নারীরা যেকোনো ক্ষেত্রে যোগ্যতা প্রমাণে সক্ষম: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত ও শান্তিপূর্ণ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে সব ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। ‘বিশ্ব নারী দিবস-২০১২’ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।


তিনি বলেন, নারীরা যেকোনো ক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম। এ কারণে পুরুষসমাজকে তাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। খবর বাসস ও ইউএনবির।
প্রধানমন্ত্রী জাতি গঠন-প্রক্রিয়ায় সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রতিটি পরিবারের মেয়েশিশুদের প্রতি ছেলেশিশুদের সমান যত্ন নিতে বাবা-মায়ের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘মায়েরা মেয়েশিশুর তুলনায় ছেলেশিশুকে খাওয়া, পড়া, পোশাক, স্বাধীনতা—সবকিছুই বেশি দেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, কয়েক দশক আগেও বিশ্বজুড়ে পুরুষেরা নারীকে লক্ষ্মী, মমতাময়ী, চিরকল্যাণী ইত্যাদি বলে ঘরের কোণে আবদ্ধ করে রাখত। খাওয়া-পড়া-চিত্তসুখসহ সবকিছু থেকেই নারীকে বঞ্চিত করে রাখা হতো। তখন নারীর ভোটাধিকার ছিল না। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস বিশ্বে অর্থনীতি, রাজনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে নারীর সাফল্যকে মহিমান্বিত করেছে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব তারেক উল ইসলাম ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক জেয়াল ওয়াকার বক্তব্য দেন।
এবারের নারী দিবসে জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘গ্রামীণ নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুধা-দারিদ্র্য অপসারণ’।
শান্তিরক্ষী বাহিনীর জন্য উন্নত ও সমন্বিত প্রশিক্ষণের আহ্বান: প্রধানমন্ত্রী গতকাল জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনের বহুজাতিক অনুশীলন ‘শান্তিদূত-৩’-এর উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বিশ্বের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের জন্য উন্নত ও সমন্বিত প্রশিক্ষণের আহ্বান জানান।
গ্লোবাল পিস অপারেশন ইনিশিয়েটিভের (জিপিওআই) আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক কমান্ড (ইউএসপিএসিওএম) রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে তিন দিনের এই অনুশীলনের আয়োজন করে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপসহকারী মন্ত্রী জেমস এসিয়ার, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা, সেনাপ্রধান জেনারেল মো. আব্দুল মুবীন এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিংয়ের (বিআইপিএসওটি) কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল বাশার ইমামুজ্জামান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সেনাবাহিনীর কমান্ডিং জেনারেল লে. জেনারেল ফ্রান্সিস উইয়ারসিনস্কি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সাংসদ, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধান, কূটনীতিক, পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আইএসপিআর জানায়, জাতিসংঘ মিশনে নিয়োগের আগে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের আন্তসংযোগ ও দক্ষতা বৃদ্ধি হচ্ছে এই শান্তির দূত (অ্যাম্বাসেডর অব পিস) অনুশীলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এই অনুশীলনের দুটি বৃহত্তর দিক হচ্ছে মাঠপর্যায়ের অনুশীলন ও স্টাফ অনুশীলন। ১৬টি দেশের এক হাজার প্রশিক্ষণার্থী এতে যোগ দিয়েছেন।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের দ্ব্যর্থহীন অবস্থান পুনর্ব্যক্ত: শ্রীলঙ্কার শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী রিশাদ বাথুইদিন গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের সুস্পষ্ট ও আপসহীন অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা বিশ্বের যেকোনো স্থানে যেকোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে। কারণ, সন্ত্রাসীদের কোনো সীমান্ত নেই।’
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে ব্যাপক আকারে মানসম্পন্ন ওষুধ, তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানি করতে শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.