মাঠে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৭৪ জন নিহত-মিসরে ফুটবল ইতিহাসের ভয়াবহতম বিপর্যয়

মিসরের পোর্ট সৈয়দে দুই ক্লাবের ফুটবল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৭৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে এক হাজারের বেশি। গত বুধবার রাতে পোর্ট সৈয়দে স্থানীয় ক্লাব আল-মাসরির মাঠে লিগ পর্যায়ের খেলা শেষে বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে ভয়াবহতম এই বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় আল-মাসরির সঙ্গে কায়রোর আল আহলি ক্লাবের মধ্যে ওই খেলা হয়েছিল।


স্বাগতিক আল-মাসরি দলকে ব্যঙ্গ করে স্টেডিয়ামে ব্যানার টাঙায় সফরকারী আল-আহলি দলের সমর্থকেরা। এতে খেলার শুরু থেকেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খেলায় আল-আহলিকে ৩-১ গোলে হারায় স্বাগতিকেরা। খেলা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আল-মাসরির সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে আল-আহলির খেলোয়াড়-সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এর পরই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। স্টেডিয়ামের কোনো কোনো অংশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় অনেকে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। হুড়োহুড়িতে অনেকে পায়ের নিচে চাপা পড়ে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারওয়ান মুস্তাফা জানান, মাঠে ২২ হাজার দর্শক ছিল। প্রতিপক্ষের পিটুনি ও ছুরিকাঘাতেই বেশির ভাগ মৃত্যু হয়েছে।
কায়রোতে আল-আহলি ক্লাবের সামনে কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। আল-আহলি ক্লাবের এক সমর্থক বলেন, ‘তারা ছুরি নিয়ে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।’ আরেকজন বলেন, ‘আগ্নেয়াস্ত্র, পাথর, লোহার রড ও ছুরি নিয়ে মাঠে এবং মাঠের বাইরে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।’
ওই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার পোর্ট সৈয়দে বিক্ষোভ করে স্থানীয় লোকজন। তারা অভিযোগ করে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এ ঘটনা ঘটিয়েছিল।
মুসলিম ব্রাদারহুড বলেছে, এ ঘটনা পরিকল্পিত। জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার দাবি থামাতেই সেনাবাহিনী ও পুলিশ এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
তবে সামরিক কাউন্সিলের প্রধান ফিল্ড মার্শাল মোহাম্মদ হোসেন তানতাওয়ি বলেন, অপরাধীদের অবশ্যই শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে সেনাবাহিনী। এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.