পাকিস্তানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হত্যা মামলা

পাকিস্তানের করাচিতে তৈরি পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করেছে পুলিশ। কারখানাটির মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের এতে আসামি করা হয়েছে। দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ শিল্প-দুর্ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরকারিভাবে কমপক্ষে ২৪৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।


গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে প্রায় একই সময়ে করাচির পাশাপাশি লাহোরের একটি জুতা তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হয়েছে ২৫ জন। বুধবার রাতে কর্তৃপক্ষ করাচির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২৮৯ বলে জানিয়েছিল। দুটি দুর্ঘটনারই কারণ উদ্ঘাটনে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
এদিকে গতকালও করাচির স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মারাত্মকভাবে পুড়ে যাওয়া প্রায় ১০০টি মরদেহ শনাক্ত করতে রক্ত নেওয়া হয়। গতকাল সকাল পর্যন্ত ১৪০ জনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পরও গতকাল অনেককে কারখানার সামনে প্রিয়জনের জন্য উন্মুখ অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে করাচি প্রায় সম্পূর্ণ অচল ছিল গতকাল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দোকানপাট ও কলকারখানা বন্ধ ছিল। অফিস-আদালতে উপস্থিতিও ছিল হাতে গোনা।
করাচির ঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারককে প্রধান করে তদন্তদল গঠন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এক সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। কারখানা ভবনটিতে জরুরি বহির্গমনের পথ ছিল না বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়া ভবনের অন্য সুযোগ-সুবিধাও ছিল অপর্যাপ্ত। ধারণা করা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ডের সময় কারখানাটিতে ৬০০ জন কর্মরত ছিল।
করাচির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বালদিয়া থানার পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ নওয়াজ গোন্দাল বলেন, 'আমরা কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছি। পাশাপাশি কারখানার শ্রমিকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে যেসব সরকারি কর্মকর্তা চূড়ান্ত গাফিলতি দেখিয়েছেন তাঁদের এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।' করাচি পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাঈম আকরাম মামলার কথা নিশ্চিত করে জানান, আলী এন্টারপ্রাইজেসের মালিক দুই ভাইকে দেশের বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঘটনার সময় থেকে তাঁরা গা-ঢাকা দিয়ে আছেন। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.