দলিতদের সুরক্ষায় আলাদা আইন প্রণয়নের দাবি

দলিতদের প্রতি সমাজের বৈষম্যমূলক আচরণ প্রতিরোধ করতে এবং তাদের নাগরিক অধিকার সুরক্ষার জন্য আলাদা আইন প্রণয়ন করতে হবে। তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে দলিতদের নাগরিক অধিকার বাস্তবায়নে আইনি সুরক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে গতকাল শনিবার সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এ দাবি জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আইন কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, সংবিধানে মানুষের মৌলিক অধিকার ও সমানাধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া থাকলেও দলিতরা বিভিন্নভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে, যার মূলে রয়েছে তাদের প্রতি অবজ্ঞা ও অস্পৃশ্যতা। তারা প্রজন্ম ধরে শ্রম দাসত্বের শিকার হচ্ছে, শিক্ষা ও ন্যায়বিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, শুধু দলিতদের জন্য গোষ্ঠীকেন্দ্রিক আইন নয়, যেকোনো মানুষের প্রতি বৈষম্য প্রতিরোধের জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) বার্ষিক প্রতিবেদনের সমালোচনা করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘তারা বলছে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নাকি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মানা হয়নি। আপনারা (এইচআরডব্লিউ) কি চেয়েছিলেন দুজন মার্কিন, দুজন ব্রিটিশ, দুজন ফরাসি, দুজন জার্মান বিচারক নিয়োগ করলেই ট্রাইব্যুনালের বিচার ভালো হয়ে যেত?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দলিত বলে কোনো শব্দ বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতিতে থাকা উচিত নয়।
আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এম শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মেসবাহ কামাল, মাসুম বিল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারজানা ইসলাম প্রমুখ। ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন আইন কমিশনের জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা শারমিন নিগার। সূচনা বক্তব্য দেন আইন কমিশনের সচিব হাসিনা রওশন জাহান।

No comments

Powered by Blogger.