সেস্নাগান নির্ধারণ করা হয়েছে_ চলো চলো চট্টগ্রাম চলো। বিএনপির দাবি একাত্তরের মার্চ মাসেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। দলীয় নেতাদের দাবির প্রেৰিতে ২৭ মার্চ চট্রগ্রামে জনসভা করার সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়। জনসভায় চট্রগ্রাম বিভাগের সকল জেলা থেকে নেতাকর্মীসহ সকল সচেতন মানুষজনকে জমায়েত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
এদিকে বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে মার্চ ও এপ্রিল মাস জুড়ে জনসংযোগ কর্মসূচী গ্রহণ করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। ইতোমধ্যে সরকারের বিরম্নদ্ধে আন্দোলনের প্রসত্মুতি নিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জেলায় জেলায় সফর শুরম্ন করছেন। তবে চট্টগ্রামে জনসভা করার মধ্য দিয়ে বিভাগীয় শহরে জনসংযোগ শুরম্ন করা হচ্ছে।
বুধবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাদের এক বৈঠকে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে জনসভা করার সিদ্ধানত্ম হয়। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় নেতা ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, সহ-সভাপতি আবদুলস্নাহ আল নোমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমির খসরম্ন মাহমুদ চৌধুরী, এম মোরশেদ খান, যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ, বরকতউলস্নাহ বুলু, ও মোহাম্মদ শাহজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, আনত্মর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মীর নাসির উদ্দিন আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, সংসদ সদস্য জাফরম্নল ইসলাম চৌধুরী।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দেশের ছয় বিভাগীয় শহরে বিএনপি জনসভা করবে। ওই জনসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। চলতি মাসের ২৭ মার্চ চট্টগ্রামে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি। চট্টগ্রাম শহরে প্রথম জনসভা করার সিদ্ধানত্মকে ব্যাখ্যা করে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, একাত্তরের এ মার্চ মাসেই আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিরতা বিরাজ করছে। চট্টগ্রাম বন্দর অন্য দেশকে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এসব বিবেচেনায় রেখেই চট্টগ্রাম থেকে বিভাগীয় জনসভা করার সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়েছে দলীয় বৈঠকে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের পর পর্যায়ক্রমে অন্য পাঁচ বিভাগীয় শহরেও জনসভা করা হবে। তবে অন্যান্য বিভাগে জনসভার করার দিন-তারিখ এখনও চূড়ানত্ম হয়নি। চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামের জনসভা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। জনসভাকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাদের মধ্যে কোন্দলের আশঙ্কা আছে কিনা জানতে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপিতে কখনও কোন্দল ছিল না, এখনও নেই, তবে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা রয়েছে। চট্টগ্রাম জনসভায় কোন্দল হবে নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে চট্টগ্রামের সকল নেতা উপস্থিত ছিলেন। সব নেতার উপস্থিতিই প্রমাণ করে চট্টগ্রামে কোন কোন্দল নেই। বৈঠকের পর বিএনপি নেতারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা আদালত দ্বারা স্বীকৃত। সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান।

No comments

Powered by Blogger.