এমপির বয়ান

নির্বাচনের আগে এলাকায় বিদ্যুৎ, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণসহ অবকাঠামো নির্মাণ এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পাকাকরণ ও ক্ষেতলালের একমাত্র প্রধান সড়ক জয়পুরহাট-বগুড়া সরাসরি বাস চালুর কথা দিয়েছিলেন নির্বাচিত বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা। কিন্তু গত তিন বছরে এসব প্রতিশ্রুতি শুধু প্রতিশ্রুতিই থেকে গেছে। এসব বাস্তবায়ন না হওয়ার ব্যাপারে সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফার কাছে প্রশ্ন
ছিল আগামী দুই বছরে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কি বাস্তবায়ন করা সম্ভব? জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমি সব সময় আন্তরিক। নির্বাচিত হওয়ার পর নিজের এলাকার তিনটি উপজেলার গ্রামীণ সড়ক পাকাকরণে ৩০টি প্রকল্প জমা দিয়েছি। কিন্তু মাত্র চারটির বরাদ্দ পেয়েছি, যার কাজও সম্পন্ন করা হয়েছে যথারীতি। বাকিগুলোর কোনো খবর নেই।' তিনি জানান, ১০ বছর আগে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অন্তত ১৫-২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়া, কলেজ, স্কুল ও মাদ্রাসা মিলে ২০টির ভবন নির্মাণ জরুরি হওয়ায় সেসবের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। ভবন নির্মাণে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিরোধী দলের এমপি হওয়ায় আজ পর্যন্ত এসব কাজ বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ এসব নির্বাচনী ওয়াদা ছিল। তিনি বলেন, 'নির্বাচিত হয়ে আন্তরিকতা নিয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করেছি। এর মধ্যে গোপীনাথপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজে অতিরিক্ত দুটি শাখার অনুমোদন, ক্ষেতলাল এসএ কলেজে অনার্স কোর্স চালুর কাজ প্রায় সম্পন্ন এবং কালাই মহিলা ডিগ্রি কলেজে অনার্স বিএসসি ও বিকম বিভাগ খোলার কাজ প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া কালাই মহিলা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা ও স্বীকৃতি লাভ, কৌশলগতভাবে মোলামগাড়ী আদর্শ কলেজের জায়গা বেদখল হওয়ার পর নতুন জায়গায় ভবন নির্মাণ করে কলেজের পরিবেশ পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেছি।' ক্ষেতলালের ওপর দিয়ে ব্রিটিশ শাসন আমল থেকে প্রতিষ্ঠিত প্রধান সড়কে সরাসরি জয়পুরহাট-বগুড়া বাস চালুর উদ্যোগ গ্রহণও ছিল নির্বাচনী ওয়াদার মধ্যে। এ ব্যাপারে এমপি বলেন, 'বগুড়া ও জয়পুরহাট বাস মালিক সমিতির সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি, কিন্তু তাদের অসহযোগিতার কারণে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে সরাসরি বাস চলাচল করার উদ্যোগ সফল হয়নি।' তিনি আক্ষেপের সঙ্গে জানান, নির্বাচনী এলাকার যেসব গ্রাম এবং গভীর ও অগভীর নলকূপে বিদ্যুৎ নেই সেসব স্থানে বিদ্যুৎ পেঁৗছে দেওয়ারও অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি। কিন্তু শুধু বিরোধী দলীয় এমপি বলেই বিদ্যুৎসহ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সব বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। তিন বছরে যেসব টিআর, কাবিখা ও কাবিটার বরাদ্দ পেয়েছেন সেসবের বিপরীতে এলাকার প্রায় প্রতিটি মসজিদ, মন্দির, শ্মশান, কবরস্থান, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন কাঁচা রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন, যেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

No comments

Powered by Blogger.