আলবদর প্রধান ছিলেন নিজামী, উপপ্রধান মুজাহিদ ॥ জেরায় শাহরিয়ার কবির

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পক্ষের প্রথম সাক্ষী লেখক, সাংবাদিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির আসামি পক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলামের জেরার এক প্রশ্নের জবাবে


বলেন, আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন মতিউর রহমান নিজামী এবং উপ-প্রধান ছিলেন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ। আরেক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের বহু পত্রিকায় আলবদর প্রধান হিসেবে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নামও এসেছে। স্বাধীনতার পরে বহু পত্রিকায় আলবদর বাহিনী কিভাবে গঠন করা হয়েছে এর হাইকমান্ডে কারা ছিল সে সম্পর্কিত বহু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ আসামি পক্ষের আইনজীবীদের সপ্তম দিনের জেরার প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন সাক্ষী শাহরিয়ার কবির। অপরদিকে, যুদ্ধাপরাধের মামলায় আটক আরেক জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পক্ষের নবম সাক্ষী আমির হোসেন মোল্লাকে জেরা শেষ করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর প্রসিকিউশন পক্ষের দশম সাক্ষীর জবানবন্দী প্রদানের দিন ধার্য করে এ মামলার সকল কার্যক্রম মুলতবি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
জেরা শেষে ট্রাইব্যুনালের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শাহরিয়ার কবির বলেন, কয়েকদিন পর আমি দেশের বাহিরে যাব। এখনও ভিসা করা হয়নি। আমি আর সময় দিতে পারব না। এ সময় প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত বলেন, সাক্ষীকে আসামিপক্ষ এ পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টা জেরা করেছেন। শাহরিয়ার কবির বলেন, আমার জানা মতে বিশেষজ্ঞ সাক্ষীদের মধ্যে আমাকেই সর্বোচ্চ সময় ধরে জেরা করা হচ্ছে। এ সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি অনেক সময় দিয়েছেন। বিদেশ থেকে আসার পর আর একটা সেশন সময় দেবেন আশা করি। পরে এতে শাহরিয়ার কবির সম্মতি দিলে জেরা অসমাপ্ত রেখে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ মামলার সকল কার্যক্রম মুলতবি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ওই দিন এ মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষের দ্বিতীয় সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে তার জবানবন্দী প্রদান করবেন।
ট্রাইব্যুনালে ২০ সেপ্টেম্বর কোন্ সাক্ষী আসবে প্রসিকিউটরের কাছে আসামিপক্ষের আইনজীবী জানতে চাইলে প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত ট্রাইব্যুনালে বলেন, জবানবন্দী দেয়ার জন্য সাক্ষীদের নাম দুদিন আগে আসামিপক্ষকে দিলে এক ধরনের অসুবিধার সৃষ্টি হয়। দেখা গেছে, আমরা যে সাক্ষীর নাম তাদের দিই দেখা যায় সেই সাক্ষী হয়ত অসুস্থ, নয়তো সাক্ষী অন্য কোথাও চলে যায়, তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা সাক্ষীদের নাম আসামিপক্ষকে আগে দিতে নিরাপদ মনে করছি না। এ সময় তিনি সাক্ষ্য দেয়ার দিনই সাক্ষীদের নাম দেয়ার কথা বিবেচনা করার জন্য আবেদন করেন ট্রাইব্যুনালের কাছে। পরে সাক্ষীদের জবানবন্দীর পর জেরা করার ক্ষেত্রে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম একদিনের সময় চান। পরে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি জেরা করতে অবশ্যই একদিন সময় পাবেন।

শাহরিয়ার কবিরকে জেরা
প্রশ্ন : ১৯৭৩ সালে যে পার্লমেন্টে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইন করা হয় সে পার্লামেন্টে এ্যাডভোকেট সিরাজুল হক এবং ব্যারিস্ট্রার মইনুল হোসেন সদস্য ছিলেন।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইন-১৯৭৩ যে অধিবেশনে পাস হয়ে ছিল তার কর্ম ধারায় দালাল আইনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে কেউ কোন আলোচনা করেনি।
উত্তর : পার্লামেন্টে হয়নি। তবে দালাল আইনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে খবরের কাগজে ধারাবাহিকভাবে লেখালেখি হয়েছে, অনেক বক্তব্যও এসেছে।
প্রশ্ন : যে সকল ব্যক্তির বিচার দালাল আইনে হয়েছিল সেই বিচার বাতিল করে ৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইনে করার দাবি কারা করেছিল।
উত্তর : জানান শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
প্রশ্ন : শহীদ পরিবারের দাবি সংবলিত এমন কোন পত্রিকার কাটিং আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে দিয়েছিলেন কি।
উত্তর : প্রয়োজন মনে করিনি। কারণ হাজার হাজার পত্রিকার উদ্ধৃতি আমার বিভিন্ন বইতে আছে।
প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইন ১৯৭৩ পাস হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ে ট্রাইব্যুনালস স্থাপনের দাবি করে আপনি কোন বিবৃতি দিয়েছিলেন কি।
উত্তর : সে সময় বিবৃতি দেয়ার মতো আমার কোন সাংগঠনিক যোগ্যতা ছিল না।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ে ট্রাইব্যুনালস স্থাপনের দাবি করে কোন ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান কোন বিবৃতি দিয়েছিল কি?
উত্তর : আমার মনে পড়ছে না।
প্রশ্ন : এ আইনটি শুধুমাত্র পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বিচারের জন্য গঠন করা হয়েছিল।
উত্তর : সত্য নয়, সাথে তাদের সহযোগীদের বিচারের জন্যও আইনটি করা হয়।
প্রশ্ন: ওই সময় আইনমন্ত্র শ্রী মনরঞ্জন একটি বিবৃত দিয়ে বলেছিলেন, পাকিস্তানী আর্মিদের মধ্যে যারা স্বাধীনতা যুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধ করেছে তাদের বিচারের জন্য এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে, আপনি কি তা জানেন?
উত্তর : এ ধরনের কোন বিবৃতি দিয়েছিলেন কি না তা আমার জানা নেই। তবে আইনে আছে সহযোগী বাহিনীরও বিচার করা যাবে।
প্রশ্ন: একাত্তরের ঘাতক ও দালালেরা কে কোথায় বইটির কোন স্থানে লেখকের নাম নেই।
উত্তর : এটি একটি কোষগ্রন্থ, কোষগ্রন্থে যা কিছু প্রকাশিত হয় তার সকল দায়দায়িত্ব সম্পাদকের এবং প্রতিষ্ঠানের। কয় লেখকের লেখা বইতে আছে, তাদের নাম মুখবন্ধনে উল্লেখ আছে।
প্রশ্ন: এই বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণের মুখবন্ধনে লেখক হিসেবে শুধ শফিক আহমেদের নাম উল্লেখ আছে। পরবর্তীকালে অন্য কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে লেখক হিসেবে যুক্ত করা হয়েছিল তাদের নাম এই বইয়ে আছে কি?
উত্তর : সত্য নয়। আমার যতটুকু মনে পড়ে এই বইয়ের তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে সাংবাদিক মোস্তাক হোসেন এবং আহমেদ মূসার নাম আছে।
প্রশ্ন: আপনার এই বইকে স্বাধীনতা যুদ্ধের দলীলপত্র বইয়ের ১৬তম খ- হিসেবে বিবেচনা করতে আবেদন করেছিলেন।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : এই বইয়ের সম্পাদকম-লী ছিলেন ড. আহমেদ শরীফ, কাজী নুরুজ্জামান এবং আপনি শাহরিয়ার কবির।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : প্রথম মুখবন্ধনে লেখা হয়েছিল, স্বাধীনতার পর যে কয়টি সরকার আমরা পেয়েছি তারা কেউ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখতে চায়নি বরং গোটা জাতির স্মৃতি থেকে দ্রুত অবমুক্ত করতে চেয়েছিল।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : এই বইয়ের ভূমিকায় লেখা আছে শেখ মুজিবুর রহমান ঘাতক ও দালালদের বিচার না করে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : শহিদুল হক মামা নামে কাউকে আপনি চেনেন?
উত্তর : নামটা চেনা মনে হচ্ছে, তবে কোন্ সুবাদে চিনি তা মনে পড়ছে না।
প্রশ্ন : নাছির উদ্দিন ইউসুফ সাহেবকে চেনেন?
উত্তর : অবশ্যই চিনি।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ টেলিভিশনে রণাঙ্গনের দিনগুলো নামে একটি ধারাবাহিক অনুষ্ঠান প্রাচারিত হতো এটা জানেন কি।
উত্তর : জানি তবে, দেখিনি।
প্রশ্ন : এই অনুষ্ঠানে সাধারণত যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে তাদের বক্তব্য ও সাক্ষাতকার প্রচারিত হয়।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : বুদ্ধিজীবী হত্যাকা-ের ব্যাপারে তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য স্বাধীনতার পর দুটি কমিটি গঠন করা হয়। একটি সরকারী ব্যবস্থাপনায় এবং অপরটি নাগরিক সমাজের উদ্যোগে, যার নেতৃত্বে ছিলেন জহির রায়হান।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : জহির রায়হান সাহেব যে তথ্য উদঘাটন করেছিলেন তা কলকাতার একটি পত্রিকার একজন সাংবাদিক ভারতে নিয়ে যায়।
উত্তর : আমি শুনেছি, তবে পরে আমরা তদন্ত দেখেছি ওই তথ্য সংবলিত নথিপত্র তারা এনএসআইকে হস্তান্তর করেছিল।
প্রশ্ন : নাগরিক তদন্ত কমিটির আরও উল্লেখযোগ্য দু’জন সদস্য ছিল। তারা হলেন, ব্যারিস্ট্যার আমীর-উল ইসলাম এবং অন্যজন ড. সিরাজুল ইসলাম।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগে ৪০টিরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : এই মামলাগুলো তদন্তের দায়িত্বে ছিল পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একজন ডিআইজির নেতৃত্বে একটি গোয়েন্দা টিমের।
উত্তর : আমি বলতে পারব না।
প্রশ্ন : এই বইয়ে আরও পর্যবেক্ষণ আছে বুদ্ধিজীবী হত্যাকা-ের বিষয়ে অধিকাংশ মামলা ছিল সাজানো। তা আপনারা নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : সাজানো মামলা দায়েরের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের গবেষণার মাধ্যমে শনাক্ত করেছিলেন কি?
উত্তর : আমি করিনি, অন্যরা করেছে। মেজর সামসুল আরেফিনের ‘মুক্তিযুদ্ধে ব্যক্তি ভূমিকা’ বইয়ে তাদের অনেকের নাম আছে।
প্রশ্ন : ১৯৭৩ সালে ঢাকার এসপি ও এসবির দায়িত্বে ছিলেন মাহাবুব উদ্দিন বীরবিক্রম।
উত্তর : থাকতে পারে।
প্রশ্ন : প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী সাহেব ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের অখ-তার পক্ষে কোন বিবৃতি দিয়ে ছিলেন কি?
উত্তর : হ্যাঁ দিয়েছিলেন, প্রাণ বাঁচানোর জন্য অনেকেই এ ধরনের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিল।
প্রশ্ন : মুনীর চৌধুরীর এক ভাই এখনও পাকিস্তানের নাগরিক হিসেবে সেখানে বসবাস করছে।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আপনি যতদিন দেশের অভ্যন্তরে ছিলেন সেই সময়ে আপনার সাথে মুনীর চৌধুরীর দেখা হয়নি।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : এরপর মুনীর চৌধুরীর মৃত্যু পর্যন্ত আপনার সাথে তার কোন যোগাযোগ হয়নি।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : আপনি দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার ৮ নবেম্বর ১৯৭১ সালের একটি পত্রিকার উদাহরণ দিয়েছিলেন, সেখানে আলবদর সমাবেশে পাকিস্তানের বিরোধিতাকারীদের খতম করার যে শপথ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ পড়িয়েছেন মর্মে উল্লেখ করেছেন, সেই পত্রিকার কোন স্থানে আলবদর শব্দটি নেই।
উত্তর : সত্য, তবে আলবদর শব্দটি ছিল কি না সেটা আমার মুখ্য বিষয়ছিলো না। আমার বিষয় ছিল, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ব্যক্তিদের খতম করার শপথ পড়ান। তা ছাড়া ওই সমাবেশ ইসলামী ছাত্র সংঘের ছিল। পরে ইসলামী ছাত্রসংঘ পুরোটাই আলবদরে রূপান্তরিত হয়েছে।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রসংঘের মোট কত জন সদস্য ছিল।
উত্তর: আমার জানা নেই। এটা জামায়াতে ইসলামী বা ছাত্র সংঘ ছাড়া কেউ বলতে পারবে না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কত জন ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যকে আপনি চিনতেন।
উত্তর : আমি কাউকে চিনতাম না।
প্রশ্ন : ঢাকা শহরের কতজন ছাত্রসংঘের সদস্যকে আপনি চিনতেন?
উত্তর: কাউকে চিনতাম না।
প্রশ্ন: ঢাকার বাইরে কতজন ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যকে চিনতেন।
উত্তর: সাধারণ সদস্যদের চিনতাম না। যারা সংগঠনের নেতা ছিলেন যাদের কর্মকা-ের বিবরণ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হতো তাদের সম্পর্কেই জানতাম।
প্রশ্ন: আপনার গবেষণায় কতজন আল বদরকে শনাক্ত করতে পেরেছিলেন।
উত্তর : এটা একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায় বইতে আছে। ওই সময় আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন মতিউর রহমান নিজামী এবং উপ-প্রধান ছিলেন এই মামলার আসামি আলী আহসান মোহাম্ম মুজাহিদ।
প্রশ্ন : আসামি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ সাহেব আলবদর নেতা ছিলেন মর্মে ১৯৭১ বা ’৭২ সালে কোন পত্রিকায় কোন খবর বের হয়েছিল কি না। বের হয়ে থাকলে তার কাটিং আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে দিয়েছিলেন কি না।
উত্তর : আমি আগেই বলেছি আলবদর একটি আধা গোপন সংগঠন ছিল। তাই ১৯৭১ সালে হাইকমান্ডের নাম সংবাদপত্রে লেখা হতো না। তবে আলবদর প্রধান হিসেবে মুজাহিদ সাহেবে আলবদর আয়োজিত পথ সভায় বক্তব্য দিয়েছেন। এ ধরনের সংবাদচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বহু পত্রিকায় আলবদর বাহিনী কিভাবে গঠন করা হয়েছে এর হাইকমান্ডে কারা ছিল সে সম্পর্কিত বহু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রশ্ন : দেখেন আমি বলছি ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ আলবদরপ্রধান বা আলবদরের সদস্য ছিলেন, এই ধরনের শব্দ উল্লেখপূর্বক কোন সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। এটা সত্য কি?
উত্তর : এটা সত্য নয়। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর দৈনিক আজাদের একটি ছবির ক্যাপশন হচ্ছে ‘গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি প্রধান করিয়া আলবদর আয়োজিত পথসভায় বক্তব্য রাখছেন আলবদর প্রধান জনাব মোজাহিদী।’ এখানে তার ছবি আছে।
প্রশ্ন : এই পত্রিকার মূল সংবাদের কোথাও আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নাম উল্লেখ করা হয় নাই। এটা সত্য কি।
উত্তর : এটা ভেতরে লেখার প্রয়োজন ছিল না।
প্রশ্ন : সংবাদ পরিবেশনের সাধারণ নিয়ম হচ্ছে প্রকাশিত ছবির নিচে যে ব্যক্তির নামের বিশেষণ যেভাবে থাকবে মূল সংবাদেও সেভাবে লিখতে হবে। এটা কি সত্য?
উত্তর : এটা সত্য নয়। আমি আমার ৪০ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে এ ধরনের ধরাবাঁধা কোন নিয়ম নেই।
কাদের মোল্লা
মধ্যাহ্ন বিরতির পর একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পক্ষের নবম সাক্ষী আমির হোসেন মোল্লাকে জেরা শেষ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। জেরা শেষে আগামী ১৭ পেপ্টেম্বর দশম সাক্ষীর জবানবন্দী প্রদানের দিন ধার্য করে এ মামলা কার্যক্রম ওই দিন পর্যন্ত মুলতবি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

No comments

Powered by Blogger.