'এমন অপরাধী কী করে নাবালক হয়'

জানালাহীন অপ্রশস্ত একটি ঘরে কাঁথা-কম্বলের মধ্যে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছেন মা। বাইরে বাবা-ভাইয়েরা পালন করছেন তাঁর মৃত্যুসংশ্লিষ্ট ধর্মীয় রীতি। গতকাল রবিবার ছিল দিল্লির বাসে গণধর্ষণের শিকার হয়ে নিহত ছাত্রীর মৃত্যুর ১৩তম দিন। এ দিন প্রথমবারের মতো মুখ খুলেন ওই ছাত্রীর মা।
তিনি তাঁর মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন ও হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করে বলেছেন, হত্যাকারীদের ফাঁসিতে না ঝোলানো পর্যন্ত তার আত্মা শান্তি পাবে না। যে ছেলেটি সবচেয়ে বেশি নির্যাতন চালিয়েছে তার বয়স নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, যে ছেলে এমন ভয়ংকর অপরাধ করেছে তাকে কী করে সবাই আঠারোর কম বয়সী বলে?
হাসপাতালে থাকতে ওই তরুণী তাঁর দুঃসহ অভিজ্ঞতার খুঁটিনাটি বলে গেছেন মায়ের কাছে। মা-ই ছিলেন তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী।
অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নয়, তাঁদের ফাঁসি চান মা। তাঁর মতে, যাবজ্জীবন মানে তো কারাগারে থাকা, খাওয়া-দাওয়া, টেলিভিশন দেখা, হাসাহাসি-ফুর্তি করা। তিনি বলেন, 'ওরা বেঁচে থাকলে সে ঘটনা আমাকে কুরে কুরে খাবে। ওদের ফাঁসি না হলে আমার পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন হবে।'
গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে একজন নিজেকে নাবালক দাবি করেছে। এ দাবি সত্য প্রমাণিত হলে মামলায় তার লঘু শাস্তি হবে। তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে। অথচ অভিযোগ রয়েছে, তরুণীর ওপর নির্যাতন চালানোর সময় এ ছেলেটিই ছিল সবচেয়ে আগ্রাসী। তরুণীর মা বলেন, 'প্রত্যেকেই ছেলেটিকে কিশোর বলছে। সে আমার মেয়েকে নির্দয়ভাবে রড দিয়ে পিটিয়েছে, জখম করেছে। সবার সঙ্গে আইনও এখন বলছে তার বয়স নাকি কম!'
তিনি আরো জানান, সরকারের তরফ থেকে দেওয়া আর্থিক সহযোগিতায় তাঁরা সন্তুষ্ট নন।
পাঞ্জাবে বাসে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ছয়
দিল্লির ঘটনার রেশ না কাটতেই উত্তরাঞ্চলীয় পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসরে গত শুক্রবার একটি যাত্রীবাহী বাসে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ গতকাল জানিয়েছে, এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।
পুলিশ জানায়, ওই নারী তাঁর বোনের বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি তাঁকে না নামিয়ে বাসের চালক-হেলপাররা তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যায়। ধর্ষণ শেষে শনিবার তাঁকে তাঁর বোনের বাড়ির কাছে ফেলে যাওয়া হয়। পুলিশ জানায়, তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো একজনকে খুঁজছে। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.