সরকারের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া- খোশগল্পের সময় নেই, তাদের সঙ্গে কথা বলার মানসিকতাও নেই

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘তলে তলে কিসের আলোচনা! আলোচনা হতে হবে প্রকাশ্যে; তা-ও হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে। আমাদের খোশগল্প করার সময় নেই, তাদের সঙ্গে কথা বলার মানসিকতাও নেই।’
গতকাল সোমবার রাতে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কিছু নেতা-কর্মীর বিএনপিতে যোগদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠান হয়। খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিএনপির সময়ও বিএনপি আলোচনা করেছিল। সে আলোচনা ছিল প্রকাশ্যে। ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল, কোন লেভেলে (পর্যায়ে) আলোচনা হবে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তাদের পুরো মেয়াদ পূরণ করুক, এতে বিএনপির কিছু আসে-যায় না। কিন্তু বর্তমান সংবিধানে যে নির্বাচনের কথা বলা আছে, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।’ আওয়ামী লীগ গত চার বছরে কোনো ভালো কাজ করেনি, এ জন্য তারা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
বিএনপির নেত্রী বলেন, এ সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে। তাদেরই সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। এ ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।
ঢাকার ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম মজুমদারের হত্যার কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশের কী অবস্থা! এটা কী রাজনীতি! সরকার প্রতিনিয়ত মানুষ হত্যা ও খুন-গুম করছে।’ ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলম গুম হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার দেখে দেখে বিএনপির ভালো সংগঠক ও নেতাদের হত্যা করছে।
মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তারের সমালোচনা করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘এ সরকার একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা কখনো এ রকম করিনি। তাদের মহাসচিব জলিল সাহেব (আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক) ট্রাম্পকার্ডের কথা বলেছিলেন, নাসিম সাহেব লাঠিমিছিল করেছিলেন। আমরা তো তাঁদের জেলে দিতে পারতাম। লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ মারা ও গানপাউডার দিয়ে বাসে আগুন লাগিয়ে মানুষ মারা—এসবের জন্য শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি করা যেত।’
একপর্যায়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে দেশের জন্য একসঙ্গে কাজ করার কথাও বলেন খালেদা জিয়া।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, সাংসদ আবুল খায়ের ভূঁইয়া প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.