ভারতের পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস ডেস্ক: কাগজে কলমে বর্তমান অস্ট্রেলিয়া দলের চেয়ে ভারতই শক্তিশালী। কেবল তাই নয়, আগের পাঁচ সিরিজের মধ্যে এবারই প্রথম বক্সিং ডে টেস্টের বেশির ভাগ সময় তারাই ভাল অবস্থানে ছিল। কিন্তু তাদের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতা ও রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকেই জয় এনে দেয়। চার টেস্টের এ সিরিজে ফিরতে হলে ভারতকে পাহাড় টপকানোর কঠিন কর্মটি করতে হবে। আজ সিডনিতে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। বছরে প্রথম এ টেস্টটি তাদের জন্য বিরাট এক চ্যালেঞ্জ। বক্সিং ডে টেস্টে হারের পর অস্ট্রেলিয়া থেকে টেস্ট জেতার নজির দেড় যুগে নেই। সর্বশেষ এ কাজটি করেছিল পূর্ণ শক্তির সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯৯২-৯৩ মওসুমের ওই সিরিজে বক্সিং ডে টেস্টে হারের পর ক্যারিবীয়রা অ্যাডিলেড ও পার্থে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ২-১ এ সিরিজ জিতে নেয়। অপরদিকে ভারত তাদের শেষ তিন সফরে প্রথম টেস্টে হারের পর সিরিজ জিততে পারে নি। শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ ড্র করলেও ইংল্যান্ডে গিয়ে হেরেছে ০-৪এ। তাই বলে একেবারে হতাশার কিছু নেই। ১৯৯০-এর পর মেলবোর্নে ভারতের হারের রেকর্ড শতভাগ হলেও সিডনিতে তা নয়। ১৯৯১ ও ২০০৩ এ ভারত ড্রও করেছে দুটি হারের বিপরীতে। শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলিয়ার যত ভেন্যু আছে তার মধ্যে সিডনিতেই ভারতের সাফল্যের হার বেশি-৪৪.৮০। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার ভেন্যুগুলোর মধ্যে সিডনিতেই স্পিন বেশি কার্যকর। আর কে না জানে স্পিনে ভারত অন্যদের চেয়ে এগিয়ে। তার ওপর সিডনিতে স্বাগতিকদের রেকর্ড সামপ্রতিক সময়ে ভাল নয়। সিডনিতে ২০০০ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত অসিরা একচেটিয়া দাপটে খেললেও গত দু’বছর ভাল যায়নি তাদের বিশেষ করে তারকা ক্রিকেটারদের অবসরের পর। জানুয়ারিতে অ্যাশেজে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে তারা। চার বছর আগে অস্ট্রেলিয়া-ভারত টেস্ট ম্যাচটি ছিল ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত। বিতর্কের সব আলামতই ছিল এর মধ্যে। বাজে আম্পায়ারিং, বর্ণবাদের অভিযোগ, অতিরিক্ত আবেদন আর অখেলোয়াড়োচিত আচরণ ম্যাচটিকে নজিরবিহীন করে রাখে। তবে সৌভাগ্যই বলতে হবে যে, যাদের জন্য বেশি কলুষিত হয় টেস্ট তাদের অন্যতম অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস আর হরভজন সিং এবারের দলে নেই। একজন অবসরে, অন্যজন দলচ্যুত। ওই ম্যাচের আম্পায়ার দুজনও আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেই। এবারের টেস্টটি সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের শততম। তাই এটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সচেষ্ট থাকবে দু’দলই। কেবল লর্ডস আর মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এর চেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের সিডনি টেস্টটি আরেকটি কারণে আলোচনার কেন্দ্রে তা হলো শচীনের শততম আন্তর্জাতিক শতকের অপেক্ষা। এখানে শচীনের তিনটি শতরান রয়েছে তাই আরেকটির প্রত্যাশা খুবই স্বাভাবিক। মেলবোর্নে যে দল নিয়ে খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া সেই দল নিয়েই নামবে সিডনিতে। ভারতের দলে একটি পরিবর্তন আসতে পারে। কোহলির জায়গায় রোহিত শর্মাকে দেখা যেতে পারে। পিচটি ব্যাটিং সহায়কই হবে বলে জানিয়েছেন কিউরেটর টম পার্কার। সুইং ও সিমাররাও ভাল করবে বলে তার পূর্বাভাস। গত জানুয়ারিতে এখানেই ইংল্যান্ড দল ৬৪৪ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছিল।

No comments

Powered by Blogger.