ওয়ার্ন-স্যামুয়েলস ‘যুদ্ধ’

দিনটি ছিল ইতিহাস গড়ার। পরশু বিগ ব্যাশে মুখোমুখি হয়েছিল মেলবোর্নের দুই দল স্টারস ও রেনেগেডস। মেলবোর্ন ডার্বি দেখতে এমসিজির গ্যালারিতে ৪৬ হাজার দর্শক, অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেট ইতিহাসের রেকর্ড।
সবচেয়ে বেশি দর্শকের ম্যাচেই ঘটল ক্রিকেট মাঠের সবচেয়ে কুৎসিত ঘটনাগুলোর একটি। মুখোমুখি ‘যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়লেন স্টারস অধিনায়ক শেন ওয়ার্ন ও রেনেগেডসের ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার মারলন স্যামুয়েলস। কথার লড়াই ছাড়িয়ে যা গড়িয়েছে শারীরিক আঘাত পর্যন্ত। এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়ে ও ৪৭০০ মার্কিন ডলার জরিমানা গুনে খেসারত দিতে হচ্ছে ওয়ার্নকে। স্যামুয়েলসের শুনানি এখনো হয়নি, তবে শাস্তি পাবেন তিনিও।
ঘটনার সূত্রপাত স্টারসের ইনিংসের সময়। দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় আচমকা ডেভিড হাসির শার্ট খামচে ধরেন বোলার স্যামুয়েলস, যদিও স্যামুয়েলসের দিকে যাচ্ছিলেন না হাসি। হাসি আর দ্বিতীয় রান নিতে পারেননি। পরে রেনেগেডসের ব্যাটিংয়ের সময় স্যামুয়েলস একবার দ্বিতীয় রান নিতে উদ্যত হতেই ওয়ার্ন এগিয়ে গিয়ে গালি দিয়ে বলেন, ‘আরও কাউকে খামচে ধরতে চাও?’ এরপর স্যামুয়েলসের শার্ট খামচে ধরে ওয়ার্ন দেখান, এভাবেই স্যামুয়েলস খামচে ধরেছিল হাসির শার্ট। আঙুল বাগিয়ে কিছু একটা ইঙ্গিতও করেন।
শেষ নয় এখানেই। খানিক পর স্যামুয়েলসের একটি ড্রাইভে ফিল্ডিং করে খুব কাছ থেকে তাঁর গায়ে আলতো করে বল ছুড়ে মারেন ওয়ার্ন। ক্ষিপ্ত স্যামুয়েলস ওয়ার্নের দিকে ছুড়ে মারেন ব্যাট, ওয়ার্নের মাথার ওপর দিয়ে ব্যাট গিয়ে পড়ে আম্পায়ারের কাছে। আম্পায়াররা ছুটে গিয়ে শান্ত করেন পরিস্থিতি। গজরাতে গজরাতে ফিরে যান ওয়ার্ন, হাঁটতে হাঁটতে ইঙ্গিত করে দেখান, স্যামুয়েলসের মাথায় সমস্যা আছে।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে গুরুতর অসন্তুষ্টি, ইচ্ছা করে অন্যের সঙ্গে শারীরিক সংযোগ ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার—এই তিন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ওয়ার্ন। পার পেয়ে গেছেন ইচ্ছে করে অন্যের গায়ে বল ছোড়ার অভিযোগ থেকে। ওয়ার্নের দাবি, তিনি বল ছুড়েছিলেন সতীর্থ রব কুইনির দিকে।
ঘটনার সময় মাইক্রোফোনে মাঠ থেকে ধারাভাষ্যকারদের সঙ্গে কথা বলছিলেন বলে স্পষ্ট শোনা গেছে ওয়ার্নের কথা। আচরণ নিয়ে ধারাভাষ্যকারদের প্রশ্নের জবাবে তখন ওয়ার্ন বলেছিলেন, ‘কেউ ব্যাট ছুড়ে দিলে কী করা উচিত?’ পরে অবশ্য নিজের আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন ওয়ার্ন, ‘আমি সব সময় খেলাটা খেলেছি আবেগ দিয়ে। তবে স্বীকার করছি, দলের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে সেদিন রাতে একটু বেশিই করে ফেলেছিলাম। কিছু কিছু আচরণের জন্য আমি দুঃখিত, তবে এত বড় শাস্তি পেয়ে হতাশও।’
স্যামুয়েলসের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে দুটি অভিযোগ। তবে আহত থাকায় শুনানি হতে পারেনি। এই ম্যাচেই লাসিথ মালিঙ্গাকে হুক করতে গিয়ে রক্ত ঝরেছে চোখ দিয়ে। আঘাত পেয়ে কাতরানোর সময় বোলার মালিঙ্গা ছাড়া স্টারসের আর কেউই কিন্তু এগিয়ে যাননি স্যামুয়েলসের পাশে! ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.