অনশন ভাঙলেন আন্না-লোকপাল বিল লোকসভায় পাস, রাজ্যসভায় উত্থাপন

ভারতের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের নেতা আন্না হাজারে গতকাল বুধবার অনশন ভঙ্গ করেছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে পূর্বনির্ধারিত সময়ের এক দিন আগেই অনশন ভাঙলেন তিনি। তবে দুর্নীতি প্রতিরোধে শক্তিশালী লোকপাল বিল না করায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারাভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। আগামী মাসেই উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখন্ড, মণিপুর ও গোয়ায় বিধানসভার নির্বাচন শুরু


হচ্ছে।গত মঙ্গলবার রাতে লোকসভায় দুর্নীতিবিরোধী লোকপাল বিল পাস হয়েছে। আন্নার মতে, যে লোকপাল বিল পাস হয়েছে, তা দুর্নীতি মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট নয়। শক্তিশালী বিলের দাবিতে মঙ্গলবার থেকে মুম্বাইয়ে তিন দিনের অনশন শুরু করেন আন্না। তবে গতকাল দ্বিতীয় দিনে তিনি অনশন ভাঙেন।
লোকসভায় পাস হওয়া দুর্নীতিবিরোধী বিল গতকাল ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় তোলা হয়েছে। আজ বিলের ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে
জ্বরে আক্রান্ত ৭৪ বছর বয়সী আন্না অনশন ভাঙার পর বলেন, ‘আমরা পার্লামেন্টের করুণ অবস্থা দেখছি। আমি আজ অনশন ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন একটি মাত্র পথ খোলা আছে। তা হলো, যে পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেই রাজ্যগুলোর জনগণকে সচেতন করে তোলা। আমি জনগণকে বলব, বিশ্বাসঘাতকদের ভোট দেবেন না।’ আন্না আরও বলেন, সাধারণ নির্বাচনের এখনো দুই বছর বাকি রয়েছে। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আমি দেশের প্রতিটি প্রান্তে যাব। জনগণকে সচেতন করব।’
এর আগে চিকিৎসকেরা আন্নার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাঁকে অনশন ভাঙার পরামর্শ দেন। সংসদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রাজীব শুক্লা গতকাল সাংবাদিকদের জানান, আজ রাজ্যসভায় ওই বিলের ওপর ভোটাভুটি হবে। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, উচ্চকক্ষে ওই বিল পাস করা কংগ্রেসের জন্য ততটা সহজ হবে না। লোকসভায় লোকপাল বিল পাস করতে বিরোধীদের দারুণ সমালোচনার মুখে পড়ে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন প্রগতিশীল সংযুক্ত মোর্চার (ইউপিএ) শরিক পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল কংগ্রেস ও তামিলনাড়ুর ডিএমকে এই বিলের বিরোধিতা করেছে।
২৫০ আসনের রাজ্যসভায় কংগ্রেস জোটের ৯৪টি আসন রয়েছে। বিরোধী জোটের রয়েছে ১৩৬টি আসন। সমাজবাদী পার্টি (এসপি), বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বিএসপি) ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) মিলে রয়েছে ২৭টি আসন। তার মানে এসপি, বিএসপি ও আরজেডির সমর্থন পেলেও বিরোধী জোটের চেয়ে কংগ্রেসের সমর্থন কম হচ্ছে। লোকসভায় ভোটাভুটির আগে দুর্নীতিবিরোধী বিল প্রত্যাখ্যান করে ওয়াকআউট করে এসপি ও বিএসপি। তাই তাদের সমর্থন পাওয়া কংগ্রেসের জন্য সহজ হবে না। এএফপি, পিটিআই।

No comments

Powered by Blogger.