৪৭ লাখ টাকার জাল নোটসহ গ্রেপ্তার ৬

রাজধানীর মুগদাপাড়া ও মান্ডা এলাকায় বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে জাল নোট তৈরি চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের কাছ থেকে ৪৭ লাখ টাকার জাল নোট এবং তা তৈরির বিপুল পরিমাণ উপকরণ ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।


গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন: জাল নোট তৈরির একটি চক্রের প্রধান মো. সেলিম (৩০) ও তাঁর সহযোগী জালাল উদ্দিন (৪৫), আবিদ হোসেন (৪২), রোজিনা বেগম (৩০), শহীদুল ইসলাম (৩০) ও তাঁর স্ত্রী মরিয়ম বেগম (২০)।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কেন্দ্রে (মিডিয়া সেন্টার) সাংবাদিকদের সামনে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আনা হয়। সেখানে তাঁরা জাল নোট তৈরির কথা স্বীকার করেন। গতকাল মুগদা থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে গোয়েন্দা পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত উপকমিশনার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে তাঁদের একটি দল মুগদা থানার মান্ডা সড়কের একটি বহুতল ভবনের সামনে অভিযান চালায়। সেখানে জাল নোট বিক্রির সময় রোজিনা আকতার, শহীদুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী মরিয়মকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। তাঁদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মুগদাপাড়ার ওয়াপদাগলিতে জাল নোট তৈরির একটি চক্রের প্রধান সেলিমের বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে জাল নোট তৈরির সময় সেলিম, তাঁর সহযোগী জালাল ও আবিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি পুলিশ ওই বাসা থেকে ৩২ লাখ টাকার জাল নোট এবং জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম ল্যাপটপ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, কালি, গাম, তারপিন, আইকা, রং ও কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে জাল নোট বিক্রির ২৭ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জানান, সেলিম মুগদাপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে জাল নোট তৈরি করে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে আসছিলেন। তিনি ১০০ টাকার নোটকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ছাপ দিয়ে ৫০০ টাকার জাল নোট তৈরি করতেন বলে স্বীকার করেন। সেলিমের সহযোগী জালাল ও আবিদ গুলিস্তানের নতুন টাকা বিক্রেতা এবং বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১০০ টাকার নোট সংগ্রহ করে তা সেলিমের কাছে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি করতেন। সেলিম ১০০ টাকা ধুয়ে (ওয়াশ) তার ওপর ছাপ দিয়ে ৫০০ টাকায় রূপান্তর করতেন। এ ছাড়া জালাল ও আবিদ জাল নোট তৈরির উপকরণ কিনে সেলিমের কাছে বিক্রি করতেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রোজিনা জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের বলেছেন, তাঁর স্বামী আবদুল মান্নান জাল নোটের পাইকার ছিলেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি এ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ডিবি পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার শহীদুল ও তাঁর স্ত্রী মরিয়ম রোজিনার কাছ থেকে জাল টাকা খুচরায় কিনে তা মিরপুরের বিভিন্ন মুদি দোকান, কাপড়ের দোকান এবং কাঁচাবাজারে পণ্যসামগ্রী কেনাকাটা করতেন।

No comments

Powered by Blogger.