বিশ্ব এজতেমা ২২ জানুয়ারি ব্যাপক প্রস্তুতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গী, ১৫ জানুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আগামী শুক্রবার ২২ জানুয়ারি থেকে শুরম্ন হচ্ছে তাবলীগ জামাতের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব এজতেমা। এবারের বিশ্ব এজতেমা সুষ্ঠু অনুষ্ঠানের লৰ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এজতেমা ময়দানের আশি ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গত দু'মাস ধরে বিশ্ব এজতেমা মাঠের প্রস্তুতি কাজ চলছিল।
এ বিশ্ব এজতেমায় দেশ বিদেশের প্রায় লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলিস্ন অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সরকারী বেসরকারী এবং স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান প্রস্তুতি কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। তুরাগ নদীর তীরের ১৬০ একর এলাকাজুড়ে বিশাল চট ও কাপড়ের প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। এবার এজতেমায় পুরো টঙ্গী, উত্তরাসহ আশপাশের এলাকাকে নিরাপত্তা বলয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। ১৫ হাজার পুলিশের পাশাপাশি থাকছে ৬০টি কোজ সার্কিট ক্যামেরা এবং আকাশে টহল দেবে র্যাবের নিরাপত্তা হেলিকপ্টার। বিশ্ব এজতেমায় আগত বিদেশী মেহমানদের সুবিধার্থে মাঠের পশ্চিম-উত্তর কোণে টিন দিয়ে বেষ্টিত একটি বিরাট ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এই ক্যাম্পে প্রায় পাঁচ হাজার মেহমান অবস্থান করতে পারবেন। বিদেশী মেহমানদের ক্যাম্পে উন্নত খাবার, গরম-ঠা-া পানির ব্যবস্থা, জ্বালানি গ্যাস, টেলিফোন ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বছর স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে অন্য বছরের তুলনায় অধিক লোকসমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এজতেমা মাঠে স্বেচ্ছাশ্রমে গত দু'মাস ধরে কাজ করছে শত শত মুসলিস্ন, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা শিৰার্থী, ব্যবসায়ী, শ্রম ও কর্মজীবী ধর্মপ্রাণ মানুষ। মাঠের প্রস্তুতিমূলক কাজে মুসলিস্নদের পাশাপাশি সেনা সদস্যরাও কাজ করছেন। বিশেষ করে মাঠের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও তুরাগ নদীর ওপর ৮টি ভাসমান সেতু নির্মাণের কাজ করছে সেনাবাহিনীর দু'টি প্রকৌশল টিম। আগামী দু'-এক দিনের মধ্যে তুরাগ নদীর ওপর ভাসমান সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হবে। চটের অপ্রতুলতার কারণে প্যান্ডেল তৈরিতে এ বছর অধিকাংশ এলাকায় নাইলনের মোটা কাপড় ব্যবহৃত হয়েছে। এজতেমায় মুসলিস্নদের সুবিধার্থে মাঠের উত্তর ও পূর্ব প্রানত্মে বেশ কিছু পাকা দ্বিতল ভবনে কয়েক হাজার শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এজতেমার সার্বিক প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার বিষয়ে বিভিন্ন পদৰেপ গ্রহণ করতে সমপ্রতি ঢাকা ও গাজীপুর জেলা প্রশাসন, টঙ্গী পৌরসভা ও সংশিস্নষ্ট বিভিন্ন দফতরের উদ্যোগে মুরবি্বদের উপস্থিতিতে এক জরম্নরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের আইজিপি, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিদেশী মেহমান ও আগত মুসলিস্নদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা, যাতায়াত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিসত্মারিত আলোচনা এবং সিদ্ধানত্ম গৃহীত হয়।
বিদু্যত বিভাগের কর্মকর্তাগণ জানান, সমগ্র মাঠে কয়েক হাজার বৈদু্যতিক বাতি লাগানো হয়েছে। বিদু্যত সুবিধা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে এজতেমা মাঠে প্রয়োজনীয় উচ্চ ৰমতাসম্পন্ন জেনারেটর ও সার্চ লাইটের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া এবারও প্রতিবারের মতো এজতেমার তিন দিন দেশের দূর দূরানত্ম থেকে মুসলিস্নদের যাতায়াত সুবিধার জন্য বিশেষ ট্রেন থাকবে এবং অন্য মেইল ট্রেনগুলো টঙ্গী জংশন স্টেশনে থামবে। থাকবে অতিরিক্ত বাস সার্ভিসও।
টঙ্গী হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. এম. এ খালেক জানান, এজতেমা উপলৰে মুসলিস্নদের চিকিৎসা সুবিধা প্রদানে টঙ্গী সরকারী হাসপাতালে আরও ৩০টি শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। পৃথক বার্ন ইউনিট, এ্যাজমা ইউনিট স্থাপন করা হবে। এ ছাড়াও হাসপাতাল মাঠে তাঁবু করেও মুসলিস্নদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। এদিকে স্থানীয় এমপি জাহিদ আহসান রাসেল , টঙ্গী পৌর মেয়র আজমত উলস্নাহ খান এবং উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শাহান শাহ আলম বিশ্ব এজতেমা সুুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লৰ্যে প্রস্তুতি কাজে মুরবি্বদের সঙ্গে সমন্বয় করে যাচ্ছেন।

No comments

Powered by Blogger.