ঢাকা মেডিকেল কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রীনিবাস থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার এক ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত পাপিয়া ভট্টাচার্য (২৪) এমবিবিএস শেষ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। পাপিয়া আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ, পরিবার ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।


হলের কক্ষে তাঁর লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যাতে আত্মহত্যার কথা লেখা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, পাপিয়া কলেজের শহীদ ডা. আলীম ছাত্রীনিবাসের নতুন ভবনে থাকতেন। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে মৌসুমী নামের তাঁর এক রুমমেট ক্লাস শেষে কক্ষে ফিরে এসে দেখেন, ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় পাপিয়া ঝুলছেন। মৌসুমী দ্রুত ছাত্রীনিবাস কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
ছাত্রীনিবাসের তত্ত্বাবধায়ক কে এম শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সকাল সাতটার দিকে দুই রুমমেটসহ পাপিয়া ক্লাস করতে যান। আধ ঘণ্টার বিরতিতে বেলা ১১টার দিকে তিনি কক্ষে ফিরে আসেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হওয়া পরবর্তী ক্লাসে দুই রুমমেট গেলেও পাপিয়া যাননি।
রুমমেটদের বরাত দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক শহীদুল ইসলাম জানান, পাপিয়ারা দুই ভাই-বোন। প্রায় দেড় বছর আগে তাঁর বড় ভাই অনুপম ভট্টাচার্য যুক্তরাষ্ট্রে সুইমিংপুলে ডুবে মারা যান। এ ঘটনার পর থেকে পাপিয়া মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরও শরণাপন্ন হয়েছিলেন বলে রুমমেটরা জানিয়েছেন।
শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপ্লব কিশোর শীল বলেন, ‘আলামত দেখে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ও ধরন সম্পর্কে জানা যাবে।’
বিপ্লব কিশোর শীল জানিয়েছেন, পাপিয়ার লিখে যাওয়া চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমি আর সহ্য করতে পারছি না।’
জানতে চাইলে ফুফাতো ভাই রাজীব চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বড় ভাই অনুপমের মৃত্যুর শোক সহ্য করতে না পেরে পাপিয়া আত্মহত্যা করেছেন বলে আমরা ধারণা করছি।’ ছেলের মৃত্যুর শোক কাটতে না কাটতেই আরেক সন্তানের এমন মৃত্যু পরিবারটিকে হতবিহ্বল করে দিয়েছে বলে তিনি জানান।
পাপিয়াদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদে। তাঁর বাবা অরূপ ভট্টাচার্য। মা চন্দনা বিশ্বাস।

No comments

Powered by Blogger.