মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার-সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি ২০ নভেম্বর পর্যন্ত

জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ, হত্যা, লুটপাট, অগি্নসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করা হয়েছে আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত। সাঈদীর আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন পিছিয়ে ২০ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গতকাল রবিবার এ আদেশ দেন।এদিকে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন গতকাল ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছে।অন্যদিকে পরবর্তী তারিখের মধ্যে নিজেদের পক্ষের সাক্ষীর তালিকা দাখিল করতে সাঈদীর আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।


একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গতকাল সাঈদীর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ গতকাল কোনো সাক্ষী হাজির করেনি। রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান গতকাল ট্রাইব্যুনালকে জানান, রাষ্ট্রপক্ষে কোনো সাক্ষী আসেননি। ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষে সূচনা বক্তব্য দেওয়ার কথা বললে সাঈদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বিরোধিতা করেন।
এরপর সাঈদীর বিরুদ্ধে গত ৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য সাঈদীর আবেদন উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি বিচারকাজ তিন মাস মুলতবি রাখার আবেদন জানান। তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানকে প্রত্যাহারের জন্য সাঈদী আবেদন দিয়েছেন। এ আবেদনের ওপর ১৩ নভেম্বর শুনানি হবে। এর আগ পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল কোনো বিচারকাজ করতে পারেন না। এটা করলে তা ন্যায়বিচার হবে না। তিনি বলেন, 'এ জাতীয় অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত বিষয় হচ্ছে_চার্জ গঠনের পর আসামিপক্ষকে কমপক্ষে ছয় মাস সময় দেওয়া হয় নিজেদের প্রস্তুত করার জন্য। কিন্তু আমাদের দেওয়া হয়েছে মাত্র ২৭ দিন।'
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, বিচার বিলম্বিত করার জন্য আসামিপক্ষ অহেতুক আবেদন দিচ্ছে।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২০ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনাল আদেশে বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গোটা জাতি প্রস্তুত। সেই সময় আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন দিয়ে বলেছে, তারা মামলা পরিচালনার জন্য প্রস্তুত নয়। তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে সময় দেওয়া হোক।
আদেশে আরো বলা হয়, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানকে প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর এ আবেদনের ওপর শুনানি হবে। তাই চার্জ গঠন করে গত ৩ অক্টোবরের দেওয়া আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি ১৬ নভেম্বর নির্ধারণ করা হলো। ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য প্রথমে ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করলেও পরে তা পিছিয়ে ২০ নভেম্বর করেন।
গতকাল সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য থাকায় সাঈদীকে কারাগার থেকে হাজির করা হয়। বিচার শুরু হবে এ প্রত্যাশায় ট্রাইব্যুনালে হাজির হন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) হারুন অর রশিদ, ম. হামিদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.