হালুমের গাছের চারা

সিসিমপুর একটা মজার জায়গা। ছয় বছরের মেয়ে টুকটুকি স্কুলে যায়, পড়তে ভালোবাসে। তিন বছরের ইকরি প্রশ্ন করতে ভালোবাসে। ছয় বছরের শিকু, নেশা তার আবিষ্কার। প্রকৃতিপ্রেমী হালুমের প্রিয় মাছ-সবজি। এ ছাড়া রয়েছে দোকানদার গুণী ময়রা, লাইব্রেরিয়ান আশা, খামারি মুকুল, স্কুলশিক্ষক সুমনা,


ফেরিওয়ালা বাহাদুর, গরু পার্বতী, মোরগ শেরালী, মুরগি বিজলি আর দুই ভেড়া—মানিক ও রতন। এদের নিয়েই সিসিমপুরের গল্প, যা ছাপা হচ্ছে গোল্লাছুটে

হালুম বনমালী নার্সারি থেকে একটি ফুলের চারা এনে টবে লাগিয়ে দিল। হালুম টবটিকে ঘরে এনে রেখে ভাবতে লাগল, চারাটা দিনে দিনে বড় হবে। তারপর ফুল ফুটবে। সে চারাগাছটিকে অনেক আদর করে খেলতে চলে গেল।
এরপর বিকেলে এসে দেখল, চারাগাছটা একটু নেতিয়ে গেছে। সে ভাবল, ওর আরও আদর-যত্ন দরকার। সে অনেক বেশি করে আদর করতে লাগল। মিষ্টি একটা গানও শোনাল। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে চারাগাছটা দেখেই হালুমের চোখ ছানাবড়া হলো। চারাগাছটা একেবারে নুয়ে পড়েছে। সে যতবারই সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে, ততবারই নুয়ে পড়ছে। হালুমের ভীষণ মন খারাপ হলো। সে দুঃখে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল।
হালুমের কান্না শুনে টুকটুকি ছুটে এল। সে বলল, কী হয়েছে, হালুম? কাঁদছ কেন?
হালুম কাঁদতে কাঁদতে চারাগাছগুলো দেখিয়ে বলল, দেখো, গতকাল যখন লাগালাম, তখন কী সজীব আর তরতাজা ছিল। বিকেলে এসে দেখি, একটু নুয়ে পড়েছে, আর এখন দেখছি, একেবারে নেতিয়ে শুয়ে পড়েছে।
টুকটুকি চারাগাছটি দেখে বলল, হালুম, তুমি কি গাছটার যত্ন নিয়েছিলে?
হালুম বলল, অবশ্যই! আমি ওদের আদর করেছি, গান শুনিয়েছি!
টুকটুকি বলল, আলো আর পানি খেতে দাওনি?
হালুম বলল, না তো। গাছ কি আলো আর পানি খায়!
টুকটুকি বলল, হ্যাঁ। ভালোবাসা পেলে গাছ খুশি হয়। গাছ গানও পছন্দ করে। কিন্তু গাছের প্রধান খাবারই হলো পানি আর আলো। আলো আর পানি পায়নি বলেই ও নেতিয়ে পড়েছে। হালুম তৎক্ষণাৎ টবটিকে রোদে এনে রাখল। ঝাঁঝরি ভর্তি করে পানি এনে টবে দিল। বিকেলে এসেই তার চোখটা জুড়িয়ে গেল। চারাগাছটি আবার তরতাজা হয়ে উঠেছে। সে খুশিতে চেঁচিয়ে বলল, ধন্যবাদ টুকটুকি। তোমার কথামতো আলো আর পানি খাইয়েছি বলেই আমার চারাগাছটা তরতাজা হয়ে উঠেছে।

No comments

Powered by Blogger.