ভবনের ৭০ ফুট উঁচু কার্নিশে এক তরুণী

রাজিয়া আক্তার মিলি (২১) নামের এক তরুণী গতকাল শনিবার দুপুরে হঠাৎ করেই উঠে পড়েন শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পাঁচতলা ভবনের চারতলার কার্নিশে। ভূমি থেকে ওই কার্নিশের উচ্চতা ৭০ ফুট বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাঁকে দেখতে ঘটনাস্থলে ভিড় করে শত শত মানুষ। আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিস এবং শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীরা তাঁকে নামিয়ে আনতে


সক্ষম হন। তবে কিভাবে মিলি কার্নিশে পেঁৗছালেন তা কেউ বলতে পারছে না। একজন নারীর পক্ষে ওই কার্নিশে যাওয়া প্রায় অসম্ভব বলে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা মন্তব্য করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুর পৌনে ২টার দিকে শেবাচিম হাসপাতালের পাঁচতলা ভবনের চারতলার কার্নিশে মিলিকে হঠাৎ দেখা যায়। তাঁকে এত উঁচুতে ঝুঁকিপূর্ণর্ কার্নিশে দেখে শত শত উৎসুক মানুষ ভিড় জমায় শেবাচিম হাসপাতালের নিচে ও আশপাশে। খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে। কিছুক্ষণের মধ্যে ছুটে আসেন শেবাচিম কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে কার্নিশলাগোয়া জানালার গ্রিল কেটে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, স্বাধীনতার আগে নির্মিত ওই ভবনটির প্রতিটি তলার উচ্চতা কমপক্ষে ১৮ থেকে ২০ ফুট। সে হিসাবে ভূমি থেকে ওই কার্নিশের উচ্চতা প্রায় ৭০ ফুট।
উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া বরিশাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক শহীদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ৭০ ফুট উঁচু স্থানে ওঠার মতো কোনো মই বরিশাল বিদ্যুৎ বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাছে না থাকায় তাঁরা হাসপাতালের জানালার গ্রিল কেটে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মিলিকে অক্ষত অবস্থায় নামিয়ে আনতে সক্ষম হন। একজন নারীর পক্ষে ওই জায়গায় পেঁৗছানো প্রায় অসম্ভব মন্তব্য করে তিনি বলেন, হয়তো পাশের টয়েলেটের ভেন্টিলেটর টপকে মিলি কার্নিশে এসেছিলেন।
মিলির বাবা শহরের নথুল্লাবাদের বাসিন্দা শফিকুল আলম জানান, শুক্রবার রাতে মিলি জ্বরে আক্রান্ত হন। রাত ১০টার দিকে তাঁকে শেবাচিম হাসপাতালের চতুর্থ তলার তিন নম্বর ওয়ার্ডের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। শনিবার দুপুরের দিকে তাঁর আচরণের পরিবর্তন চোখে পড়ে। দুপুর ১টার দিকে মিলি চারতলার টয়লেটে যান। এরপর তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে টয়েলেটের পাশের জানালার কার্নিশে তাঁকে পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতাল থেকে পালানোর উদ্দেশ্যে টয়লেটের ভেন্টিলেটর টপকে পাইপ বেয়ে তিনি কার্নিশে পেঁৗছান। তবে উদ্ধারের পর থেকে মিলি কিছুই বলতে চাইছেন না।
শেবাচিম মেডিসিন বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. হুমায়ুন কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, শনিবার দুপুরে মেডিসিন বিভাগ থেকে তাঁকে মানসিক বিভাগ ইউনিটে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মিলি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.