অভিযুক্তদের আদালতে হাজির

দিল্লিতে বাসে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গতকাল সোমবার প্রথমবারের মতো আদালতে হাজির করা হয়। প্রত্যেককে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে দাখিল করা পুলিশের অভিযোগপত্রের অনুলিপি দিয়েছেন বিচারক। আগামী বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
বিচারকাজ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে না বলেও আদেশ দিয়েছেন নয়াদিল্লির সাকেত মহানগর হাকিম আদালত। অনেক আইনজীবী, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির উদ্ভব হয় আদালতকক্ষে। 'নজিরবিহীন এ পরিস্থিতিতে' বিচারক নম্রিতা আগারওয়াল সংবাদমাধ্যমকেও আদালতের অনুমতি ছাড়া এ মামলাসংক্রান্ত খবর প্রকাশে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত ষষ্ঠজনকেও গতকাল প্রথমবারের মতো আদালতে তোলা হয়। তার বয়স ১৮ বছরের নিচে দাবি ওঠায় তাকে হাজির করা হয় কিশোরদের বিচারে গঠিত পৃথক একটি আদালতে। বয়স প্রমাণের পক্ষে বিদ্যালয় ছাড়ার সনদসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র আদালতে পেশ করেন তার বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল। তবে আদালত এতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। ১৫ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিন প্রিন্সিপালকেও আদালতে হাজির থাকতে আদেশ দেন আদালত।
গত ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার তরুণী ২৯ ডিসেম্বর মারা যান। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ সাজাসহ নারীদের সুরক্ষায় শক্তিশালী আইন প্রণয়নের দাবি উঠেছে।
গতকাল আদালতকক্ষে অনেক মানুষের উপস্থিতিতে বিচারকাজ ব্যাহত হয়। আদালত এক পর্যায়ে মুলতবিও হয়ে যায়। মামলায় সংশ্লিষ্টতা নেই_এমন ব্যক্তিদের আদালতকক্ষ ত্যাগ করার নির্দেশ দেন বিচারক নম্রিতা। অভিযুক্তদের পক্ষে এক আইনজীবীর মামলায় লড়ার ঘোষণায় শুরু হয় হট্টগোল। সাকেত আদালতের আইনজীবীদের সংগঠনসহ দিল্লির কয়েকটি আইনজীবী সংগঠন আগেই ঘোষণা দিয়েছে, অভিযুক্তদের পক্ষে তাঁদের কোনো সদস্য আদালতে দাঁড়াবেন না। এ অবস্থায় আইনজীবী মোহন লাল শর্মা আদালতে বলেন, অভিযুক্ত কয়েকজনের পরিবারের সদস্যরা তাঁকে অনুরোধ করেছেন। তাই এ মামলায় আসামিদের পক্ষ নিতে চান তিনি। এ জন্য ওকালতনামায় (চুক্তি) অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সই নেওয়ার অনুমতি চান তিনি। তবে আদালত তা নাকচ করে বলেন, আদালতে অভিযুক্তদের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দিতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে মোহন লালকে তিহার জেলে গিয়ে অভিযুক্তদের সই নেওয়ার পরামর্শ দেন বিচারক নম্রিতা। মোহন লাল অভিযুক্তদের পক্ষে মামলায় লড়ে জনপ্রিয়তা কামাতে চাইছেন বলে বাকি আইনজীবীরা অভিযোগ করেন। দুজন আইনজীবী এ মামলায় অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) ভূমিকা পালনেরও প্রস্তাব দিয়েছেন। সূত্র : এনডিটিভি, জিনিউজ।

No comments

Powered by Blogger.