মংলা বন্দর- ফের কর্মচঞ্চল by বাবুল সরদার

বাগেরহাট দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলায় জাহাজ আগমন ও পণ্য ওঠানামার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক বছরের ব্যবধানে এ বন্দরে জাহাজ আগমন ও মালামাল বোঝাই খালাসের পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি এখানে হ্যান্ডলিংয়ের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
দ্রম্নত মালামাল খালাস হওয়ায় আগের চেয়ে জাহাজের অবস্থানের সময় হ্রাস পেয়েছে। নানা সমস্যার মধ্যেও বন্দরটি তার গতি ফিরে পেতে শুরম্ন করায় ইতোমধ্যে এটি কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে। আমদানি করা বিভিন্ন নতুন নতুন পণ্য এ বন্দরটি দিয়ে খালাসের কারণে প্রাণ চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারীসহ বিভিন্ন মহলে। জানা যায়, ৫০-এর দশকে সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে ৯০ দশকের শেষ দিক পর্যনত্ম প্রাকৃতিক এ বন্দরটি মোটামুটি ভালভাবেই চলে আসছিল। এরপর থেকে বন্দরটি ক্রমেই তার গতি হারিয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় এসে দাঁড়াতে থাকে। জাহাজ আগমন ও পণ্য ওঠানামা হ্রাস পেয়ে বন্দরটি কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় মহাজোট সরকার মতায় আসার পর মংলা বন্দরকে আধুনিক বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, মংলা বন্দরের ৬০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গত জুন মাসে গাড়িবাহী একটি জাহাজ খালাসের জন্য আসে। এ দিকে প্রায় সোয়া ৩ বছর বন্ধ থাকার পর গত বছর থেকে মংলা বন্দরে আবারও নতুন করে খাদ্যবাহী জাহাজ আগমন শুরম্ন করে। অন্যদিকে মংলা বন্দরের মাধ্যমে বিদেশে পাট রফতানি, বিদেশ থেকে আমদানি করা সার এ বন্দরে খালাসসহ বিভিন্ন নতুন নতুন পণ্য আমদানি ও রফতানির মাধ্যমে গত বছর মংলা বন্দর আবারও চাঙ্গা হতে শুরম্ন করে। এ ছাড়া বন্দরের জেটির সম্মুখভাগের ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন হওয়ায় কন্টেনারসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজ অনায়াসে জেটিতে প্রবেশ করে মালামাল বোঝাই খালাস করা সম্ভব হচ্ছে।
বন্দরের সূত্র জানায়, গত ১ বছরের ব্যবধানে মংলা বন্দরে জাহাজ আগমন ও পণ্য ওঠানামার পরিমাণ বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৮ সালে এ বন্দরে জাহাজ এসেছে ১২৬টি আর ২০০৯ সালে জাহাজ এসেছে ১৫৫টি। এ ছাড়া ২০০৮ সালে এ বন্দর দিয়ে মালামাল বোঝাই খালাস হয়েছে ৮ লাখ ২৬ হাজার টন ও ২০০৯ সালে এ পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১৪ লাখ ২২ হাজার টন। অপর দিকে এ সময়ের মধ্যে বন্দরে জাহাজ অবস্থানের সময়ও অনেক কমেছে। ২০০৮ সালে যেখানে এ বন্দরে একটি জাহাজের গড় অবস্থান ছিল ৫ দশমিক ৩৯ দিন সেখানে ২০০৯ সালে তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮৯ দিনে।
বন্দরের অপর একটি সূত্র জানায়, মংলা বন্দরে এখনও নানা সমস্যা বিরাজ করছে। নাব্য, আধুনিক যন্ত্রপাতি সঙ্কটসহ বিরাজমান নানা সমস্যার মধ্যেও বন্দরটি দীর্ঘদিন ধরে ঝিমিয়ে থাকার পর নতুন করে আবারও চাঙ্গা হতে শুরম্ন করেছে।
মংলা বন্দর কর্তৃপরে ট্রাফিক পরিচালক মাহবুল-্যাহ জানান, আমদানি ও রফতানি করা নানা ধরনের পণ্য এখন মংলা বন্দর দিয়ে বোঝাই ও খালাস হওয়ার ফলে বন্দরটি ক্রমেই কর্মচঞ্চল হয়ে উঠছে। আর এতে করে ঝিমিয়ে পড়া এ বন্দরটি চাঙ্গা হওয়ার পাশাপাশি বন্দর ব্যবহারকারীসহ এখানকার শ্রমিক কর্মচারীদের মাঝে বিরাজ করছে প্রাণচাঞ্চল্য। তিনি আরও বলেন, বিরাজমান সমস্যার সমাধানে গৃহীত পদপেগুলো দ্রম্নত বাসত্মবায়ন করা গেলে মংলা বন্দর গতিশীলতা ফিরে পাবার পাশাপাশি রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপও অনেকটা কমে আসবে।

No comments

Powered by Blogger.