হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে জঙ্গী-বাংলাভাই আর সৃষ্টি হবে না- রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বিশাল জনসভায় নাসিম by আনিসুজ্জামান,

সাবেক স্বরাষ্ট্র, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, চারদলীয় জোট সরকার আমলে রাজশাহী অঞ্চল বাংলাভাইয়ের জনপদ নামে পরিচিতি লাভ করেছিল।
ব্যারিস্টার আমিনুল হক বাংলাভাইয়ের নেতৃত্বে জঙ্গীদের মাঠে নামিয়ে আশ্রয়প্রশয় দিয়েছিলেন। জঙ্গীরা রাজশাহীর মানুষকে হত্যা-নির্যাতন করেছে। সারাদেশে বোমাবাজি করে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। কিন্তু আজ জননেত্রী শেখ হাসিনার মতায় আসার পর জঙ্গী বাংলাভাইয়ের নাম আর কেউ উচ্চারণ করে না। শেখ হাসিনা যতদিন মতায় থাকবেন, ততদিন বাংলাদেশে আর কোন জঙ্গী বাংলাভাইয়ের সৃষ্টি হবে না। শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সমাটিকাটা আদর্শ ডিগ্রী কলেজ মাঠে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণকালের বিশাল জনসমুদ্রে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারম্নকের সভাপতিত্বে গোদাগাড়ীতে এযাবতকালের বিশাল জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মোঃ মাহবুবুল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আকতার জাহান, গোদাগাড়ী-তানোর থেকে নির্বাচিত ওমর ফারম্নক চৌধুরী এমপি, অধ্যাপিকা জিনাতুন নেসা তালুকদার এমপি, মেরাজ উদ্দিন মোলস্না এমপি, কাজী আব্দুল ওয়াদুদ দারা এমপি, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি, শাহরিয়ার আলম এমপি, গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরম্নজ্জামান রবু মিয়া, চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল এক, বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিরম্নল ইসলাম সান্টু, মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, পুঠিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারম্নক, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি রবিউল আলম বাবু, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জিএম হিরা বাচ্চুসহ গোদাগাড়ী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ । যৌথভাবে জনসভা পরিচালনা করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক একরামুল হক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাবলু।
মোহাম্মদ নাসিম বিশাল জনসমুদ্রকে উদ্দেশ করে বলেন, শেখ হাসিনা মতায় থাকায় এবার আপনারা নিরাপদে সার পেয়েছেন। কোন গুলি হয়নি, সঙ্কট হয়নি। বিদু্যতের সঙ্কট সত্ত্বেও শেখ হাসিনা গ্রামেগঞ্জে চাষাবাদের জন্য বিদু্যত পেঁৗছে দিচ্ছেন। অথচ বিএনপি- জামায়াত জোট সরকার খাম্বা দিয়েছিল, কিন্তু বিদু্যত দেয়নি। আগামী চার বছরের মধ্যে শেখ হাসিনা জনগণকে বিদু্যত সমস্যার সমাধান দেবেন। তাঁর শাসনামলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে না। সারের জন্য কৃষককে আন্দোলন করতে হয় না। গুলিবিদ্ধ হতে হয় না। কৃষকদের কল্যাণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। জামানত ছাড়াই সরকার কৃষকদের কৃষিঋণ দিচ্ছে। মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। নগদ সহায়তার জন্য দেশের সকল কৃষককে কার্ড দিচ্ছে। ন্যাশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ৭ লাখ বেকারের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে; যার নজির কেবল সারা বিশ্বের মধ্যে সিঙ্গাপুরে রয়েছে। একাত্তরের ঘাতক জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীকে আমাদের সকলের প্রিয় মহানবীর (স.) সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে; যা কাফের ও মুনাফেক ছাড়া আর কেউ করতে পারে না।
তিনি বলেন, ব্যারিস্টার আমিনুল হকরা হাওয়া ভবনের মাধ্যমে দেশের জনগণের সম্পদ লুটপাট করেছিল। তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনের বেশি পাবে না। কিন্তু আলস্নাহর কি অশেষ রহমত! বিএনপিই সংসদে মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারে আছে। আমরা এমন কিছু করব না, যাতে আমাদের দুর্নাম হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এমন কাজ করতে হবে, যাতে আগামী নির্বাচনেও মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে। কিন্তু ওরা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট হত্যা করতে চেয়েছিল। আজকের জনসমুদ্রে উপস্থিতি প্রমাণ করেছে দেশের মানুষের কাছে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। আমি ঢাকায় গিয়ে শেখ হাসিনাকে বলব, গোদাগাড়ীর মানুষ আর কোন বাংলাভাইকে দেখতে চায় না। উন্নয়ন চায়, বিদু্যত চায়, শানত্মিতে ঘুমাতে চায়।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশের সকল মানুষ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়; একমাত্র বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বিচার চান না। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে এরশাদ শিকদারের মতো কুখ্যাত খুনীকে গ্রেফতার করে বিচারের ব্যবস্থা করেছিলাম। বিএনপি-জামায়াত যুদ্ধাপরাধের বিচারকে কেন্দ্র করে পেছনের দরজা দিয়ে মতায় যাবার চেষ্টা করছে।
মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিসত্মানী হানাদার বাহিনীর দোসর, ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠনকারী মতিউর রহমান নিজামীর যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য যখন সারা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ তখন তাকে রার জন্য বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদকে (সঃ) বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, জনতার রায় অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবেই।
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, একাত্তরের ঘাতক নিজামীকে মহানবীর (সঃ) সঙ্গে তুলনা করে জামায়াতের নেতারা কাফের ও মুনাফেক হয়ে গেছে। এখন থেকে নিজামীর নেতৃত্বে যারা জামায়াতে থাকবেন, তারাও কাফের ও মোনাফেক হয়ে যাবেন। আপনারা ঘরে ঘরে গিয়ে কাফের ও মোনাফেকদের প্রতিহত করার দাওয়াত দেবেন।
গোদাগাড়ী জনসভার মাঠে হাজার হাজার মহিলার উপস্থিতি প্রমাণ করেছে_ মহিলারা আর ঘুমিয়ে নেই। তারা জেগে উঠেছে। স্মরণকালের বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে রাজশাহী মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন যথার্থই বলেছেন, 'বাংলাদেশের নারীরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জেগে উঠেছেন।'

No comments

Powered by Blogger.