জামায়াতের বেনামী পোস্টার- টাকা যুদ্ধাপরাীদের by গাফফার খান চৌধুরী

 যুদ্ধাপরাধীদের টাকায় ছাপানো হচ্ছে সরকারবিরোধী সেস্নাগান সংবলিত বেনামী পোস্টার। পরে এসব পোস্টার রাতের অাঁধারে রাজধানীর গুরম্নত্বপূর্ণ জায়গায় লাগানো হয়। বেনামী পোস্টারে লেখা থাকে নানা আপত্তিকর বক্তব্য।
তুলে ধরা হয় ভুল ও বিভ্রানত্মিকর তথ্য। যাতে মানুষ সহজেই দ্বিধান্বিত হয়। সম্প্রতি ২০ হাজার আপত্তিকর বেনামী পোস্টারসহ গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে ছাড়া পেয়েছে জামায়াতে ইসলামীর তিন কর্মী। রিমান্ডে গ্রেফতারকৃতরা এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। বর্তমান সরকারের সময় সবচেয়ে বেশি আপত্তিকর পোস্টার ছাপানো হয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতার কারণে এসব পোস্টার রাজধানীতে ছড়াতে পারেনি যুদ্ধাপরাধীরা। পোস্টার ছাপানোর ৰেত্রে কোন প্রকার আইনকে তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। বেনামী পোস্টার ছাপানোর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। মুদ্রণ আইন মান্য করার ৰেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চলতি বছর ২৯ এপ্রিল রাজধানীর ১০/১ নম্বর নয়াপল্টন চৌকস প্রেস থেকে বড় বড় সাইজের ২০ হাজার আপত্তিকর বেনামী রঙিন পোস্টারসহ সুলতান আহমেদ, মামুনসহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। সুলতান আহমেদের পিতার নাম হাফেজ আনসার উদ্দিন। তাঁর বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ থানায়। স্থানীয়ভাবে সুলতান আহমেদের পিতাও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। গ্রেফতারকৃতদের বিরম্নদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নেয় গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা নিজেদের জামায়াতে ইসলামীর কর্মী বলে দাবি করেছে। উদ্ধারকৃত ২০ হাজার পোস্টার শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের টাকায় ছাপানো হয়েছে। এসব পোস্টার বর্তমান সরকারের ১শ' দিন পূর্তি উপলৰে ছাপানো হয়েছিল। জঙ্গী সংগঠনগুলোর কর্মীদের দিয়ে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় রাতের অাঁধারে ছড়িয়ে দেয়ার কথা ছিল। এটি বর্তমান সরকার সম্পর্কে যুদ্ধাপরাধীদের নেতিবাচক তথ্য প্রচার করার কৌশল।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, প্রেস মালিক দীর্ঘদিন যাবত এ ধরনের পোস্টার ছাপানোর সঙ্গে জড়িত। এ ধরনের পোস্টার ছাপানোর জন্য চাহিদারও বেশি পরিমাণ টাকা দেয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া সমমনা ব্যক্তি বা দলীয় লোক ছাড়া এ ধরনের আপত্তিকর পোস্টার ছাপানোর অর্ডার কাউকে দেয়া হয় না। এমন ব্যক্তিকেই ছাপানোর দায়িত্ব দেয়া হয়, যে কোন দিন বিষয়টি প্রকাশ করবে না। সাধারণত দলীয় ছাপাখানা ব্যতীত এ ধরনের পোস্টার ছাপানো হয় না। অনেক সময় আপত্তিকর কোন কিছু ছাপানোর ৰেত্রে প্রেস মালিক রাজি হন না। সেৰেত্রে আপত্তিকর পোস্টার বা অন্যকোন কিছু ছাপানো হচ্ছে এমন তথ্য প্রেস মালিক ফাঁস করে দিতে পারেন_ এজন্য এমন কাউকে ছাপানোর দায়িত্বই দেয়া হয় না যিনি বিষয়টি প্রকাশ করতে পারেন। এটি যুদ্ধাপরাধীদের বাড়তি সতর্কতা। ছাপানোর আগেই তা ভালভাবে পরীৰা-নিরীৰা করে নেয়া হয়। কে ছাপতে পারে কে পারে না। এজন্য যুদ্ধাপরাধীরা নিজেদের টাকায় পরিচালিত প্রেস থেকে এসব আপত্তিকর বিষয়ে ছাপার কাজ করে থাকে। আপত্তিকর কোন কিছু ছাপানোর ৰেত্রে অত্যনত্ম গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। এমনকি নিজস্ব দলীয় লোক ব্যতীত এ ধরনের স্পর্শকাতর কাজের ভার কাউকে দেয়া হয় না। বাংলাদেশে এ রকম বহু বেনামী আপত্তিকর পোস্টারের জনক যুদ্ধাপরাধীরা। যুদ্ধাপরাধীদের গঠিত একটি বিশেষ ইসলামী দল দীর্ঘ দিন ধরেই এ ধরনের বেওয়ারিশ পোস্টারের জনকের ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এ ধরনের বেনামী পোস্টার ছিল না বললেই চলে। স্বাধীনতার পর থেকেই এ রকম হাজারো বেনামী পোস্টারের জন্ম দিয়েছে যুদ্ধাপরাধীরা। বেনামী পোস্টারের নিচে মনগড়া একটি সংগঠনের নাম জুড়ে দেয়া হয়। আসলে এ ধরনের সংগঠনের কোন অসত্মিত্বই নেই।
উদ্ধারকৃত পোস্টারের ওপরে বড় বড় অৰরে লেখা রয়েছে, আওয়ামী দুঃশাসনের ১০০ দিন। মাঝখানে বক্স করে অনেক বিষয় সম্পর্কে নানা আপত্তিকর বক্তব্য লেখা রয়েছে। অনেক বক্তব্যের মধ্যে একটিতে বড় বড় হরফে লেখা রয়েছে, সব কিছুতে জঙ্গী খুঁজে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করার নীলনকশা কার স্বার্থে? কওমী মাদ্রাসাসহ ইসলামী শিৰা প্রতিষ্ঠান ও ওলামায়ে কেরামদের নিয়ে ঘৃণ্য এই ষড়যন্ত্র কার স্বার্থে? নিচে লেখা দেশপ্রেমিক জনতা। গোয়েন্দারা হন্যে হয়ে খুঁজেও দেশপ্রেমিক জনতা নামে কোন সংগঠনের অসত্মিত্ব পায়নি। এসব পোস্টার ছাপানোর ৰেত্রে কোন আইন মানা হয় না। রাজধানীতে হাজারো বেনামী পোস্টারে ছেয়ে গেছে। অথচ পোস্টার ছাপানোর ৰেত্রে পোস্টারের নিচে ছাপাখানার ঠিকানাসহ যে ব্যক্তি বা সংগঠন পোস্টার ছাপিয়েছে তাদের নাম ঠিকানা থাকার কথা। তার কোন বালাই নেই। মূদ্রণ আইন অমান্যকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দৰিণ জোনের ডিসি মনিরম্নল ইসলাম (পিপিএম-সেবা) জানান।

No comments

Powered by Blogger.