ইউনিসেফের প্রতিবেদন-শিশুমৃত্যু অর্ধেকে নেমেছে

গত দুই দশকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। ১৯৯০ সালে বিশ্বে পাঁচ বছরের কম বয়সী এক কোটি ২০ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। আর ২০১১ সালে এ সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯ লাখে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।


ইউনিসেফ বলেছে, উন্নত দেশের তুলনায় দরিদ্র দেশগুলোয় শিশুমৃত্যুর হার কম। কারণ এসব দেশে প্রতিষেধক আগে পেঁৗছায়। তবে শিশুদের বুকের দুধ খাওয়াতে উৎসাহিত করা এবং সাধারণ রোগগুলোর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার ফলেও মৃত্যু হার কমেছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি লেক সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, 'শিশুমৃত্যু হার কমানো নিয়ে সন্তুষ্টি এক্ষেত্রের অসমাপ্ত কাজগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।' কারণ এখনো বিশ্বে প্রতিদিন ১৯ হাজার শিশু প্রতিরোধযোগ্য রোগে মারা যাচ্ছে।
'কমিটিং টু চাইল্ড সারভাইবাল : এ প্রমিজ রিনিউড' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার মতো সংক্রমিত রোগ দুই-তৃতীয়াংশ শিশু মৃত্যুর কারণ। শিশুমৃত্যুর জন্য ভৌগোলিক ও সামাজিক বৈষম্যকেও দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মা ও শিশুস্বাস্থ্য এবং মেয়ে শিশুদের শিক্ষার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।
শিশু মৃত্যুহার কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল, পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় অঞ্চল এবং মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো। বাংলাদেশ, লাইবেরিয়া ও রুয়ান্ডার মতো স্বল্প আয়ের দেশ ব্রাজিল, মঙ্গোলিয়া ও তুরস্কের মতো মধ্য আয়ের দেশ এবং ওমান ও পর্তুগালের মতো উচ্চ আয়ের দেশ শিশুমৃত্যু হার কমানোয় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
ইউনিসেফের ব্রিটেন শাখার পরিচালক ডেভিড বুল বলেন, 'শিশমৃত্যু হার কমাতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে লাওস, পূর্ব তিমুর ও লাইবেরিয়া।'
ইউনিসেফ জানিয়েছে, দারিদ্র্য ছাড়াও গ্রামে জন্ম, মায়েদের যথাযথ জ্ঞানের অভাব, সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতাও শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.