অভিযোগের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক- ছিনতাইকারী ভয়ংকর

ঈদ ও রোজা সামনে রেখে সারা দেশে ছিনতাইকারীরা যে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে, সরকার সে কথা স্বীকার না করলেও দেশবাসী হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। ছিনতাইসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমন করার দায়িত্ব যাদের, সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো কোনো সদস্যের বিরুদ্ধেও ছিনতাই ও চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।


৩ জুলাই মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মচারী লিটনের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ছিনতাই করা নিয়ে পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা যে নাটক করেছেন, এরপর কোনো মানুষ প্রতিকারের জন্য তাঁদের কাছে যাবে না। গত তিন সপ্তাহেও শেরেবাংলা নগর থানা এ ঘটনায় মামলা নেয়নি, উল্টো আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে জোর করে মনগড়া সাধারণ ডায়েরি লিখিয়ে নিয়েছে। আবার র‌্যাব-২-এর কাছে প্রতিকার চাইতে গিয়ে তিনি আরেক দফা লাঞ্ছিত হয়েছেন। ওই কর্মচারীর অভিযোগ যদি অসত্যই হবে, তাহলে তাঁর কাছ থেকে জোর করে সাধারণ ডায়েরি লেখানোর কি কারণ থাকতে পারে?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে দেশবাসীকে নসিহত করছেন, তখনই রাজধানীসহ সারা দেশে ছিনতাইসহ নানা অপরাধের সংখ্যা বাড়ার খবর আসছে। বিচারপ্রার্থী মানুষ থানায় প্রতিকার চাইতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি নথিভুক্ত করেই দায়িত্ব শেষ করছে। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের মাসিক সভায় ছিনতাই বন্ধে তল্লাশি চৌকি ও টহল পুলিশের কার্যক্রম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে না যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
সন্দেহ নেই, অস্বীকৃতির সংস্কৃতি অপরাধীদের আরও বেপরোয়া করে তুলেছে। তারা জানে, অপরাধ করলেও থানা কর্তৃপক্ষ নিজেদের কৃতিত্ব জাহির করতে ঘটনা চেপে যাবে, মামলা নেবে না। আবার কদাচিৎ মামলা নিলেও অনায়াসে আসামি জামিনে বেরিয়ে আসে। খোদ রাজধানীতে ২৪ দিনে ২৪ ছিনতাইকারীর জামিন পাওয়াও অস্বাভাবিক ঘটনা।
পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও বিচারপ্রার্থী নাজেহাল হওয়ার যে অভিযোগ এসেছে তার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। প্রতিকার চাইতে গিয়েও সাধারণ মানুষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আক্রোশের শিকার হবে, তা আইনের শাসনের পরিচায়ক নয়।

No comments

Powered by Blogger.