সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ-ছাত্রলীগের বিবাদে প্রতিষ্ঠান বন্ধ

আধিপত্য বিস্তারে ছাত্রলীগের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের জের ধরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া বিরক্তি উৎপাদক হলেও বিস্ময়কর নয়। এমন নয় যে, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা কার্যক্রমের ব্যাপারে নাগরিক অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেছে। বরং প্রকৃত কারণ এই_ শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির আহ্বান জানিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় দশক আগে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এখনও ওই আদর্শ ধারণ করে বলে বিশ্বাস করা কঠিন।


বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমরা তাদের নানা কীর্তি ও কোন্দলই দেখে চলছি। ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনের এমন অবক্ষয় এখন আর করুণা নয়, বরং নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্কই সৃষ্টি করে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে কিছুদিন আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে একজন শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছেন, সন্তানের উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশী মাা-বাবার জন্য তা আতঙ্কজনক_ সন্দেহ নেই। কিন্তু তার চেয়েও বড় আতঙ্ক হচ্ছে, ছাত্ররাজনীতির নামে নৈরাজ্য ও অনৈতিকতা ছড়িয়ে দেওয়া এসব 'শিক্ষার্থী'ই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি। প্রগতির আলোর বদলে যারা প্রতিহিংসার অন্ধকারের মধ্য দিয়ে শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করছে; শিক্ষা, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, চিকিৎসাক্ষেত্রে তারা কী ধরনের 'অবদান' রাখবে বলা মুশকিল নয়। সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের যেসব ছাত্রলীগ কর্মী রামদা, রড, জিআই পাইপ, হকিস্টিক নিয়ে পরস্পর হামলে পড়েছে; ভবিষ্যতে চিকিৎসক হিসেবে তারা নাগরিক সেবা করবে_ এর চেয়ে বড় তামাশা আর কী হতে পারে? জাতি ও জীবন নিয়ে এই তামাশা আর চলতে দেওয়া যায় না। ছাত্র সংগঠনগুলোর অভ্যন্তরীণ বা পারস্পরিক কাজিয়ার কারণে কথায় কথায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার সংস্কৃতি থেকেও আমাদের বের হয়ে আসতেই হবে। সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের গোষ্ঠীগত বিবাদের দায় অন্যরা নেবে কেন? আমরা মনে করি, বিষয়টি ফৌজদারি প্রক্রিয়ায় সমর্পণ করে কর্তৃপক্ষের উচিত হবে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দিকে মনোযোগ দেওয়া। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দেরও এমন পরিস্থিতির পরিণতি ভেবে দেখার
সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি।
 

No comments

Powered by Blogger.