স্মরণকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা- সরকার ও বিরোধী দলের ব্যর্থতাই মূল কারণ

বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ছে, যানজট বাড়ছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অপরাধ, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। কমার কোনো লক্ষণই নেই। অথচ কয়েক দিন ধরে কোনো কারণ ছাড়াই দেশের তাপমাত্রা কমছে।
এই তো সেদিন, দিনাজপুরের তাপমাত্রা ছিল ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস! ১৯৬৮ সালের পর তাপমাত্রা এত নিচে কখনোই নামেনি। কোনো মানে হয়? তাপমাত্রা না কমে দ্রব্যমূল্য কমলেও একটা আনন্দের ব্যাপার ছিল! আসলে আমাদের মূল্যবোধ ক্রমশ নিচের দিকে নামছে, অর্থনীতিও নিম্নমুখী, তাপমাত্রা কমতেই পারে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভাবতে ভালোই লাগে। ভেবে দেখুন, এখন ইংল্যান্ড, আমেরিকার মতো বাংলাদেশেও প্রচণ্ড শীত পড়ে। তাপমাত্রা যেভাবে কমছে, কে জানে, কদিন পর হয়তো বরফও পড়া শুরু করবে। কবিতাগুলো হয়তো লিখতে হবে নতুন করে—‘শীতের দিনে মনে পড়ে ছেলেবেলার গান, বরফ পড়ে টাপুর টুপুর নদে এলো বান’। এমনিতে প্রতিবছর সাইবেরিয়া থেকে আমাদের দেশে অসংখ্য পাখি আসে। কিন্তু অনেকে ভাবছেন এবার সাইবেরিয়া থেকে কোন পাখি আসেনি, উল্টো আমাদের দেশের পাখিগুলোই শীত থেকে বাঁচতে সাইবেরিয়া চলে গেছে! দীর্ঘদিন পর কোনোরকম ঘোষণা ছাড়াই তাপমাত্রা যে এত কমে গেল, এটা কিন্তু সরকারের ব্যর্থতা। তা না হলে এত দিন তাপমাত্রা কমল না, হঠাৎ করে তাপমাত্রা এত কমে যাবে কেন? সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হবে এটাই স্বাভাবিক। তা ছাড়া তাপমাত্রা যে প্রতিনিয়ত কমতে শুরু করেছে, তাতে সরকার কোনো পদক্ষেপও নিচ্ছে না। সেই হিমালয় থেকে সীমান্ত পার হয়ে শৈত্যপ্রবাহ আসছে, আমাদের সীমান্তরক্ষীরা করছে কী? তারা শৈত্যপ্রবাহ প্রতিহত করতে পারছে না? অবশ্য তারা বিএসএফকেই ঠেকাতে পারছে না, আর শৈত্যপ্রবাহ! শুধু সরকারকে দোষ দিয়েই বা কী লাভ, তাপমাত্রা কমার জন্য বিরোধী দলও কি কম দায়ী? সরকারবিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম করে দেশের পরিস্থিতি গরম করে রাখার দায়িত্ব তো তাদেরই। তারা সেটা পালন করছে কই? সরকার-বিরোধী দল কেউ কিছু করছে না, শীত তো পড়বেই। তবে শীতেরও অনেক ভালো দিক আছে। তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এতে বাড়ছে পারিবারিক সম্প্রীতি ও বন্ধন। বাড়ছে টেলিভিশনের দর্শকসংখ্যাও। তবে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এত তীব্র শীত না পড়লেও খুব একটা ক্ষতি হবে না। তাই অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রচণ্ড শীতে হাত জমে যাচ্ছে বিধায় আর কিছু লিখলাম না। বিদায়।

No comments

Powered by Blogger.