যারা গণহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা দেশদ্রোহী রাজশাহীতে সেমিনারে by মুনতাসীর মামুন

প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেছেন, ‘যারা গণহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা দেশদ্রোহী। যুদ্ধাপরাধ আদালতকে আইন পাস করে স্থায়ী আদালতে রূপ দিতে হবে।
’ তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।’ এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করার আহ্বান জানান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলার জাগরণ ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়’ শীর্ষক দুদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে রবিবার সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (আইবিএস) আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মোট চারটি সেশনে গুরুত্বপূর্ণ ১০টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এসব প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ড. গোলাম মুরশিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় অনুষ্ঠিত এই আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রথম দিনে ‘বাংলার জাগরণ : একুশ শতকের চোখে’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. গোলাম মুরশিদ। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাপিডিয়ার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ও রাবি অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা।
রবিবার দ্বিতীয় দিনে সকাল সাড়ে ৯টায় ‘বাংলার জাগরণ : চেতনার সম্প্রসারণ’ শীর্ষক দ্বিতীয় সেশনে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। এতে মোট তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ‘বাংলার জাগরণ ও লোকদর্শন’, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ঊনিশ শতকে নারী জাগরণ’ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন ‘নারী জাগরণের সূচনা লগ্ন : পতিতা রমা বাই ও রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
শেষ সেশনে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ : গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের স্বরূপ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের সভাপতিত্বে এতে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী শাহরিয়ার কবির, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক আলোচনা করেন।
শেষ সেশনে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বলেন, ‘গণহত্যাবিষয়ক তথ্যের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। তৃণমূল পর্যায় থেকে বেশি বেশি তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ বিষয়ে শিক্ষকদের গবেষণা হওয়ার কথা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে কম গবেষণা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যাঁরা বিরোধিতা করছেন তাঁদেরও বিচার হওয়া দরকার।’ এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করার আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.