২৪ শীর্ষ সন্ত্রাসী ফেরত চেয়ে ভারতে তালিকা পাঠানো হয়েছে- কমিশনার নিউটন হত্যার আসামি পিয়াল কলকাতায় গ্রেফতার by শংকর কুমার দে

বাংলাদেশের ২৪ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ফেরত পাওয়ার জন্য ভারতের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ভারতে ও নেপালে ধরা পড়েছে ৫ শীর্ষ সন্ত্রাসী। অর্ধডজনের বেশি শীর্ষ সন্ত্রাসীর হদিস মিলছে না।
তারা নিখোঁজ না, গুম করে ফেলা হয়েছে সে সম্পর্কেও কোন তথ্য নেই। ভারতে অবস্থানরত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে। তিন দিন আগে গত বুধবার কলকাতায় ধরা পড়েছে কমিশনার নিউটন হত্যা মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী মিরপুরের পিয়াল। এ খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
অর্ধডজনের বেশি শীর্ষ সন্ত্রাসীকে মেরে লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লিয়াকত হোসেনকে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে র্যাব পরিচয়ে সাদা পোশাকের লোকজন মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গেছে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষ দিকে তাকে ধরে নিয়ে গেছে। প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও তার কোন হদিস নেই। তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তার পরিবারের পৰ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করা হয়েছে, সাদা পোশাকে র‌্যাবের লোকজন তাকে ধরে নিয়ে গেছে। র‌্যাব কর্তৃপক্ষ তার পরিবারের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, র‌্যাব তাকে গ্রেফতার, আটক কিংবা ধরে নিয়ে আসেনি। প্রায় দেড় বছর ধরে লিয়াকত নিখোঁজ আছে।
হদিস মিলছে না মিরপুরের মন্টুর। সাভারের ভিপি হেলালের কোন খোঁজ নেই। হাজারীবাগের আবুল দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ। পল্টনের পরিবহন নেতা মোহাম্মদ আলীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কালা জাহাঙ্গীরকে খুন করে গুম করে ফেলা হয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণার পর থেকে তার কোন সন্ধান নেই। তার সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কেউ বলছে ক্রসফায়ারে খরচ হয়ে গেছে। আবার তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সে আত্মহত্যা করেছে। আন্ডারওয়ার্ল্ডে প্রচারিত আছে, কালা জাহাঙ্গীর প্রতিপৰের গুলিতে খুন হওয়ার পর তার লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে। কালা জাহাঙ্গীরের ভাগ্যের মতোই মিরপুরের মন্টু, সাভারের হেলাল, হাজারীবাগের আবুল, পল্টনের মোহাম্মদ আলীর একই পরিণতি ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের পৰ থেকে সিআইডি ভারতের কাছে ২৪ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা পাঠিয়েছে। ভারতের কলকাতায় তারা আছে বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের পৰ থেকে তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। ভারত এতে সম্মত হয়েছে। দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ থেকে ভারতের কাছে ২৪ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা পাঠানোর পর কলকাতায় ধরা পড়েছে ৪ শীর্ষ সন্ত্রাসী। আর ১ শীর্ষ সন্ত্রাসী ধরা পড়েছে নেপালে। কলকাতায় ধরা পড়েছে ডাকাত শহীদ, হারিছ, জয় ও পিয়াল। ভারত থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে নেপালে ধরা পড়েছে সুব্রত বাইন। তিন দিন আগে গত বুধবার কলকাতায় ধরা পড়েছে মিরপুরের পিয়াল। কমিশনার নিউটন হত্যা মামলার আসামি হচ্ছে সে। সিআইডিকে তার গ্রেফতারের ব্যাপারে কলকাতার গোয়েন্দা পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুলস্নাহ আরেফের নেতৃত্বে সিআইডির টিম ইতোমধ্যে ৮ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। যে ৮ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে তারা হচ্ছে, তাজ, লম্বু সেলিম, বাবুল ওরফে জুয়েল, রফিক মলিস্নক, ইমন ও ইসহাকসহ অপর দু'জন। সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুলস্নাহ্্ আরেফকে কলকাতা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তাকে গত পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার হাতে পিপিএম পদক তুলে দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন।
র্যাবের ডিজি হাসান মাহমুদ খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক জনকণ্ঠকে জানান, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীরা ভারতে অবস্থান করার কথা স্বীকার করে তিনি জানান, ভারতে অবস্থানরত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ফেরত আনার ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.