ভারত এবার ত্রিপুরায় খাদ্যশস্য নিতে চায় by জাহাঙ্গীর শাহ

আবারও আশুগঞ্জ নৌবন্দর ব্যবহার করে বহুমাত্রিক ট্রানজিট-সুবিধা চেয়েছে ভারত। প্রায় ৩৫ হাজার টন খাদ্যশস্য কলকাতা থেকে আশুগঞ্জ বন্দর পর্যন্ত নৌপথে, আর বাকিটা সড়কপথে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় নেওয়ার সুযোগ দিতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করেছে ভারত। দুই দেশের বিদ্যমান ট্রানজিট-সংক্রান্ত নৌ-প্রটোকলের আওতায় এই পণ্য যাবে।


গত ৩০ জানুয়ারি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই চিঠির অনুলিপি নৌ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কাছে পাঠিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন।
ভারতীয় হাইকমিশনের চিঠিতে বলা হয়েছে, নৌ-প্রটোকলের আওতায় ভারত আশুগঞ্জ বন্দরকে ট্রানশিপমেন্ট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করে ৩৫ হাজার টন খাদ্যশস্য ত্রিপুরায় পাঠাতে চায় ভারত। এর মধ্যে ১০ হাজার টন খাদ্যশস্য জরুরিভিত্তিতে পাঠানো প্রয়োজন। ১০ হাজার টনের চালানটি প্রস্তুতও আছে।
এ ছাড়া আশুগঞ্জ বন্দরে এই পণ্য দ্রুত ওঠানামার জন্য ঝুঁকি বন্ড ইস্যুসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন না করারও অনুরোধ জানিয়েছে ভারত।
বাংলাদেশের পক্ষে নৌ-প্রটোকলটি কার্যকরের মূল দায়িত্ব নৌ মন্ত্রণালয়ের। যোগাযোগ করা হলে নৌ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, এখনো নৌ মন্ত্রণালয়ের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবটি আসেনি। এই ধরনের প্রস্তাব এলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষগুলোর মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নিয়মের বাইরে কিছুই করা হবে না।
বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যমান নৌ-প্রটোকলের আওতায় ফিরতি যাত্রাসহ মোট আটটি নৌপথ রয়েছে। এর মধ্যে কলকাতা-হলদিয়া-রায়মঙ্গল-মংলা-কুয়াখালী-বরিশাল-হিজলা-চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ-ভৈরববাজার (আশুগঞ্জ)-আজমিরীগঞ্জ-মারকুলি-শেরপুর-ফেঞ্চুগঞ্জ-জকিগঞ্জ-করিমগঞ্জ এই পথটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহূত হয়। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পথটি বন্ধ করে রাখা হয়।
গত ১৫ অক্টোবর থেকে আশুগঞ্জ হয়ে করিমগঞ্জ পর্যন্ত নৌপথে পর্যাপ্ত নাব্যতা সংকটের কারণে বন্ধ ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিএ।
ত্রিপুরা তথা আগরতলায় পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য সরাসরি কোনো পথ নৌ-প্রটোকলে নেই। সম্প্রতি ভারতের আগ্রহে আশুগঞ্জ পর্যন্ত নৌপথে, এরপর আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাকিটা সড়কপথে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য নতুন পথ তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।
ইতিমধ্যে এই পথটি ব্যবহার করে তিনটি পরীক্ষামূলক চালান আগরতলায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকায় পরীক্ষামূলক চালান শেষে নিয়মিত চালানের অনুমতি দেয়নি বাংলাদেশ।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নৌ-প্রটোকলটি স্বাক্ষরিত হয়। পরে ১৯৮০ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য চুক্তির একটি প্রটোকল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.