চট্টগ্রামের সাহিত্য সভায় অভিমতঃ ‘যোগ্য লেখক তার স্থান করে নেবেই’

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে জাতীয় পর্যায়ের অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাহিত্য সভা। সভায় সাংবাদিকতা, ফটোগ্রাফিও এক ধরনের সাহিত্যসহ সাহিত্য চর্চায় অনলাইন অবারিত সুযোগ করে দিয়েছে বলে অভিমত উঠে এসেছে।

সাহিত্যের উদ্দেশ্য কী? সত্য-সুন্দর ও মানুষের কল্যাণের প্রত্যাশা? নাকি জীবন ও সমাজের অভিঘাতে বিপর্যস্ত মানুষের পলায়নের উপায়? বাস্তব জীবন থেকে আহরিত উপাদান ও সংগ্রহকৃত রসদের গাঁথামালা সাহিত্য! এই সাহিত্যের স্রষ্টা-কবি বেড়ে ওঠে কী উপায়ে? কীভাবে সাহিত্যের ইতিহাস দাপিয়ে বেড়ান দাপুটে শিল্পী-সাহিত্যিক?
আর এসব সরাসরি শিল্পী-সাহিত্যিকের কাছ থেকে এরকম আরো আরো প্রশ্নের জবাব পেতেই ছিল এ আয়োজন।
‘সাহিত্য কী’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিকাল পৌনে ৫টা থেকে শুরু হয় এ সভা। চলে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।

বাংলানিউজের হেড অব নিউজ মাহমুদ মেননের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ সভা। সভায় চট্টগ্রামের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রথিতযশা ব্যক্তিরা অংশ নেন। সভায় যোগ দিয়েছেন তরুণ, উদীয়মান লিখিয়েরাও। 
মাহমুদ মেনন খান বলেন, চট্টগ্রামের সাহিত্যিকদের ভাবনা জানতে বাংলানিউজ এ সভার আয়োজন করেছে। বর্তমান সময়ে অনলাইনে লেখালেখি অনেক জনপ্রিয়। তরুণ লেখরা এখানেই বেশি চর্চা করছেন। কারণ দৈনিক পত্রিকায় সীমাবদ্ধতার কারণে লেখকরা তাদের লেখা প্রকাশের জায়গা পান না। কিন্তু অনলাইনে সহজেই লেখা প্রকাশের সুযোগ রয়েছে। অনলাইনে লেখালেখির মাধ্যমে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। ফলে এ সময়ের তরুণ লেখকরা নিয়মিত অনলাইনে সাহিত্য চর্চা করছেন।

এসময় শিল্প-সাহিত্য বিভাগের নিউজরুম এডিটর এমজে ফেরদৌস সভায় অংশগ্রহণকারী সবাইকে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান।

উপস্থিত কবি-সাহিত্যিক
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কবি রাশেদ রউফ, কবি এজাজ ইউসুফী, কবি বিশ্বজিৎ সেন, বিপুল বড়ুয়া, জিন্নাহ চৌধুরী, কবি সাথী দাশ, হোসাইন কবির, খালিদ আহসান, কামরুল হাসান বাদল, আকতার হোসাইন, হাফিজ রশিদ খান, কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, মউদুদুল আলম, ফরহাদ জামান, সাইদুল আরেফিন, আফরিন নিগার পুষ্পা, মনিরুল মনির, অনিন্দ্য টিটো, আহসানুল কবির রিটন, নুসরাত জাহান, গৌতম চাকমা, রণজিৎ রক্ষিত, শিব প্রসাদ, কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, মুহম্মদ নুরুল আবসার, ফারুক হাসান, হোসাইন আনোয়ার, অমিতাভ সেন, অপু বড়ুয়া, তালুকদার হালিম, আহমদ জসিম, মুবিনুল হক, ফরহাদ জামান, মনিরুল মনির, রুদ্র শায়ক, আরণ্যক টিটো, সাঈদুল আরেফিন, সনজিৎ দে, সারাফ নাওয়ার, দীলিপ কির্ত্তুনিয়া, ইসমাইল হোসেন মনি, সুজিত সাহা, ফজলে রাব্বী, এসএম সাঈদ সুমন, শাহেদা আক্তার, জাফর আহমদ, ফরিদ মাহমুদ, দীপংকর ঘোষ, আখতারুল ইসলাম, আরিফ রায়হান, লিটন কুমার চৌধুরী, সাহিদা রহমান মুন্নি, ইফতেখার ফয়সাল, আফরিন নিগার পুষ্প, করুণা আচার্য্য, হানিফ মোল্লা, তুলি দত্ত, হাসনাত শোয়েব, আবু নঈম মাহতাব মোর্শেদ, শুভরাজ বিশ্বাস, প্রীতিময় খীসা, আজিজ কাদের, এটিএম সাইফুর রহমান প্রমুখ।

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় জমে ওঠে আড্ডা। আদিবাসী সাহিত্যসহ নানা বিষয়ে জমে ওঠে যুক্তিনির্ভর নানা আলোচনা। তারা একেকজন বলছিলেন এমনই।

সাথী দাশ: আমরা যারা লেখালেখি করি, আমরা নিজস্ব তাগিদ থেকেই লিখব। বাংলানিউজ তাদের সাহিত্য পাতা কিভাবে সাজাবে, আমাদের কিভাবে লিখতে উদ্বুদ্ধ করবে, সেটা বাংলানিউজের বিষয়।  আমরা বাংলানিউজের সঙ্গে থাকব।
তবে অনলাইনে লেখা পাঠানোর কিছু সমস্যাও আছে। প্রিন্ট মিডিয়ায় লেখা একটা পাঠিয়ে দিলেই হয়। কিন্তু অনলাইনে লেখা আগে কম্পোজ করতে হবে। এরপর ই-মেইল ব্যবহার করে পাঠাতে হবে। এভাবে অনেক লেখক অভ্যস্ত নাও হতে পারেন।

রাশেদ রউফ: কম্পিউটার অন করেই আমি প্রথমে বাংলানিউজ খুলি। কারণ এখানে ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’ নামে আলাদা একটি বিভাগ আছে। চট্টগ্রামের ব্যুরো এডিটর তপন চক্রবর্তীকে বলেছি, এ জনপদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরার জন্য।
এরইমধ্যে চট্টগ্রামের সংস্কৃতি জগতের খবরাখবর, বেশ কিছু শিল্পীর সাক্ষাৎকার কার্যক্রম চোখে পড়েছে। আজকের সাহিত্য সভার মধ্য দিয়ে মনে হচ্ছে সাহিত্যকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, সাংবাদিকতাও একধরনের সাহিত্য, কাজের পাশাপাশি অনলাইনে থাকা মানে সৃজনশীলতার মধ্যে থাকা। অনলাইনের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক তারাই জানেন বাংলানিউজ সম্পর্কে।

সাহিত্যে চট্টগ্রামের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে অনেক লেখক আছেন। আমরা মনে করি না তারা চট্টগ্রামের লেখক। সবাই বাংলাদেশের লেখক। প্রায় সব ধরনের সাহিত্যে চট্টগ্রাম অবদান রাখছে। এর মধ্যে শিশুসাহিত্যে চট্টগ্রামের অবদান উল্লেখযোগ্য।

তিনি বলেন, অনলাইনের দায়িত্ব ভালো লেখকদের তুলে আনা। কয়েকটি অনলাইন লেখকদের সম্মানীর ব্যবস্থা করেছে।

এজাজ ইউসুফী: জাতীয় সংকটকালে কবিরাও অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। আজ আমাদের সামনে সুযোগ এনেছে বাংলানিউজ। তরুণদের মধ্যে যারা ইন্টারনেট চর্চা করছে, তারা দ্রুত এ সুযোগ নিতে পারবে। এতে দ্রুত পাঠকদের কাছে পৌঁছে যাবে তাদের লেখা। অনেক পাঠকের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে। বাংলানিউজের এ উদ্যোগ আগামী দিনে সাফল্য বয়ে আনবে।

আগামী বিশ্ব হবে হাইটেকের যুগ। বর্তমানে সম্পূর্ণ মিডিয়া হয়ে পড়ছে কম্পিউটারনির্ভর। আমরা প্রস্তুত। এক্ষেত্রে বাংলানিউজের ‘শিল্প-সাহিত্য’ বিভাগটি লেখকদের দোরগোড়ায় এসে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

তিনি চট্টগ্রামের কবি-সাহিত্যিকদের পরিচিতিসহ বিশেষ আয়োজন থাকলে বাংলানিউজ আরও ব্যাপক সাড়া পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশ্বজিৎ সেন: বাংলানিউজের এ আয়োজন চট্টগ্রামের লেখকদের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করবে। বাংলানিউজ তাদের শিল্প-সাহিত্য বিভাগকে ঢেলে সাজাতে চায়। আমরা তাদের আহ্বানে সাড়া দিলে নিজেরা উপকৃত হবো।

কামরুল হাসান বাদল: ‘সাহিত্য কি?’ শীর্ষক সাহিত্য আড্ডার মাধ্যমে চট্টগ্রামের নবীন-প্রবীণদের মিলনমেলার আয়োজন করে চট্টগ্রামের সুবিধাবঞ্চিত লেখকদের বাংলানিউজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করায় অভিনন্দন জানাই।

মুহম্মদ নুরুল আবসার: বাংলানিউজের সাহিত্য বিভাগকে আরও সমৃদ্ধ করার দাবি জানাই।
আবু মুসা চৌধুরী: সাহিত্য একটি স্থায়ী উপাদান. তাই বাংলানিউজে প্রকাশিত সকল কবিতা সাহিত্যকর্ম রক্ষার জন্য আর্কাইভ জরুরি। চট্টগ্রামের সাহিত্য, ঐতিহাসিক বিষয়াবলী প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

রুদ্র শায়ক: পৃথিবীর ইতিহাস পরিবর্তনের ইতিহাস। অনলাইন সংবাদপত্র প্রতিনিয়ত এই পরিবর্তনকে তুলে ধরছে সারা দেশে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুধু নিজস্ব সৃষ্টি ও সাহিত্য একটি বিশেষ কমিউনিটির কাছে তুলে ধরা যায়। অনলাইন সংবাদ মাধ্যমসহ অন্যান্য পত্রিকা তার পুরো জাতির কাছে তুলে ধরে। তবে অনলাইনে প্রবেশাধিকার বিষয়েও ভাবতে হবে।

প্রীতিময় খীসা: পার্বত্য চট্টগ্রামের যে সাহির্ত্য চর্চা হয়, তা মিডিয়ার আড়ালে থেকে যায়। তাই আদিবাসী সাহিত্য চর্চার জন্য ওই সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে হবে, মিশতে হবে আদিবাসীদের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজের কাছে আদিবাসী ব্লগের দাবি জানান।

সারাফ নাওয়ার: সাহিত্য চর্চা না করেও অনেকেই কবি-লেখক হয়ে যাচ্ছে। একটি লেখা দেখলে বুঝা যায় না এটি তার। নাম উল্লেখ না করেই অন্যের লেখা ব্যবহার করা হচ্ছে। এ নিয়ে কেউ কিছু বলছে না। চট্টগ্রাম ও ঢাকার মধ্যে যে দ্বন্দ্বের কথা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়, যোগ্য লেখক তার স্থান করে নেবেই নেবে।
মউদুদুল আলম: ফটোগ্রাফিও একটি সাহিত্য। এটি এমন একটি সাহিত্য যা দ্রুত মানুষের মনকে নাড়া দেয়। আমি একটি কথা বলতে পারি, প্রিন্ট মিডিয়ার যুগ শেষ হয়ে গেছে। সামনের দিনে আর কলমের ব্যবহার হবেনা। অনলাইন মিডিয়ার সাহিত্যও ধীরে ধীরে প্রসারের দিকে যাচ্ছে।
মনিরুল মনির: লেখকদের তাদের নিজেদেরকেই নিজেদের সাহিত্যের মানদ- ঠিক রাখতে হবে। নিজেদেরকেই ভাল লেখার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। পত্রিকা সাহিত্যের মানদ- ঠিক থাকলে তবেই লেখা ছাপবে। এটা তাদের অবস্থান থেকে সঠিক। সুতরাং আমরা লেখকরা যতক্ষণ ভাল লিখবো না ততক্ষণ আমাদের লেখা না ছাপানোর হতাশা কাটবে না।
জিন্নাহ চৌধুরী: বাংলানিউজ সাহিত্য সভার মাধ্যমে চট্টগ্রামের লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিকদের মিলনমেলা ঘটিয়েছে। সাহিত্য নিয়ে আড্ডার পাশাপাশি লেখার মান উন্নত করা কিংবা মননের বিকাশে এ ধরনের আড্ডা গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করছে।
সাহিদ হাসান: আমরা লক্ষ্য করছি, সাহিত্য মানের চেয়ে আজকাল প্রচারের দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যারা লেখালেখি করবেন, তাদের ঠিক করতে হবে, তারা কি প্রচারের জন্য লিখবেন নাকি চর্চার জন্য লিখবেন। কোন পত্রিকা আমার লেখা না ছাপলে তাতে আমার কি যায় আসে। আমি নিজের তাগিদেই লিখব।
বিশ্বজিৎ সেন: ঢাকার মিডিয়ায় চট্টগ্রামের অনেক কবি, লেখক স্থান করে নিয়েছেন, নিয়মিত তাদের লেখা ছাপা হচ্ছে এটা আমাদের জন্য আনন্দের। কিন্তু এটাও ঠিক যে, ঢাকার অনেক মিডিয়া অপরিচিত লেখকের নাম দেখলে খামটিও  খোলেনা। এ ধারা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
দিলীপ কীত্তুর্নিয়া: প্রচার মাধ্যমের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা আছে। এজন্য লেখা ছাপানোসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেক অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু অনলাইন মিডিয়া বাংলাদেশে নতুন ধারার সৃষ্টি করেছে। আশা করছি অনলাইন মিডিয়া সাহিত্য জগতেও নতুন ধারার সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে।
হাফিজ রশিদ খান: আদিবাসী সাহিত্য নিয়ে আমিই প্রথম চট্টগ্রাম থেকে পুরো জাতির কাছে তুলে ধরেছি। এরপর থেকে অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের সংস্কৃতি ও সাহিত্য নিয়ে কাজ করা শুরু করছেন।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র যেহেতু বহু জাতির দেশ তাই সরকারকেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে এ স্বীকৃতি দিতে হবে।
অধ্যাপক হোসাইন কবির: অনেকেই বলছেন প্রযুক্তির কারণে অনেক কিছই হারিয়ে যাচ্ছে। আসলে আমরা নিজেরাই তা হারিয়ে ফেলছি। যেমন ডাকের প্রচলন তাকলেও আমরা ব্যবহার করছিনা। অবহেলায় থাকছে পোস্ট অফিস। ব্যবহার করছি কুরিয়ার সার্ভিস।
তিনি বলেন, আসলে প্রযুক্তির কোন দোষ নেই, দোষ আমাদের। কী কাজে তা ব্যবহার করছি, তাই দেখার বিষয়।
অনলাইন সংবাদ মাধ্যমকে ‘অবারিত সুযোগ’ উল্লেখ করে তিনি আর্কাইভসহ আলোচকদের বিভিন্ন প্রস্তাব এসেছে তা বাংলানিউজ ভেবে দেখবে বলে আশা করেন।
বাংলানিউজের অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর রানা রায়হান অংশগ্রহণকারী কবি-সাহিত্যিকদের  সাহিত্য আড্ডায় অংশ নেওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে তাদের দাবি সাহিত্য পাতার আর্কাইভ খোলার কথা জানান।
প্রথম দিকে কবি শাহীন আনোয়ার আবৃত্তি করেন স্বরচিত কবিতা। তিনিও এ আয়োজনে বাংলানিউজকে ধন্যবাদ জানান।


সভা সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন শ্যামল।

অনুষ্ঠানের শুরুতে চট্টগ্রামে সাহিত্য সভার আয়োজন করার জন্য তিনি বাংলানিউজকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যেখানে সবাই ঢাকা কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে, সেখানে বাংলানিউজ চট্টগ্রামের সাহিত্যিকদের সাহিত্য চর্চার সুযোগ করে দিয়েছে।

চট্টগ্রামের লেখালেখির ঐতিহ্য ঢাকার চেয়েও অনেক পুরনো বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জীবন থেকে প্রাপ্ত যন্ত্রণা, অনেক সুখ অথবা অস্বস্তি কিংবা দৃষ্ট রং-রূপ ব্যক্তি মানসে ধরা দেয় সমাজের ছায়া হয়ে। সেই ছায়া পরিবর্তিত রূপে শিল্পীর তুলি-কলমের আঁচড়ে অথবা সুরের মূর্ছনায় আমাদের কাছে হাজির হয় শিল্প-সাহিত্য আকারে। কেউ কেউ সাহিত্যকে বলে থাকেন সমাজের দর্পণ।

তবে সাহিত্য কি ফটোগ্রাফ? সমাজের সত্যনিষ্ঠ ধারাবর্ণন সৎ সাংবাদিকতা হতে পারে; তা কি সাহিত্য? সামাজিক অভিঘাত ব্যক্তিমানসে তো অপরিবর্তিত থাকে না। যেমন কাদামাটির স্তুপ আর কাদামাটিতে গড়া ভাস্কর্য এক নয়।

তবে সাহিত্য কি স্বপ্ন? যেমন আমাদের ঘুমের ভেতরে সমাজের ছবি স্বপ্ন হয়ে ধরা দেয়। দুঃস্বপ্ন হয়েও বটে।
আর পুরো আয়োজনে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই সময় পেরিয়ে যায়। বাংলানিউজ শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক সাহিত্য চর্চাকে গুরুত্ব না দিয়ে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের যোগ্য গুণী লেখকদের তুলে আনবে এমনটাই প্রত্যাশা করেন চট্টলার কবি-সাহিত্যিকরা।
সমাপনী বক্তৃতায় মাহমুদ মেনন খান বলেন, সাহিত্য সভায় প্রত্যেকের আলোচনায় অনেক বিষয় উঠে এসেছে। কিছু কিছু বিতর্কের সমাধান আপনারাই করেছেন। প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেকেই যার যার অবস্থানে থেকে নিজের তাগিদ থেকেই লিখছেন। এ লেখা নিজের সম্পদ হলেও কখনো কখনো গণমানুষের সম্পদে পরিণত হয়। এ সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় ও অনলাইনের উপযোগী লেখা প্রকাশের জন্য বাংলানিউজের রয়েছে বিশাল একটি ক্যানভাস। যেখানে ভালো লেখা ছাপানোর জায়গার অভাব নেই।

নতুন আঙ্গিকে ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’ বিভাগটি সাজানোর উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলে আমাদের বড় একটি পাঠকগোষ্ঠী রয়েছেন। চট্টগ্রাম থেকেই আসে আমাদের আয়ের বড় একটি অংশ। চট্টগ্রামবাসীর সুখ-দুঃখের খবর আরও বেশি তুলে ধরতে চাই আমরা। এ লক্ষ্যে শনিবার সকালে নতুন ডিজাইনে এ বিভাগটি উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।’
উপস্থিত কবি-সাহিত্যিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলানিউজের চট্টগ্রাম প্রতিদিন বিভাগে নিবন্ধিত লেখকদের প্রত্যেকের নামে একটি করে বিভাগ থাকবে। যাতে তাদের ভালো লেখাগুলো স্থান দেব আমরা। চেষ্টা করব আপনাদের চাওয়া-পাওয়া যতখানি সম্ভব পূরণ করতে।’
ধন্যবাদ বক্তব্যে বাংলানিউজ চট্টগ্রাম ব্যুরো এডিটর ও স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট তপন চক্রবর্তী কষ্টস্বীকার করে সাহিত্য সভায় অংশ নেওয়ার জন্য কবি, সাহিত্যিক ও গুণীজনদের ধন্যবাদ জানান।
বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী রণজিৎ রক্ষিতের কণ্ঠে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা দিয়ে শেষ হয় সাহিত্য সভা।

রমেন দাশগুপ্ত, আল রাহমান, মো. মহিউদ্দিন, মাহবুব আলম

No comments

Powered by Blogger.