ধর্ষণ মামলা বিষয়ে জাতীয় সম্মেলন- সহিংসতার শিকার নারীর সব গোপনীয়তা রক্ষার সুপারিশ

ধর্ষণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন, টু-ফিঙ্গার টেস্ট বাদ দেওয়া, দ্রুত আলমত সংগ্রহ ও সহিংসতার শিকার নারীর সব গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ‘ধর্ষণ মামলায় মেডিকেল সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ: নীতি, চর্চা এবং পদ্ধতি’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে গতকাল শনিবার বক্তারা এ সুপারিশ করেছেন।
সেই সঙ্গে ধর্ষণ মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ-প্রক্রিয়ার পরিবর্তনেরও দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্ল্যাস্ট), আইসিডিডিআরবি, মেরী স্টোপস, আমরাই পারি ক্যাম্পেইন, নারী মৈত্রী ও পপুলেশন কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে রাজধানীর আইসিডিডিআরবির সাসাকাওয়া মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ বাদ দেওয়ার ওপর জোর দিয়ে সম্মেলনে বক্তারা বলেন, এ পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসক ধর্ষণের শিকার নারী যৌন সম্পর্কে অভ্যস্ত কি না এবং তাঁর হাইমেন ভঙ্গুর কি না, তা জানার চেষ্টা করেন। পরীক্ষাটি ধর্ষণ প্রমাণের ক্ষেত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ দিতে পারে না। একজন নারী পূর্বে যৌন সম্পর্ক করেছেন কি না, এর সঙ্গে পরবর্তী সময়ে ধর্ষিত হওয়ার কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না বলেও মত দেন তাঁরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ধর্ষণ শুধু মানবাধিকারের লঙ্ঘনই নয়। এটি গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। ধর্ষণের ঘটনায় মেডিকেল সাক্ষ্য সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।
মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম বলেন, ‘ধর্ষণ ঘটনার পর সবাই শুধু মেয়েটির পরনে পোশাক কী ছিল, আচরণ কী ছিল—এসব নিয়ে প্রশ্ন করে। কিন্তু কেউ পুরুষটির পরনে কী ছিল, সে সম্পর্কে জানতে চান না।’
ব্ল্যাস্টের অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন বলেন, ভিকটিমের যৌন সম্পর্কের অতীত ইতিহাস কোনোভাবেই বিচার-প্রক্রিয়ায় প্রাসঙ্গিক হওয়া সমীচীন নয়।
পপুলেশন কাউন্সিলের এদেশীয় পরিচালক ড. ওবায়দুর রবের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আইনজীবী, চিকিৎসক, ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, পুলিশ, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের প্রতিনিধি, নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মী, গবেষক প্রমুখ অংশ নেন।

No comments

Powered by Blogger.