রাজধানীতে জাল ডলার ইউরো ও রুপি উদ্ধার বিদেশীসহ গ্রেফতার ৮

রাজধানীতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে জাল ডলার, ইউরো ও ভারতীয় রুপি তৈরির দু’টি চক্রকে আটক করেছে।
এ সময় বিদেশী নাগরিকসহ আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে জিংগে ফিলিক্স সিফু, সামজেলা ক্রিস, স্টিফেন লুক, গোলাম কিবরিয়া, ইউসুফ আলী, জাহিদ হোসেন, দানিস আলম ও সালমা বেগম ওরফে লাকী। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পুলিশ ৪৫ হাজার ৮০০ ইউএস ডলার, ১২ হাজার ৫০০ জাল ইউরো, ৪০ লাখ টাকার ভারতীয় জাল রুপি, একটি প্রিন্টার, দু’টি ল্যাপটপ, এক বান্ডিল টাকা ছাপানোর কাগজ, ১০ বান্ডিল ইউএস ডলারের ছাপযুক্ত কালো কাগজ ও পাউডার এবং রাসায়নিক দ্রব্যসহ অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।

গতকাল দুপুরে মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি মশিউর রহমান জানান, সঙ্ঘবদ্ধ এ চক্র দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকা শহরের গুলশান, বনানী, উত্তরা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে জাল বিদেশী নোটের ব্যবসায়সহ বিভিন্ন প্রতারণামূলক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিল। রেডিসন, রিজেন্সি, ওয়াশিংটনসহ নগরীর নামী-দামি হোটেলে অবস্থান করে গার্মেন্ট ব্যবসায় ও বিদেশে পাঠানোর নামে চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন বাংলাদেশী নাগরিকের সাথে যোগাযোগ করে আসছিল। তাদের সর্বশেষ শিকার লন্ডন ফেরত সিলেটের এক বাসিন্দা। বিদেশে পাঠানোর নাম করে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে চক্রটি সাত লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। মূলত প্রতারণার শিকার ওই ব্যক্তির দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই চক্রটির সন্ধান পায় পুলিশ। তিনি জানান, শুক্রবার রাতে গুলশানের নিকেতন আবাসিক এলাকার ৪ নম্বর রোডে ৭৯ নম্বর বাসার ৮/এ নম্বর ফ্যাটে হানা দিয়ে পুলিশ চক্রটিকে গ্রেফতার করে।

এডিসি মশিউর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত জিংগে ফিলিক্স সিফু ও সামজেলা ক্রিস জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, তারা বাংলাদেশে এসে গুলশানের নিকেতন আবাসিক এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে জাল ডলার ও ইউরো তৈরি করে আসছিল। আর তাদের সহযোগী হিসেবে এসব জাল বিদেশী মুদ্রা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল বাংলাদেশী নাগরিক স্টিফেন লুক, কিবরিয়া ও ইউসুফ।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, গার্মেন্ট ব্যবসায়ের ছদ্মাবরণে অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে এ দেশে এসে বিদেশী নাগরিক জিংগে ফিলিক্স সিফু ও সামজেলা ক্রিস পরিকল্পিতভাবে নিজেদের পাসপোর্ট ও ভিসা ফেলে দেয়। পরে নতুন করে পাসপোর্ট ও ভিসা পাওয়ার জন্য নিজ নিজ দেশের হাইকমিশন বরাবরে আবেদন জানিয়ে তারা বাংলাদেশে অবস্থান করতে থাকে। নতুন কাগজপত্র বাংলাদেশে এসে পৌঁছার মধ্যবর্তী কয়েক মাস বাংলাদেশের বিভিন্ন অপরাধীর যোগসাজশে মাদক ব্যবসায়, ডলার ও ইউরোসহ বিভিন্ন বিদেশী মুদ্রা জালসহ প্রতারণামূলক কাজে লিপ্ত হয়। পরে অপরাধ সংঘটন করে তারা নতুন পাসপোর্ট নিয়ে আবারো নিজ দেশে চলে যায়। এর আগে শুক্রবার বিকেলে গোয়েন্দা পুলিশ মোহাম্মদপুরের একটি ফ্যাটে অভিযান চালিয়ে জাহিদ হোসেন, দানিশ আলম ও সালমা বেগম ওরফে লাকীকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা মূল্যমানের ভারতীয় জাল রুপি উদ্ধার করে।

No comments

Powered by Blogger.