৯১ লাখ কৃষকের হাতে ৩১ মার্চের মধ্যে পৌঁছাচ্ছে ডিজেলের টাকা- কৃষক তার কার্ড নিয়ে ব্যাংকে গেলেই পাবে এ টাকা by মিজান চৌধুরী

 সাড়ে সাত শ' কোটি টাকার ডিজেল ভতর্ুকি এক মাসের মধ্যে ৯১ লাখ কৃষকের হাতে পেঁৗছানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সকল জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
একই সঙ্গে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড ও ব্যাংক হিসাব খুলে ডিজেল ভতর্ুকি পাওয়া নিশ্চিত করতে দেশের সকল সংসদ সদস্যকে বিশেষ চিঠি দেয়া হয়েছে। আসন্ন বোরোর ফলন নিশ্চিত করতে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তার জন্য বুধবার কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী ৩৪৫ সংসদ সদস্যকে বিশেষ চিঠি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষি সচিব।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার এই প্রথম কৃষকদের ডিজেল ভতর্ুকি দিচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সম্পৃক্ত করার ঘটনাও প্রথম। মূলত বোরো ফলন নিশ্চিত করতে এবার স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বোরো ফলনের ওপর আউস ও আমনে ঘাটতি পূরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত নির্ভর করছে।
এ বছর ৯১ লাখ প্রানত্মিক, ুদ্র ও মাঝারি কৃষক ডিজেল ভতর্ুকি পাচ্ছে। এর মধ্যে ৮৩ লাখ হচ্ছে প্রানত্মিক ও ুদ্র কৃষক এবং মাঝারি কৃষক হচ্ছে আট লাখ। ডিজেল ভতর্ুকি ৮শ' টাকা করে দেয়া হচ্ছে ৮৩ লাখ কৃষককে এবং আট লাখ মাঝারি কৃষক পাচ্ছে এক হাজার টাকা করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৬ ফেব্রম্নয়ারি কৃষকদের কার্ড ও ডিজেল ভতর্ুকি বিতরণ কার্যক্রম নেত্রকোনাতে উদ্বোধন করেছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, ভুর্তকির টাকা যাতে কৃষকরা সময়মতো পায় এবং সেচ কাজে ব্যবহার করতে পারে তা নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধানত্ম নেয়া হয় । জমির পরিমাণ আধা একরের নিচের কৃষক হচ্ছে প্রানত্মিক, আড়াই একর পর্যনত্ম জমির কৃষক হচ্ছে ুদ্র এবং আড়াই থেকে সাড়ে সাত একর পর্যনত্ম জমির কৃষককে ধরা হয়েছে মাঝারি ধরনের।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর এক কোটি ৮৪ লাখ কৃষককে সরকার কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড দিচ্ছে। ইতোমধ্যে ৮৫ ভাগ কৃষকের হাতে কার্ড পেঁৗছে গেছে। ওই কার্ডধারীর মধ্যে ৯১ লাখ কৃষক পাচ্ছে ডিজেল ভতর্ুকি। এই প্রথম কৃষকরা ডিজেল ভতর্ুকি উত্তোলন করবেন কার্ডের মাধ্যমে। ওই কার্ড দেখিয়ে ১০ টাকা ফির মাধ্যমে স্থানীয় ব্যাংক শাখায় একটি হিসাব খুলতে হবে। সরকারের দেয়া ডিজেল ভতর্ুকি কৃষকের ওই হিসাবে ৩১ মার্চের মধ্যে পেঁৗছে যাবে। কৃষক যেকোন সময় ব্যাংক থেকে ভতর্ুকির টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বিশেষ পত্রে বলেছেন, সরকার বোরোর উৎপাদন নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এেেত্র সময়মতো ডিজেল ভতর্ুকি কৃষকের হাতে পেঁৗছে দিতে হবে। ওই টাকা তারা এ মৌসুমে বোরোর সেচ কাজে ব্যবহার করতে পারবে। বিশেষ করে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ভতর্ুকির টাকা কৃষকের হিসাবে জমা করার নির্দেশ দেয়া হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্যদের বোরো উৎপাদন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা কৃষকদের করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
সূত্রে মতে, এ বছর বোরো উৎপাদনের ওপর অর্থনীতির অনেক কিছু নির্ভর করছে। ফলে বোরো উৎপাদন নিশ্চিত করতে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সরকারের প থেকে। এ বছর ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো উৎপাদনের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় এক কোটি ৮৭ লাখ মেট্রিক টন।
এদিকে সরকারের গবেষণা ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান(বিআইডিএস) বোরো ধানের উৎপাদন পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি মাঠ পর্যায়ে একটি সার্ভে করেছে। ওই সার্ভেতে উত্তরাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল, নিম্নাঞ্চল এলাকার বোরো চাষীদের সঙ্গে কথা বলা হয়। বিআইডিএসের প থেকে বলা হয় বীজ, সার ও ডিজেল প্রাপ্যতার েেত্র গত মৌসুমের তুলনায় এ বছর কৃষকদের দুর্ভোগ কমেছে। তবে সেচ কার্যক্রম, পর্যাপ্ত কৃষিঋণ পাওয়া, বস্নক সুপারভাইজার ও কৃষি অফিসারদের সাপোর্ট পাওয়ার েেত্র দুর্ভোগ কমেনি। তবে বোরোর বাম্পার ফলনের েেত্র কৃষিঋণ পাওয়ার েেত্র অসুবিধা, সার ও ডিজেলের উচ্চ মূল্য, কৃষি শ্রমিকের সঙ্কট, পূর্বাঞ্চল এলাকার নিম্নাঞ্চল ও দণিাঞ্চলের উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যা, সেচের জন্য অপর্যাপ্ত পানি, সেচের জন্য সময়মতো বিদু্যতের সরবরাহ ও ভেজাল মুক্ত কৃষি উপকরণকে সমস্যা হিসেবে দেখছে কৃষকরা।
উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা বলছেন সময়মতো সেচ দেয়া ও কৃষি উপকরণের সরবরাহ ঠিক থাকলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত না করলে বোরোর ফলন ভাল হবে। পূর্বাঞ্চলের বোরো চাষীরা বলেছেন, কৃষি উপকরণ সহজ হলে এবং সময়মতো জমিতে সেচ দিতে পারলে স্বাভাবিক বোরো উৎপাদন হবে।

No comments

Powered by Blogger.