আবার প্রবাসীদের নিয়ে

মাহমুদ মানজুর: টানা দুই বছর প্রচারের পর গত বছরের শেষ দিনে শেষ হলো জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চৈতা পাগল’। যেটির মূল চরিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের পাশাপাশি নির্দেশনায়ও দারুণ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন মাহফুজ আহমেদ। আবার ‘চৈতা পাগল’-এর জন্য সময় ব্যয় করার কারণে গেল দুই বছরে সেই অর্থে অন্যের নাটকে খুব বেশি কাজ করার সময় পাননি তিনি। সব মিলিয়ে ‘চৈতা পাগল’-এর সফল সমাপ্তির পর মাহফুজ আহমেদের মন্তব্য এমন, ২০১০ ও ’১১ সালের প্রায় পুরোটাই আমি পাগলের মতো ছুটেছি ‘চৈতা পাগল’-এর পেছনে। এর পেছনে আমার ও আমাদের অনেক শ্রম, মেধা, ভালবাসা ব্যয় হয়েছে। তিক্ত অভিজ্ঞতাও রয়েছে। তবে এর ফাঁকে যতটা সময় পেরেছি অন্যদের কাজও টুকটাক করেছি। যদিও সেটা প্রয়োজন এবং চাহিদার তাগিদে খুবই নগণ্য। তবুও আমি দর্শকদের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ, তারা আমার ‘চৈতা পাগল’ দেখেছেন। আলতা ও চৈতাকে তারা নিজেদের স্বজন বলে ভাবতে শিখেছেন। যার বহিঃপ্রকাশ গ্রামগঞ্জে আমি অনেক পেয়েছি। যেমনটা কোন একটা সময়ে পেয়েছিলাম অরণ্য আনোয়ারের ‘নূরুল হুদা’য় অভিনয় করে। আর এসব মিলিয়ে ‘চৈতা পাগলে’র সফল সমাপ্তি ঘটিয়ে মাহফুজ আহমেদ এখন অনেকটাই তৃপ্তি আর স্বস্তির ঢেকুর তুলছেন। এরই মধ্যে উদ্যোগ নিয়েছেন নির্দেশক হিসেবে তৃতীয় ধারাবাহিক নির্মাণের। জানুয়ারি মাসটা একটু জিরিয়ে ফেব্রুয়ারি থেকেই আবার মাঠে নামছেন তিনি। একক নির্মাণে প্রথম ধারাবাহিক ‘তোমার দোয়ায় ভালো আছি মা’র সিক্যুয়াল নির্মাণ করতে যাচ্ছেন তিনি। ধারাবাহিকটির নাম রেখেছেন ‘মাগো তোমার জন্য’। মাহফুজ আহমেদ জানান, প্রবাসী ভাইদের লোমহর্ষক কষ্টের জীবন চোখে না দেখলে বিশ্বাসযোগ্য হবে না। আমাদের প্রথম ধারাবাহিকটি করতে গিয়ে সেটা উপলব্ধি করেছি। প্রবাসী ভাইদের কষ্টের কথা জানার জন্য এবং চলমান কষ্টগুলোকে লাঘবের লক্ষ্য নিয়েই আবারও আমরা একই গল্পের সিক্যুয়াল করছি। ধারাবাহিকটির মূল শুটিং করব মধ্যপ্রাচ্যে। এদিকে ‘চৈতা পাগল’ শেষ হলেও প্রচার চলতি দুটি ধারাবাহিকে ভিন্নধারার দুটি চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার ধারা অব্যাহত রেখেছেন মাহফুজ। এর মধ্যে এনটিভিতে অরণ্য আনোয়ারের ‘রূপকথা’য় প্রফেশনাল খুনির চরিত্রে। অন্যদিকে এটিএন বাংলায় ‘চাঁদ ফুল অমাবস্যা’য় অভিনয় করছেন পারিবারিক টানাপড়েনে জড়িয়ে থাকা এক প্রেমিকের চরিত্রে। এদিকে নিজের নির্মাণ আর অভিনয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে নতুন প্রজন্মের উত্তরসূরিদের নিয়ে খুব একটা স্বস্তিতে নেই মাহফুজ আহমেদ। এক রকম আফসোস নিয়েই বলেন, আমার পরের প্রজন্ম অনেক স্মার্ট এবং আধুনিক। এটাই স্বাভাবিক। তবে সমস্যা একটাই, ওরা মাসের মধ্যে প্রায় ৩২-৩৩ দিনও শুটিং করে কিংবা করার ভাব করে! নতুন প্রজন্ম প্রসঙ্গে মাহফুজ আরও বলেন, এ প্রজন্মের বেশিরভাগ শিল্পীই বুঝে না বুঝে একসঙ্গে অনেক কাজ গোগ্রাসে গিলতে চায়। এতে শ্যাম আর কূল কোনটাই সঠিকভাবে রক্ষা হয় না। এ বিষয়টি দারুণভাবে অনুভব করি ‘চৈতা পাগল’-এ, একজন ডিরেক্টর হিসেবে। গেল দুই বছরে কত তথাকথিত তারকা আমাকে ফাঁসালো, সেটা ভাবলেও আমি আঁতকে ওঠি। তবুও নতুন বছরে পা রেখে মাহফুজ আহমেদের প্রত্যাশা, নিশ্চয়ই আমরা সবাই নিজের ভালটা বুঝতে পারবো। যে নিজের ভালটা বুঝতে পারে, অন্যের ভালটা বুঝতে তার কষ্ট হয় না। এদিকে নতুন বছরে নতুন ধারাবাহিকের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণের সুই-সুতাও বুনছেন এ তারকা অভিনেতা-নির্দেশক। বলছেন, চলচ্চিত্র তো বানাবোই। এর জন্য সব রকম পরিকল্পনা আর প্রস্তুতিও প্রায় শেষ। চিত্রনাট্য-লোকেশন-কাস্টিংও প্রায় চূড়ান্ত। অপেক্ষা শুধু টাকার জন্য। অন্যের টাকা নয়। প্রথম চলচ্চিত্র বানাবো নিজের টাকায়, যা অকৃপণভাবে খরচ করা যায়। অনেক দিন ধরেই আমি চলচ্চিত্রের জন্য টাকা জমাচ্ছি। বাজেট মাপে টাকা জমা হয়ে গেলেই মাঠে নেমে যাবো থার্টি ফাইভ ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে। প্রমিজ।

No comments

Powered by Blogger.