শেয়ারবাজার-পদহারা পরিচালকদের তালিকা প্রকাশের দাবি

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ২১ মে-র মধ্যে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ পরিচালকদের পদ শূন্য হয়ে গেছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি এ ব্যাপারে নতুন করে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করবে না। তবে ইতিমধ্যে দুই দিন পার হলেও পদ হারানো পরিচালকদের তালিকা প্রকাশ করেনি এসইসি। এ অবস্থায় দ্রুত তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা।


এসইসির সদস্য আরিফ খান গতকাল বুধবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এসইসির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২১ মে-র পর ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ কম্পানি পরিচালকদের পদ শূন্য হয়ে গেছে। এ বিষয়ে নতুন করে কোনো নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।' এদিকে আদালতে রায় ঘোষণার দুই দিন পার হলেও ২ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ পরিচালকদের তালিকা তৈরি বা প্রকাশ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। পদ হারানো পরিচালকদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনের সামনে বিনিয়োগকারীদের সংগঠন পুঁজিবাজার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধন পালিত হয়। এ সময় ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান রশীদ চৌধুরী বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ২ শতাংশের নিচের শেয়ারধারীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
তালিকা প্রসঙ্গে ডিএসইর সভাপতি রকিবুর রহমান বলেন, 'এটা ডিএসইর ব্যবস্থাপনা বিভাগের ব্যাপার। তারা কম্পানি থেকে তালিকা সংগ্রহ করে প্রকাশ করবে।' আরিফ খান বলেন, 'তালিকা প্রকাশের সঙ্গে বাজার পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা এ তালিকা ডিএসইর কাছ থেকে সংগ্রহ করব। ডিএসই তথ্য সংগ্রহ করবে সংশ্লিষ্ট কম্পানির কাছ থেকে।'
ডিএসই কর্তৃপক্ষ তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোর কাছে গতকাল চিঠি পাঠিয়েছে। ডিএসইর প্রকাশনা ও জনসংযোগ বিভাগ জানায়, তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোর সচিবদের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে ২১ মে পর্যন্ত উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ধারণের হিসাব নির্দিষ্ট ছকে ই-মেইলে ও লিখিতভাবে ৩১ মে-র মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। কম্পনিগুলোর সব ধরনের পরিচালকের ব্যক্তিগত ও সম্মিলিতভাবে কত শতাংশ শেয়ার রয়েছে সে সর্ম্পকে বিস্তারিত তথ্য জানাতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে পদ শূন্য ঘোষণা ও এর তালিকা প্রকাশ করাটা জরুরি। তবে এর আগে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার। ২১ মে-র পর অনেক কম্পানিতে এত বেশি পদ শূন্য হয়ে গেছে যে সেসব কম্পানির পরিচালনা পরিষদের বৈঠকের কোরাম পূরণ হবে না। ফলে পরবর্তী বার্ষিক সাধারণ সভা পর্যন্ত পরিচালনা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে কম্পানির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এ ছাড়া কম্পানির পরবর্তী এজিএম অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত ৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে নতুন পরিচালক হওয়ার যে সুযোগ রয়েছে এসইসির নির্দেশনায় এর বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। পরবর্তী এজিএম পর্যন্ত ৫ শতাংশ শেয়ার কিনে নতুন করে পরিচালক হওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি খুঁজে না পাওয়া গেলে এবং তাতে পরিচালনা পরিষদের কোরাম পূরণ না হলে করণীয় কী হবে তাও প্রশ্ন। সে ক্ষেত্রে ২১ মে পর্যন্ত যাদের হাতে ২ শতাংশের নিচে শেয়ার ছিল সেসব পরিচালক নতুন করে কোনো সুযোগ পাবেন কি না সেসব বিষয়ও স্পষ্ট হওয়া জরুরি।
তবে এসব বিষয়ের জন্যও এসইসি প্রস্তুত বলে জানান আরিফ খান। তিনি বলেন, 'পদ শূন্য হয়ে যাওয়ার পর কী কী সংকট তৈরি হতে পারে তার সব দিক ভেবে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। তবে সিদ্ধান্ত জানাতে আদালতের রায়ের কপি পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।'

No comments

Powered by Blogger.