স্বাস্থ্য রক্ষায় ইসলামী বিধান by শাহীন হাসনাত

স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর (সুষম) খাদ্য গ্রহণ, ঘুম ও বিশ্রামের যেমন প্রয়োজন। তেমনি প্রশান্তিময় আত্মার জন্য নিয়মিত নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, দান-খয়রাত ও সদাচরণ ইত্যাদির বিশেষ প্রয়োজন।


সুষম খাদ্য গ্রহণের ফলে দেহের যেমন ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) সুন্নত দৈনন্দিন জীবনে পালন করলে প্রশান্তিময় জীবন লাভ করা যায়। স্বাস্থ্যসচেতনতা, পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতাসহ স্বাস্থ্য শিক্ষা সম্বন্ধে ইসলামে রয়েছে প্রচুর দিকনির্দেশনা। স্বাস্থ্যকে সুস্থ সুঠাম করে গঠনের জন্য হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যেসব নীতিমালা ও বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন তার মধ্যে একটি হলো অধিক ভোজন থেকে বিরত থাকা। অধিক ভোজন শুধু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং চিকিৎসা শাস্ত্র অনুযায়ী অধিক ভোজনের কারণে বহু রোগ জন্ম নিয়ে থাকে। এ ব্যাপারে কোরআনুল কারিমে সতর্ক করে ইরশাদ হয়েছে, 'তোমরা খাও এবং পান কর, তবে অপব্যয় কর না।' -সূরা আরাফ : ৩১
আহার করারও একটি স্বাস্থ্যসম্মত নীতি আছে, যে নীতিমালা লঙ্ঘিত হলে সে আহার শরীরের ক্ষয় পূরণের পরিবর্তে তাতে ঘাটতি এনে দেবে। শরীরে জন্ম নেবে নানা রোগের। আমিষ, শর্করা, লবণ ইত্যাদি যেমন খাদ্যের গুণগত মান। অনুরূপভাবে খাদ্য হালাল হওয়াও খাদ্যের একটি অন্যতম বিশেষ গুণগত মান। আমিষ, শর্করা ইত্যাদি দেহে প্রভাব ফেলে। আর হালাল গুণগত মান মানুষের অন্তরে প্রভাব ফেলে। খাদ্য হালাল না হলে বাহ্যিকভাবে দেহের উপকার হচ্ছে মনে হলেও মনের ওপর এর ক্ষতিকর বিরাট প্রভাব পড়ে। খাদ্যের গুণগত মান ঠিক রাখার পাশাপাশি খাদ্য গ্রহণের নীতিমালাও ঠিক রাখতে হবে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, 'তোমরা ডান হাতে ভক্ষণ কর' (মুসলিম শরিফ)। তিন আঙুলে ভক্ষণ কর, আঙুল চেটে খাও (সুনানে কুবরা লিল-বায়হাকি)। দস্তরখানায় ভক্ষণ কর, খাদ্য গ্রহণের পূর্বে 'বিসমিল্লাহি ওয়া আলা বারাকাতিল্লাহ বল।' আর এসবই ইসলামী আদর্শ তথা সুন্নত। মনে রাখবেন হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) সুন্নত বিবর্জিত জীবন কখনও প্রশান্তিময় হতে পারে না। আল্লাহতায়ালা আমাদের সুন্নত অনুযায়ী জীবন অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন।

No comments

Powered by Blogger.