বিশাল জ্ঞানভাণ্ডার- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার

দেশের অন্যতম বৃহত্তম জ্ঞানভাণ্ডার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার অত্যনত্ম আকর্ষণীয়।
রাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর প্রশাসনিক ভবনের উত্তর-পশ্চিম এলাকায় মনোরম স্থাপত্যের এই সুদৃশ্য লাল রঙের তিনতলা ভবনটি যে কাউকে আকর্ষণ করে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই হাজারেরও বেশি জ্ঞানপিপাসু শিার্থী গ্রন্থাগারের পাঠক ব্যবহার করে থাকে। গ্রন্থাগারে বর্তমানে প্রায় ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬টি বিভিন্ন বই পুসত্মক, সাময়িকী ও জার্নাল সংগৃহীত রয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৯৯ হাজার ২ শ' ৪টি বই এবং ৪০ হাজার ৪ শ' ২টি সাময়িকী রয়েছে। দেশে যতগুলো জার্নাল প্রকাশিত হয় তার মধ্যে অধিকাংশই রাবি গ্রন্থাগারই থেকে। গ্রন্থাগার কর্তৃপ প্রতিবছর প্রায় নয় শ' প্রকারেরও বেশি দেশী-বিদেশী সাময়িকী সংগ্রহ করে থাকে। প্রশাসন ২০০৮ সালের শেষের দিকে নতুন করে গ্রন্থাগারটিতে এসি সংযোগ করায় এতে যেন এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

গ্রন্থাগারের ইতিকথা
স্যাডলার কমিশনের পরিকল্পনায় এবং রাবির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিাবিদ মরহুম মাদার বখ্শ-এর ঐকানত্মিক প্রচেষ্টায় ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫৫ সালে রাজশাহী শহরের প্রাচীন 'বড়কুঠি'তে ুদ্র আকারে গড়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার। বছরখানেক পর ভোলানাথ বিশ্বেশ্বর হিন্দু একাডেমী স্কুল ভবনে স্থানানত্মরিত হয় গ্রন্থাগারটি। ১৯৫৮-'৫৯ সালের দিকে মতিহার কুঠিতে (বর্তমানে বিএনসিসি ভবন) গ্রন্থাগারের শাখা খোলা হয়। ১৯৬৩ সালে বর্তমান কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের মূল তিনতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরম্ন হলে ১৯৬৪ সালে নতুন ভবনে বিভিন্ন শাখা গ্রন্থাগার থেকে সব বই পুসত্মক জার্নাল স্থানানত্মর করে ১৯৬৬ সালে গ্রন্থাগারটি চালু করা হয়। গ্রন্থাগারে সর্বপ্রথম গ্রন্থাগারিকের দায়িত্ব পালন করেন ফজলে এলাহী। বর্তমানে ২০তম প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ দেলাওয়ার হোসেন।

ডিজিটালাইজড গ্রন্থাগার
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমানে গ্রন্থাগারটিকে অনেকটাই ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। গ্রন্থাগার বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য, রেফারেন্স, জার্নাল, গবেষণা পত্রসহ গ্রন্থাগারের সবকিছু প্রায় এখন ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। গ্রন্থাগারে ৮৭০ জন ইন্টারনেট ল্যাব কার্ডধারী শিার্থীদের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ৭৮জন শিার্থী ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ভবিষ্যতে পুরো গ্রন্থাগারটিকে ডিজিটালাইজড করার প্রক্রিয়া চলছে বলে গ্রন্থাগার সূত্রে জানা গেছে। বর্তমান প্রশাসক প্রফেসর ড. মোঃ দেলওয়ার হোসেন জানান, এখানে বর্তমানে ১১৫ জন কর্মকতর্া ও কর্মচারী থাকা সত্ত্বেও ২৬টি পদ ফাঁকা রয়েছে। আগের তুলনায় গ্রন্থাগার ব্যবহারকারী ছাত্র-ছাত্রী ও শিকের সংখ্যা বাড়লেও সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬ হাজার শিার্থীর তুলনায় সনত্মোষজনক নয়। আমরা চাই শিার্থীরা তাদের ব্যক্তিগত জ্ঞানভা-ারের পরিধি বাড়াতে বিশাল এই তথ্যভা-ার থেকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী জ্ঞান আহরণ করম্নক। তবে গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনার ওপর ডিগ্রীধারী কর্মকতর্াদের জন্য যে ১২টি পদ রয়েছে সেখানে মাত্র দুই জন ডিগ্রীধারী যোগ্যতা সম্পন্ন লোক রয়েছে বলে তিনি জানান। এরপরও সার্বিক দিক বিবেচনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার দেশের অন্যতম জ্ঞান ভা-ার হিসেবে মাথা উঁচু করে রয়েছে।
জাহিদুল আলম জয়

No comments

Powered by Blogger.