ড. ইউনূসের প্রবাসী আয়ের তথ্য দিতে এনবিআরকে নির্দেশ

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রবাসী-আয় সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকের ৫৪টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় করসংক্রান্ত তথ্যও সংগ্রহ করছে এনবিআর।


গতকাল সোমবার এনবিআরের আয়কর বিভাগ থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের করের তথ্য চেয়ে কর অঞ্চল-১৪-এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রবাসী-আয় সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে এনবিআরের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কোনো সময়সীমা বেঁধে না দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব এ প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। এনবিআরের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকাকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওয়েজ আর্নার হিসেবে কত টাকা বিদেশ থেকে এনেছেন এবং তিনি তা আনতে পারেন কি না, এনে থাকলে কী পরিমাণ কর অব্যাহতি নিয়েছেন, সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য এনবিআরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই চিঠি দিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠি পাওয়ার পর এনবিআরের চেয়ারম্যান গতকালই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সদস্য (করনীতি) সৈয়দ আমিনুল করিম ও সদস্য (কর আপিল ও অব্যাহতি) বশির উদ্দিন আহমেদকে নির্দেশ দেন।
৫৪টি প্রতিষ্ঠানের করের তথ্য সংগ্রহ: গ্রামীণ ব্যাংকের ৫৪টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় করসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছে এনবিআর। গতকাল এনবিআরের আয়কর বিভাগ থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের করের তথ্য চেয়ে কর অঞ্চল-১৪-এ চিঠি দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়-ব্যয় ও আয়করের তথ্য জানতে চেয়ে গত বুধবার এনবিআরকে চিঠি দিয়েছিল গ্রামীণ ব্যাংক কমিশন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মাঠপর্যায় থেকে এসব তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: এদিকে গতকাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সচিবালয়ে ‘গ্রামীণ ব্যাংক কমিশন’-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সরকার গঠিত এই কমিশনের প্রধান সাবেক সচিব মামুন রশিদ এবং গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা অবশ্য বৈঠক শেষে কোনো কথা বলেননি। অর্থমন্ত্রী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের সংশোধনী আনা হয়েছে শুধু প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগের উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, ‘সংশোধনীটি এখনো অধ্যাদেশ আকারে জারি হয়নি। এটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ে রয়েছে। ভেটিং শেষে গেজেট হবে।’
কমিশনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে কমিশনের কাছে আমাদের কী কী প্রত্যাশা, তা তাদের জানানো হয়েছে।’
মন্ত্রিসভার বৈঠকে বুধবার ‘গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৮৩’-এর সংশোধনের লক্ষ্যে ‘গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ (সংশোধন) ২০১২’-এর অনুমোদন দেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.