খালেদার ১০ জুন, হাসিনার অনড় অবস্থান ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ! by গাজীউল হাসান খান

প্রাচীন গ্রিক নগররাষ্ট্র এথেন্সে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছিলেন এথেন্সের তৎকালীন শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবী সক্রেটিস, প্লেটো এবং এমনকি এরিস্টটলও। তৎকালীন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবিধান পড়ে বাস্তববাদী এরিস্টটল শেষ পর্যন্ত এ কথা বলতে বাধ্য হয়েছিলেন যে গণতন্ত্র আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থা নয়।


সক্রেটিস গণতন্ত্রপন্থী না হলেও সরাসরি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা না বলে তৎকালীন তরুণ সমাজের সামনে কিছু জরুরি প্রশ্ন তুলে ধরেছিলেন, যা গণতান্ত্রিক পদ্ধতির রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যায়। প্লেটো যে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন, সেখানে গণতন্ত্রের কোনো সুযোগই ছিল না, ছিল শ্রেণী-শাসনকে স্থায়ী করার প্রয়াস। এরিস্টটলের চিন্তাভাবনার মধ্যেও উলি্লখিত বাকি দুজনের মতোই বুদ্ধিজীবীদের অগ্রসরমাণ ভূমিকাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্র পরিচালনায়। কিন্তু আজকের সমকালীন বিশ্বে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্নে রাষ্ট্র এবং বিশেষ করে কায়েমী স্বার্থবাদী শাসকগোষ্ঠী যে ভূমিকা পালন করছে, তা পর্যালোচনা করলে অবশ্যই তাদের গোষ্ঠী ও শ্রেণী-শাসন দীর্ঘায়িত করার নগ্ন চিত্রটি দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে ওঠে। এখানে তাদের প্রণীত ও বারবার সংশোধিত একটি সংবিধানের দোহাই যেভাবে দেওয়া হয়, জনগণ কিংবা দেশের বৃহত্তর স্বার্থকে সেভাবে দেখা হয় না। এককথায়, জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্রের নামে চলে একটি বিশেষ সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর অনেকটা স্বৈরতান্ত্রিক শাসন, যা পক্ষান্তরে একসময় বুর্জোয়া শাসকদের ক্ষমতার লড়াইয়ে পরিণত হয়। তাতে না থাকে জনগণের অধিকারের প্রশ্ন, না মানা হয় প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক বিধিবিধান। পশ্চাৎপদ জনগণের ভোটে একবার নির্বাচিত হতে পারলে তাঁরা বনে যান জনগণের 'ভাগ্য বিধাতা'। জনগণ তখন তাঁদের হাতে হয় ক্রীড়নক, নয় নানাভাবে জিম্মি হয়ে পড়ে। অপরিণামদর্শী সে অসহায় জনগণ ও তাদের শাসনের জন্য যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা একদিন প্রণীত হয়েছিল- সক্রেটিস, প্লেটো এবং এরিস্টটল সাধারণ জনগণের পক্ষে তাতে আস্থা স্থাপন করতে পারেননি। তাই লেনিন যথার্থই বলেছিলেন, 'অসচেতন, পশ্চাৎপদ ও অসংগঠিত জনগণ আসলে কিছুই নয়, সব দিক থেকে শিক্ষিত, শ্রেণী-সচেতন ও সংঘবদ্ধ হতে পারলে আবার জনগণই সব কিছু।' কিন্তু আজকের গণতান্ত্রিক বিশ্বে এর নজির খুবই কম। কারণ রাজনীতিগতভাবে অসচেতন ও বিভ্রান্ত জনগণ বহুধাবিভক্ত হতে বাধ্য হয়। এ প্রক্রিয়ায়ই হাজার হাজার বছর ধরে গণতন্ত্র এখনো টিকে আছে।
বাংলাদেশে আপাতত একটি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি না পেলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বর্তমান ১৮ দলীয় জোট কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না বলে দৃঢ়ভাবে তাঁর মত বারবার পুনর্ব্যক্ত করেছেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার-পদ্ধতি পুনর্বহালে রাজি হলেই সরকারের সঙ্গে আলোচনা সম্ভব। প্রথমে সংসদের বাইরে এবং পরে বিল এনে সংসদে আলোচনা হতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারকে লিখিতভাবে নিশ্চয়তা দিতে হবে। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিরোধী দলের কাছে সরকার রাষ্ট্রপতির অধীনে একটি নির্বাচনবিষয়ক মুলাও ঝুলিয়ে রেখেছে। কিন্তু রাষ্ট্রপতির অধীনে কোনো নির্বাচন তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ রাষ্ট্রপতিও একজন দলীয় লোক বলে তাঁরা মনে করেন। মোটকথা, নির্দলীয় বা অনির্বাচিত একটি সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে, তাকে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্য যেকোনো নামই দেওয়া হোক না কেন। সরকারের দিক থেকে তেমন একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলেই বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট সংলাপে বসতে পারে। এর বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী বারবার বলে যাচ্ছেন, অনির্বাচিত আর কেউ যাতে অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখল করতে না পারে, তার জন্য সংবিধান সংশোধন করে 'সেফটিক্লজ' সংযোজন করা হয়েছে। সুতরাং কোনো নির্দলীয় বা অনির্বাচিত ব্যক্তিদের অধীনে আর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। এ অবস্থায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট যা চাচ্ছে, তা নিয়ে সংসদের বাইরে বা ভেতরে কোনো সংলাপ কিংবা সমঝোতার আর সুযোগ কোথায়? একটি গণতান্ত্রিক দেশের সংবিধান তো জনগণের স্বার্থে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্যই প্রণয়ন করা হয়। তা যদি জনগণের একটি বিশাল অংশের ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রতিফলনই না ঘটাতে পারে, তাহলে সে সংবিধান তো দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের এবং জনগণের প্রকৃত উন্নয়নের লক্ষ্যকে এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হবে। একসময় এ দেশেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার-পদ্ধতি সংবিধানে সংযোজন করা হয়েছিল। বর্তমান সরকার তা একতরফাভাবে বাদ দিয়েছে এবং তা প্রয়োজনে পুনর্বহালের জন্য জনমত যাচাইয়ের কোনো ব্যবস্থাও সংবিধানে রাখা হয়নি। তাহলে দেশ পরিচালনা কিংবা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জনগণের চূড়ান্ত রায় দেওয়ার আর সুযোগ রাখা হলো কোথায়? তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালে দেশব্যাপী কোনো গণভোট আয়োজনের বিধান সংবিধানে নেই। তাহলে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের এ ব্যাপারে গণতান্ত্রিকভাবে মতামত প্রকাশ করার কোনো চূড়ান্ত সুযোগ রইল না। এ পরিস্থিতিতে ১৯৯৫-৯৬ সালে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক-পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য যে সহিংস আন্দোলনে দেশ স্থবির করে দিয়েছিল, সে পথে যেতেই বিরোধী জোটকে বাধ্য করা হচ্ছে কি? এভাবে কি গণতান্ত্রিক-ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে দেওয়া হচ্ছে না? বর্তমানে রাজনৈতিক দিক থেকে দেশের তথ্যাভিজ্ঞ মহলের ধারণা, আওয়ামী লীগ প্রধান ও মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান না বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন জোট শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিক। যুদ্ধাপরাধসহ দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে জামায়াত, বিএনপি ও অন্য কয়েকটি বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের যথাযথভাবে শায়েস্তা করে অনেকটা রাজনীতিগতভাবে পঙ্গু করে দেওয়া হবে। গত হরতালের দিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ কয়েকটি জায়গায় গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে বলে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেছেন। কারাগারে পাঠানো অধিকাংশ নেতাই বয়োজ্যেষ্ঠ। তাঁদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অন্যান্য স্থানে আর যা-ই হোক, বাস পোড়ানো ব্যক্তিগতভাবে সম্ভব ছিল না বলে দেশবাসীর ধারণা। তা ছাড়া বিরোধী জোটের এত বড় বড় সুপরিচিত নেতা প্রকাশ্যে রাস্তায় গাড়ি পোড়ালেন অথচ একজন মানুষও তাঁদের শনাক্ত করতে পারল না, এ বিষয়টি তো আসলেও দেশবাসীর কাছে হাস্যকর বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের দমননীতি, নির্যাতন ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ রোধ করার অপপ্রয়াসই প্রতিফলিত হয়েছে বলে দেশবাসীর ধারণা। এতে সরকারের জনপ্রিয়তা আরো কমেছে বৈ বাড়েনি। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বহু আগেই বলেছেন যে তাঁদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করা হলে দেশে নির্বাচনই হবে না। সেসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি এবং সবশেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা শান্তিপূর্ণভাবে দুই পক্ষকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পেঁৗছার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু সে ব্যাপারে এখনো কোনো লক্ষণীয় উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট হামলা, মামলা, হত্যা, গুম, নেতাদের গ্রেপ্তারি ও সরকারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনের মুখে আপাতত হরতালের রাজনীতি থেকে পিছিয়ে এসেছে জনস্বার্থে, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যাতে অচল হয়ে না পড়ে সেদিকে লক্ষ রেখে। এ কৌশলকে তাদের দুর্বলতা ভাবার কোনো অবকাশ নেই। তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য তারা হরতালের পরিবর্তে ২০ মে গণ-অনশনের আয়োজন করেছে। বিরোধী জোটের শান্তিপূর্ণ সে কর্মসূচি সব মহলের প্রশংসা পেয়েছে।
বর্তমানে দেশবাসীর দৃষ্টি পড়ে আছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ১০ জুনের ঘোষিত সময়সীমার ওপর। ১০ জুনের ঘোষিত সময়সীমার পর কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে বিরোধী জোট সরকারকে তাদের নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবি আদায়ে বাধ্য করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। তবে সরকারি জোট নেতাদের অনেকের ধারণা, ১০ জুন অতীতে বিরোধী জোট ঘোষিত ১২ মার্চের কর্মসূচির মতোই রাজনীতিতে কোনো লক্ষণীয় প্রভাব না ফেলে পার হয়ে যাবে এবং আওয়ামী লীগ প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর আগের বক্তব্যেই স্থির থাকবেন। গণ-আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সহিংসতা দেখা দিলে দেশব্যাপী তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। পুলিশি নির্যাতন, হয়রানি ও গ্রেপ্তারের পরিমাণ আরো অনেক গুণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল। তাতে দেশে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা ও নৈরাজ্য অনেকাংশে বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। তাকে কেন্দ্র করে সরকারের জনপ্রিয়তায় আরো ভাটা পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হতে পারে। বুদ্ধিজীবী মহলসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রভাবশালী অংশ সরকারের বিভিন্ন নিপীড়নমূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে, যা শ্রমিক-জনতার ব্যাপক অংশগ্রহণের ফলে বর্তমান সরকারের জন্য আত্মঘাতী হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কথা অনস্বীকার্য যে দেশের রাজনীতি এখন আর নিছক দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুৎ ঘাটতি, শেয়ারবাজার, যানজট কিংবা যোগাযোগ সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সাম্প্রতিক বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড, রাজনৈতিক নির্যাতন, হয়রানি, গুম, দুর্নীতি, অপশাসন এবং সরকারদলীয় সহিংসতায় দলমত-নির্বিশেষে দেশের সাধারণ মানুষ এখন অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। স্বাধীনতার গত ৪১ বছরে মানুষ একসঙ্গে এত বহুমুখী দুঃসময়ের সম্মুখীন কখনোই হয়নি। রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহলের কেউ কেউ বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে যতটা কার্যকর, সরকার পরিচালনায় ততটা সফল নয়। দেখা গেছে, গত তিন বছরের মাথায়ই কৃষি ও শিক্ষাসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য থাকা সত্ত্বেও সরকার যেন ক্রমেই সমস্যার পঙ্কে ডুবে যাচ্ছে। দ্রুত হারিয়ে ফেলছে তার ইমেজ ও জনপ্রিয়তা। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটকে জনবিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে তাদের নিজের পায়ের নিচের মাটি যেন ক্রমেই সরে যাচ্ছে। সেদিকে সরকারের খেয়াল নেই। ভোটের একটি দিন ছাড়া আর কখনো মনে হয় না, জনগণ সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। এই একটি দিনে ভোটার নামক জনগণ অত্যন্ত নীরবে-নিভৃতে কী করতে পারে, তা ক্ষমতাসীন সরকারের জানা আছে। সে কারণেই অনেক বিরোধিতা সত্ত্বেও বিশ্বে এখনো গণতন্ত্র এবং নির্বাচনপ্রক্রিয়া বহাল তবিয়তে টিকে আছে। জনগণ সে পদ্ধতিকে যতটা কলঙ্কিত করে না, তার চেয়ে বেশি সর্বনাশ করে সঙ্কীর্ণমনা, আদর্শ ও নীতিবিচ্যুত শাসকরা। তাই গণতন্ত্রের সে দিকটির প্রতি লক্ষ রেখেও বর্তমান সরকারের উচিত এবং একান্ত কর্তব্য হবে বিরোধী শক্তিকে রাজনীতি থেকে সমূলে উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া থেকে সরে আসা এবং প্রকৃত গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা এবং শান্তিশৃঙ্খলার পথে দেশকে ফিরিয়ে আনা। এ দেশ নিয়ে বর্তমানে মানুষের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও দুর্ভাবনার শেষ নেই। বর্তমান অবস্থায় দেশ চলতে থাকলে শুধু রাজনৈতিক সংঘাত নয়, এ দেশে একটি গৃহযুদ্ধ দেখা দিতে পারে, যাতে দেশের সার্বিক গণতান্ত্রিক-ব্যবস্থা পর্যুদস্ত হতে পারে প্রতিহিংসা, নৈরাজ্য ও চরম অস্থিরতার কবলে পড়ে। এবং যে কারণে গ্রিক বুদ্ধিজীবীরা গণতন্ত্র ও তথাকথিত শাসকগোষ্ঠীর ভূমিকার প্রতি সন্দেহ ও অনাস্থা প্রকাশ করেছেন, তা যেন আমরা সত্যে প্রমাণিত করতে সাহায্য না করি। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। রাজনীতি করলে একদিন তাদেরও বিরোধী দলে যেতে হবে। আজকের গণতান্ত্রিক উদারনৈতিকতাই সেদিন হবে তাদের জন্য রক্ষাকবচ।

লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
gaziulhkhan@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.