বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ঐতিহাসিক রায় বাংলায় রূপান্তর : by এনামুল হক

রাষ্ট্রপরে ২৬ নং সাী বলেন, প্রাসঙ্গিক সময়ে তিনি আর্টিলারি ইউনিটের জওয়ান ছিলেন এবং মহিউদ্দিন (আর্টিলারি) ছিলেন উক্ত ইউনিটের পাপা ব্যাটারির কমান্ডার। মেজর রশিদ তাকে গোলাবারুদের গুদামের চাবিটা তার কাছে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
রাত প্রায় ১১/১১-৩০টার দিকে মেজর রশিদ ও ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর আর্টিলারি ও ল্যান্সার ইউনিটের ১০/১২ জন জওয়ানসহ গোলাবারুদের গুদামের সামনে আসেন এবং মেজর রশিদের নির্দেশনুযায়ী তিনি গোলাবারুদ গুদামের তালা খুলে দেন। এরপর মেজর রশিদের নির্দেশে জওয়ানরা কামান, রাইফেল, স্টেনগান, এসএমজি, পিস্তল ইত্যাদি নিয়ে নেয়। আসামিপ এই সাীর সা্য চ্যালেঞ্জ করেনি এবং সেই কারণে তার সা্য অবিতর্কিত রয়ে গেছে।
রাষ্ট্রপরে ২৭ নং সাী বলেন, তিনি আলোচ্য সময়ে ফিল্ড আর্টিলারির জওয়ান ছিলেন। নৈশ কুচকাওয়াজে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। এরপর প্যারেড ময়দান থেকে তারা নিউ এয়ারপোর্ট রোড অভিমুখে অগ্রসর হন। রাত ৩/৩-৩০ টার দিকে মহিউদ্দিন (আর্টিলারি) সেখানে আসেন এবং তাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করান এবং কয়েকজন জওয়ানকে মহিউদ্দিনের (আর্টিলারি) সঙ্গে গাড়িতে গিয়ে ওঠাব নির্দেশ দেন। তারপর মেজর মহিউদ্দিন তাদের বলেন, রীবাহিনী সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালাবে এবং তাদের এমন পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি (সাী) দেখতে পান যে, একটা কামান গাড়ির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। আরও চারটি কামানও অন্য গাড়ির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এরপর তারা এগিয়ে চলেন এবং মহাখালী_ ফার্মগেট-গ্রীনরোড-এলিফ্যান্ট রোড ও মিরপুর রোড দিয়ে লেকের কাছে কলাবাগান এলাকায় আসেন। এরপর তাদের গাড়ি থেকে নামতে বলা হয়। মেজর মহিউদ্দিন (আর্টিলারি) তাদের বলেন, এই সড়ক দিয়ে কাউকে চলাচল করতে দেয়া হবে না। আসামিপ সাীর এই সা্যকে চ্যালেঞ্জ করেনি।
রাষ্ট্রপরে ৩২ নং সাী বলেন, তিনি ছিলেন আর্টিলারি ইউনিটের জওয়ান। সেই ইউনিটে মেজর মহিউদ্দীন (আর্টিলারি) ছিলেন তাদের কমান্ডার। তিনি নৈশ কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিলেন এবং সেই কুচকাওয়াজে তিনি মেজর রশিদ, মহিউদ্দিন (আর্টিলারি), মেজর জুবায়ের সিদ্দিক, ক্যাপ্টেন মোস্তফা ও লে. হাসানকে চিনতে পারেন। কুচকাওয়াজ রাত ৩টা/সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলেছিল। এরপর হাবিলদার মোস্তফা তাদেরকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করান। সে সময় ঐ অফিসাররা ও মেজর ডালিম সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মেজর রশিদের নির্দেশে হাবিলদার মোস্তফা তাদেরকে অস্ত্র ও গুলিগোলা দেয়। এরপর তারা সামনে অগ্রসর হয়। পরবতর্ী পর্যায়ে তেজগাঁও বিমানবন্দরের পাশের রাস্তায় তাদের নেমে যাওয়ার এবং এই রাস্তা দিয়ে কাউকে চলাচল করতে না দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। আসামিপ এই সাীর সা্য চ্যালেঞ্জ করেনি এবং সেই সা্যটি অবিতর্কিত রয়েছে।
রাষ্ট্রপরে ৩৪নং সাী বলেন, তিনি আর্টিলারি ইউনিটের জওয়ান ছিলেন। সেই ইউনিটে মেজর মহিউদ্দিন (আর্টিলারি) ছিলেন ব্যাটারি কমান্ডার। তিনি (সাী) কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিলেন এবং কুচকাওয়াজ শেষে ৬টি ট্যাঙ্কসহ নতুন বিমানবন্দরে যান। রাত প্রায় আড়াইটায় তাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করানো হয় এবং তারপর একটি বাহনে ওঠার নির্দেশ দেয়া হয়। অতএব, তারা ফার্মগেট হয়ে মিরপুর রোড ধরে লেকের পূর্বদিকে অগ্রসর হয়। সেখানে পেঁৗছে তারা অবস্থান গ্রহণ করে। কামানগুলো সেখানে স্থাপন করা হয়। সে সময় মহিউদ্দিন (আর্টিলারি) কামানের পিছনে এসে দাঁড়ান এবং ঐ সড়ক দিয়ে কাউকে চলাচল করতে না দেয়ার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেন। আসামিপ এই বক্তব্যটিও চ্যালেঞ্জ করেনি।
রাষ্ট্রপরে ৩৯ নং সাী বলেন, আলোচ্য সমনটিতে তিনি ল্যান্সার ইউনিটের ড্রাইভার ছিলেন। তাঁর ইউনিটে ফারুক রহমান ছিলেন ভারপ্রাপ্ত কমান্ডিং অফিসার। তিনিও (সাী) নৈশ কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিলেন এবং মহিউদ্দীন (ল্যান্সার), মেজর শরিফুল ইসলাম ও অন্যান্য অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কুচকাওয়াজে উপস্থিত দেখতে পান। ফারুক রহমান তাদের বলেন যে, একটা জরুরী উদ্দেশ্যে ট্যাঙ্ক বাইরে নেয়া হবে এবং তার জন্য তিনি তাদের প্রস্তুত হবার নির্দেশ দেন। এরপর তিনি অফিসার ও জওয়ানদের নিজ নিজ কাজে যেতে বলেন। এ সময়ে মেজর ডালিম ও আরেক অফিসার তাদের ইউনিটে আসেন। মেজর ডালিম ইউনিফর্ম চাইলে তাকে ইউনিফর্ম দেয়া হয়। অতঃপর ট্যাঙ্ক ইউনিটটি বিমানবন্দর হয়ে বঙ্গভবন অভিমুখে রওনা হয়। (ক্রমশ)

No comments

Powered by Blogger.