বড়ালে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ শিকার

পাবনার ফরিদপুর উপজেলার পাছপুঙ্গলী ইউনিয়নের নারায়ণপুর ঘাট এলাকায় বড়াল নদে আড়াআড়িভাবে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এতে মাছের প্রজনন ব্যাহত হয়ে প্রচুর ডিমওয়ালা ও পোনা মাছ নিধন হচ্ছে বলে এলাকাবাসী ও মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন।


এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যমুনা নদী থেকে চলনবিলে পানি প্রবেশের প্রধান পথ বড়াল নদ। প্রায় দুই কিলোমিটার নদীর মধ্যে ফরিদপুর উপজেলার নারায়ণপুর ঘাট এলাকাটি সবচেয়ে গভীর। ফলে এ অংশটি মাছের অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত। প্রতিবছর বর্ষায় রুই, কাতলা, বোয়াল, টেংরা, পাবদা, পুঁটি, কইসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ এখানে ডিম ছাড়ার জন্য আশ্রয় নেয়। প্রচুর মাছের বিচরণ দেখে এ বছর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় অজিত হালদার নামের এক ব্যক্তি নদীর মাঝে বাঁশের বেড়া দিয়ে জাল পেতে মাছ শিকার করছেন।
গত রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রচণ্ড স্রোতে নদী দিয়ে পানি বিলের দিকে যাচ্ছে। বেড়া দিয়ে জাল টানানোয় স্রোতের গতি কমে গেছে। স্রোতের সঙ্গে যে মাছগুলো বিলের দিকে যাবে, তা আটকে পড়ছে জালে। কিছুক্ষণ পর পর নৌকা নিয়ে জাল থেকে মাছ ধরে আনা হচ্ছে। জাটকা, ছোট বোয়াল ও বাচা মাছ বেশি ধরা পড়ছে এখানে।
স্থানীয় মৎস্যজীবী দিলীপ হালদার ও পরিতোষ কুমার হালদার জানান, বড়াল নদের এই অংশ গভীর হওয়ায় মাছের বিচরণ বেশি হয়। দেশি প্রজাতির প্রায় সব ধরনের মাছই এখানে ডিম ছাড়ে। ফলে বছরের পুরো সময়টায়ই নদীর এই অংশে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। কিন্তু বাঁধ দিয়ে এভাবে মাছ শিকার করলে প্রজনন ব্যাহত হবে। মাছের বংশ বিস্তার হবে না।
বাঁশের বেড়া ও জালের মালিক অজিত হালদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা নদী থেকে এভাবে মাছ ধরি। মৎস্য বিভাগের লোকজনও বিষয়টি জানে। কোনো দিন কেউ কিছু বলেনি। মৎস্য বিভাগ নিষেধ করলে আমরা জাল তুলে নেব।’ ফরিদপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তালুকদার মাহবুবুর রহমান জানান, নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে এভাবে মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যাঁরা সেখানে মাছ ধরছেন, তাঁরা অবৈধভাবেই কাজটি করছেন। শিগগির এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.