পুলিশকে নিরাপত্তার কাজেই রাখুন, রাজনীতি সামলাতে নয়-ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য

ছরের শেষ দিকটায় রাজধানীতে ছিনতাইয়ের হার বেড়ে যাচ্ছে। গত বুধবার পুরান ঢাকায় ছিনতাইকারীদের গুলিতে নিহতও হয়েছেন একজন দোকানকর্মী। প্রথম আলোর সংবাদ বলছে, রাজধানীতে চলতি মাসেই আটটি ঘটনায় ছিনতাই হয়েছে ৬২ লাখ টাকা। এসব ঘটনায় নিহত একজন ছাড়াও সাতজন গুলিবিদ্ধ এবং ছুরিকাহত হয়েছেন একজন। ছিনতাই-রাহাজানি-ডাকাতির সংখ্যা যে বেড়ে গেছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। সন্দেহ এখানেই যে পুলিশ


বাহিনী তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি বিষয়টি যথাযথভাবে মোকাবিলা করছে? ছিনতাই-রাহাজানি বাড়ার জন্য পুলিশের দিক থেকে দুটি অনুমান রয়েছে। প্রথম আলোর সংবাদে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার সম্প্রতি বেশ কিছু অপরাধীর জামিনে মুক্তি পাওয়া এবং রাজনৈতিক কারণে সৃষ্ট আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের ব্যস্ত থাকাকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এসব কারণে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো উদ্ঘাটন করা যায়নি বলে তিনি স্বীকার করেন। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার ভরসা কী?
প্রথমত, পুলিশের হাতে ছিনতাইকারীদের তালিকা থাকার কথা, কারা কখন ছাড়া পাচ্ছে সেই খবরও জানার দায়িত্ব তাদেরই। এসব অপরাধীর ওপর নজর রাখা এবং নাজুক এলাকাগুলোতে টহল বাড়ানো কোনো কঠিন ব্যাপার নয়। পুলিশ নিজেই স্বীকার করেছে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়া তথা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের পেছনে দৌড়াতে গিয়েই তাদের শ্রম ও সময় খরচ হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ কমিশনার প্রকারান্তরে স্বীকার করলেন যে পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহারের কারণেই অপরাধ দমনে মনোযোগ কমে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, কেবল পুলিশ বাহিনীকে দিয়েই ছিনতাই-সন্ত্রাস অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। তাদের সহযোগী হিসেবে পাড়ায় পাড়ায় কমিউনিটি পুলিশও রয়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে র‌্যাবের সহযোগিতাও তাদের পাওয়ার কথা। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের সাজসরঞ্জামও অনেক বাড়ানো হয়েছে। এত কিছুর পরও তারা কেন ব্যর্থ হচ্ছে, তার সদুত্তর তাদেরই দিতে হবে। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়ও এড়ানো যায় না। পুলিশের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধের মুখ্য দায়িত্ব মন্ত্রণালয়েরই। মানুষ সাফাই ব্যাখ্যা চায় না। মানুষ চায় নিরাপদে বিচরণ করতে এবং কর্মস্থল থেকে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে।

No comments

Powered by Blogger.