নিউজিল্যান্ডের সাগরতলে বৃহত্তম ‘সুপারজায়ান্টের’ সন্ধান

নিউজিল্যান্ড উপকূলের গভীর সাগরতলে স্বাভাবিকের চেয়ে বহুগুণ বড় ক্রাস্টাসিনের (কাঁকড়াজাতীয় প্রাণী) সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সমুদ্রপৃষ্ঠের সাত কিলোমিটার নিচে এই বিচিত্র প্রাণীর বসবাস। অ্যাম্ফিপড শ্রেণীর এ প্রাণীটি সাধারণত মাত্র দুই থেকে তিন সেন্টিমিটার লম্বা হলেও নিউজিল্যান্ড উপকূলের ‘কারমাডেক ট্রেঞ্চ’-এ পাওয়া প্রাণীটি এর ১০ গুণ বড়।


১৯৮০-র দশকে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই উপকূলে প্রথম সন্ধান পাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছিলেন ‘সুপারজায়ান্ট’। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত অ্যান্টার্কটিকাতেই সবচেয়ে বড় (১০ সেন্টিমিটার) ‘সুপারজায়ান্টের’ অস্তিত্ব মেলে। নিউজিল্যান্ডে সর্বশেষ পাওয়া প্রাণীটির আকার ৩৪ সেন্টিমিটার।
স্কটল্যান্ডের অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয় ও নিউজিল্যান্ডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক রিসার্চের (নিওয়া) একদল বিজ্ঞানী এ অভিযানে অংশ নেয়।
অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানল্যাবের বিজ্ঞানী অ্যালান জেমিসন বলেন, ‘এ যেন এক ফুট দীর্ঘ তেলাপোকা। প্রথম দেখায় আমি হতভম্ব হয়ে যাই এটি ভেবে যে চোখের সামনে এ কী দেখছি!’
বড় ধাতব ফাঁদের সাহায্যে বিস্ময়কর প্রাণীটির সন্ধান পাওয়া যায়। ফাঁদের মধ্যে একটি ক্যামেরাও ছিল। ফাঁদে সাতটি সুপারজায়ান্ট ধরা পড়ে। এ ছাড়া আরও নয়টির ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে। ফাঁদে পড়া প্রাণীগুলোর সবচেয়ে বড়টি ছিল ২৮ সেন্টিমিটার। তবে ছবিতে ধরা পড়া একটির আকার ছিল ৩৪ সেন্টিমিটার।
অ্যাম্ফিপড-জাতীয় প্রাণীদের মহাসাগরের ট্রেঞ্চ বা গভীর খাদে বিশালসংখ্যায় পাওয়া যায়। এসব খাদ ১১ কিলোমিটার পর্যন্ত গভীর হতে পারে। ক্ষুদ্র হলেও অ্যাম্ফিপডরা খুব সক্রিয়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার গুণ বেশি চাপের মধ্যে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনধারণ করে।
একসময় ধারণা করা হতো সমুদ্রের এত গভীরে অতি উচ্চচাপ, অন্ধকার ও ঠান্ডার কারণে কোনো প্রাণ টিকতে পারবে না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সুগভীর খাদগুলোতে বিচিত্র প্রাণের সম্ভার দেখা গেছে।
এ বিষয়ে নিওয়ার বিশেষজ্ঞ ড. অ্যাশলি রোডেন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের সাগরের সবচেয়ে গভীর ও অনন্য অংশ সম্পর্কে আমরা যে কত সামান্যই জানি, নতুন এ আবিষ্কার তা-ই প্রমাণ করে।’ বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.