কলকাতায় বাংলাদেশ উৎসব শুরু-তিস্তা সমস্যা মিটে যাবে : মানস ভূঁইয়া by সুব্রত আচার্য্য

তিস্তা নিয়ে যে তিক্ততা তৈরি হয়েছে, অচিরেই তা মিটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পানিসম্পদমন্ত্রী ডা. মানস ভূঁইয়া। শুক্রবার কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসে 'বাংলাদেশ উৎসব' উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখছেন। তা ছাড়া রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও চেষ্টা করা হচ্ছে। মানস ভূঁইয়া ছাড়াও দুই দেশের সুসম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রধান
বিরোধী জোট বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর করতে হবে। বিশেষ করে প্রতিবেশী দুই বাংলার সংস্কৃতি-ভাষা-সাহিত্য প্রায় এক ও অভিন্ন। বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস সরকারও বাংলাদেশের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাস প্রাঙ্গণে পাঁচ দিনব্যাপী 'বাংলাদেশ উৎসব-২০১১' শুরু হয়। পায়রা উড়িয়ে এবং বেলুন ছেড়ে এ আয়োজনের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কর্নেল শওকত আলী, পশ্চিমবঙ্গের পানিসম্পদমন্ত্রী ডা. মানস ভূঁইয়া, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রদূত মোস্তাফিজুর রহমান। উৎসব সূচনার পর মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের স্মৃতির উদ্দেশে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত সবাই। এর পরই শুরু হয় সংগীতানুষ্ঠান। ফাহমীদা নবী ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আসা অন্য শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কর্নেল শওকত আলী বলেন, স্বাধীনতার ৪০ বছরে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশের মানুষ আজ অনেক কিছুই দেখতে পেত।
বিমান বসু বলেন, ভাষার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে পৃথিবীতে বাংলাদেশই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
একদিকে যখন সংগীতানুষ্ঠান জমে ওঠে, তখনই বাংলাদেশের হরেক স্বাদের পিঠা, পায়েস ও ভুনা খিঁচুড়ির স্টলগুলোতে ভিড় উপচে পড়ছিল। লম্বা লাইন দিয়ে ৫০০ টাকা দরে পদ্মার ইলিশ কিনেছেন বহু মানুষ। উপদূতাবাসের ভেতরের এই উৎসবে জামদানি শাড়ি, মেলামাইন, বই ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাসী পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
এর আগে বিজয় দিবসের সকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের আয়োজনে প্রতিবছরের মতো এবারও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবস উদ্যাপন শুরু হয়। বাংলাদেশের বীর মুক্তিযুদ্ধা এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর ২২ সদস্যের বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল ভারতীয় সেনাবাহিনীর আমন্ত্রণে বিজয় দিবসের শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানায়। এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলী। রয়েছেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু এবং নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম।

No comments

Powered by Blogger.