বিচার অন্ধ কিন্তু বিচারক অন্ধ ননঃ মতিয়া; যুদ্ধাপরাধীদের নয়, জামায়াতের বিচার চলছেঃ মেজর হাফিজ

যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচারকে ‘জামায়াতে ইসলামীর বিচার’ মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব:) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন,
‘জামায়াতের সাথে সরকারের সমঝোতার কারণেই রায়ে জনগণের আশা-আকাক্সার প্রতিফলন হয়নি। আমরা কর্মসূচি করতে গেলে সরকার বাধা দিচ্ছে। অন্য দিকে জামায়াতের সাথে সরকারের ফুলবিনিময় চলছে। এতে কারো বুঝতে আর বাকি নেই যে সরকারের সাথে জামায়াতের কিছু একটা হয়েছে।’

তবে মেজর হাফিজের এ মন্তব্যের বিরোধিতা করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ‘জামায়াতের সাথে সরকারের সমঝোতার খবর ভিত্তিহীন। আমরা বিচার চালিয়ে যাচ্ছি বিচারকাজের মাধ্যমে। পাশাপাশি জামায়াত সম্পর্কে যে বক্তব্য আমাদের নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি বা ইশতেহারে আছে তার মাধ্যমে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। এখানে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।’

মামলা পরিচালনায় প্রসিকিউশনের দুর্বলতার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আদালতে মামলার বিচার চলছে সেহেতু এ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা উচিত হবে না। তবে এটুকু বলতে পারি, বিচার অন্ধ কিন্তু বিচারক অন্ধ নন। এটা আমি বিশ্বাস করি বিচারকের অন্ধ হওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়। বিচারকের চু থাকা উচিত।’

গতকাল রোববার বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে তারা এসব কথা বলেন। বিবিসি বাংলার সাংবাদিক আকবর হোসেনের সঞ্চালনায় দুপুরে রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে এ সংলাপে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির (ঘাদানিক) আইনবিষয়ক সম্পাদক ড. তুরিন আফরোজ ও ব্লগার আরিফ জেবতিক।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, জনগণের সেন্টিমেন্টকে গুরুত্ব দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের  আইন আবারো সংশোধন করা হবে। শাহবাগ স্কয়ারে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলনরতদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘এর আগেও এ আইন সংশোধন হয়েছে। প্রথমে ছিল ষাট দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবে। এই রায় আসার আগেই আমরা এটাকে ৩০ দিন করেছি। এখন আবার সংশোধন হবে। এতে করে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।’

অন্য প্যানেল আলোচকেরা প্রসিকিউশনের দুর্বলতার কারণেই কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ দেয়া যায়নি বলে মন্তব্য করেন। এ সময় মিলনায়তনে উপস্থিত বেশির ভাগ দর্শকই মামলা পরিচালনায় প্রসিকিউশনের দুর্বলতার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে তুরিন আফরোজ বলেন, ‘আমরা এ বিচার নিয়ে রাজনৈতিক সমীকরণ দেখতে চাই না। দুই দলের দ্বন্দ্ব থেকে এ বিচারকে টেনে বের করে আনতে হবে। এ বিচারকে আইনিভাবে মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের এখন সে দিকেই যেতে হবে। ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত দেয়া দু’টি রায় পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রসিকিউশনের প্রচুর দুর্বলতা আছে। তবে রায় নিয়ে আঁতাত হলেও হতে পারে।’ আরিফ জেবতিক প্রসিকিউশনের দুর্বলতার বিষয়ে সহমত প্রকাশ করে বলেন,  আজকে জামায়াত যদি আওয়ামী লীগের সাথে জোট করে তবে বিএনপি কাল থেকেই জামায়াতকে যুদ্ধপরাধী বলা শুরু করবে। এ রকম একটি ইস্যু নিয়ে কোনো রাজনৈতিক সমীকরণ আমরা দেখতে চাই না।

No comments

Powered by Blogger.