খুলনায় ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথ জ্বালিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা

একদল দুষ্কৃতকারী গতকাল বেলা সোয়া ৩টার দিকে নগরীর শিববাড়ী মোড়ে অবস্থিত ইসলামী ব্যাংকের কেডিএ এভিনিউ শাখার এটিএম বুথ ভাঙচুর করে পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
এ ঘটনার পর থেকে নগরীর সর্বত্রই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থল থেকে কয়েক গজ দূরে শিববাড়ী মোড়ে চার দিন ধরে অবস্থান নেয়া গণমঞ্চের দিক থেকে ১৫-১৬টি মোটরসাইকেলে একদল যুবক ইসলামী ব্যাংকের এই বুথে আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা ইটপাটকেল নিপে করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। এ সময় আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ দিগি¦দিক ছোটাছুটি শুরু করে। একপর্যায়ে ওই যুবকরা পেট্রোল দিয়ে বুথ জ্বালিয়ে দেয়। খবর পেয়ে বয়রার ফায়াস সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। এর আগেই ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন।

এটিএম বুথের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারী মো: ওবায়দুল ইসলাম জানান, ১৫-১৬টি মোটরসাইকেলে একদল যুবক শিববাড়ীর দিক থেকে এটিএম বুথের সামনে এসে দাঁড়িয়ে ইটপাটকেল নিপে করতে থাকে। এ সময় দু’জন গ্রাহক ওই বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করছিলেন। হামলার ঘটনা পাশের  তৈয়্যেমুন সেন্টারের দোতলায় অবস্থিত ইসলামী ব্যাংকের কেডিএ এভিনিউ শাখার ম্যানেজারকে জানাই। সেখান থেকে ফিরে এসে দেখতে পাই বুথে আগুন জ্বলছে। এ ঘটনার ৫০ গজ দূরে অবস্থান নেয়া নির্দলীয় গণমঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। তবে হামলা-ভাঙচুর ও সহিংসতায় বিশ্বাসী নই। এ ঘটনার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

ইসলামী ব্যাংকের এভিপি ও কেডিএ এভিনিউ ব্রাঞ্চ ম্যানেজার বি এম হাবিবুর রহমান জানান, সোয়া ৩টার দিকে এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ড ব্যাংকে ছুটে এসে জানান, একদল যুবক বুথে ইটপাটকেল নিপে করে ভাঙচুর চালাচ্ছে। এ খবর পেয়ে অন্য অফিসারদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি বুথে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। সে সময় হামলাকারীদের কেউ ছিল না। ব্যাংকের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এরপর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।  বুথের সামনে অর্ধদগ্ধ একটি কোমল পানীয়ের বোতল দেখিয়ে তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, এই বোতলে বহন করে আনা পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। বুথের টাকা লুট হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা, জমাকৃত চেক ও কম্পিউটারের রেজাল্ট সিট না মিলিয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না ।

এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম কামরুজ্জামান বলেন, ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাকে বলেছেন, শর্টসার্কিটের মাধ্যমে বুথে আগুন লেগেছে। ঘটনার পর থেকে বুথের নিরাপত্তাকর্মীকে পাচ্ছি না। তাকে পাইলে সব পরিষ্কার হবে। তবে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বুথে আগুন লেগেছে এটি সত্যি। তবে কোথা থেকে লেগেছে তা এই মুহূর্তে বলা কঠিন। বুথ জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে  কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবই তো বোঝেন।

No comments

Powered by Blogger.