লোডশেডিং আগের মতোই- সুখবর নেই

 বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থায় বুধবারও কোন উন্নতি হয়নি। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আগের মতোই ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং হয়েছে। পিডিবি সূত্র বলছে, সেচ মৌসুম শেষ না হলে সরবরাহ এবং ঘাটতির মধ্যে বিশাল ব্যবধান কমবে না।
পিডিবি সূত্র মতে মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার অনত্মত ৫০ মেগাওয়াট বিদু্যত বেশি উৎপাদন হয়েছে। তবে আড়াই হাজার মেগাওয়াট (বেসরকারী হিসেব) ঘাটতির জায়গায় ৫০ মেগাওয়াট বেশি উৎপাদনে সরবরাহে কোন উন্নতি আশা করা যায় না বলে সংশিস্নষ্টরা মনে করছেন। বুধবার সরকারী হিসেবে দেশে বিদু্যত ঘাটতি ছিল ৯৩৩ মেগাওয়াট। তীব্র গ্যাস সঙ্কটের কারণে প্রতিদিন গড়ে ৮০০ মেগাওয়াট বিদু্যত কম উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া তিনটি কেন্দ্র সংরৰণে থাকার কারণে আরও ৪৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন কম হচ্ছে।
এদিকে ডিপিডিসি মঙ্গলবার আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সি স্কিমের যন্ত্রাংশ সরিয়ে নেয়ার জন্য পিজিসিবিকে দেয়া চিঠিকে বাসত্মবসম্মত বলে মনে করা হচ্ছে না। বুধবার পিজিসিবি এক পাল্টা চিঠিতে জানিয়েছে আন্ডার ফ্রিকোয়েন্সি স্কিমের যন্ত্রাংশ সরিয়ে নেয়ার প্রসত্মাব বাসত্মবসম্মত নয়। যন্ত্রাংশ সরিয়ে নিলে তা কোথায় পুনর্স্থাপন করা হবে ডিপিডিসির কাছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
ডিপিডিসি কন্ট্রোলরম্নম সূত্রে জানা গেছে বুধবার বিকেল ৪টায় ডিপিডিসি এলাকায় ৮৮৩ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১৯৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে। সন্ধ্যায় পিক আওয়ারে ৯৯০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ৩২০ থেকে ৩৩০ মেগায়াটে লোডশেডিং করা হয়। রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় বিদু্যত সরবরাহ করে ডিপিডিসি।
ডেসকোর কন্ট্রোল রম্নম সূত্র জানা গেছে বুধবার বিকেলে তাদের চাহিদা ছিল ৪২৮ মেগাওয়াট। এ সময় লোডশেডিং করা হয়েছে ১১৮ মেগাওয়াট এবং সন্ধ্যা ৭ টায় ৪৭০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ৩৩৫ মেগাওয়াট বিদু্যত পেয়েছে। ডেসকো সন্ধ্যায় ১৩৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং করেছে। রাজধানীর মিরপুর, গুলশান, উত্তরা, বারিধারা ও টঙ্গী এলাকায় বিদু্যত সরবরাহ করে ডেসকো। রাজধানীর সাভার এলাকায় বিদু্যত সরবরাহ করে আরইবি। ঢাকা এলাকায় দৈনিক ৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
পিডিবি সূত্র মতে গ্রীষ্মের তীব্র বিদু্যত বিভ্রাটের কথা চিনত্মা করে সরকার বিদু্যত কেন্দ্র পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধানত্ম নিয়েছে। গত সপ্তাহে বিদু্যত কেন্দ্রগুলোতে ৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে দেশে বিদু্যত উৎপাদন ৩০০ মেগাওয়াট বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সেচের কারণে বাড়তি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি চোখে পড়ছে না। পিক আওয়ারে সেচ পাম্প না চালানোর জন্য চাষীদের উদ্বুদ্ধ করা হলেও অধিকাংশ ৰেত্রে তা মানা হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া রাজধানীরতে বিদু্যত সরবরাহ কোম্পানি ডিপিডিসির অধীনে থাকা স্টিল মিলগুলোও পিক আওয়ারে বন্ধ রাখা হচ্ছে। স্টিল মিলগুলোর চাহিদা প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট। রাত ১১টার পর থেকে স্টিল মিল চালানোর বিষয়টি ডিপিডিসি নজরদারি করছে বলে জানায় সূত্র।
দেশে বর্তমানে বিদু্যত চাহিদা ৫ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। বেসরকারী হিসেবে চাহিদার পরিমাণ আরও ৯০০ মেগাওয়াট বেশি। পিডিবি বলছে, পিক আওয়ারে তারা সর্বোচ্চ উৎপাদন করতে পারে ৩ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট। তবে অক্সলারি ব্যবহার এবং সঞ্চালনের কারিগরি ৰতি বাদ দিয়ে উপকেন্দ্র প্রানত্মে ৩ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। এতে পিডিবির হিসেবেই দেশে বিদু্যত ঘাটতির পরিমাণ এক হাজার ৮৬৫ মেগাওয়াট। তবে বেসরকারী হিসেবে দেশে দৈনিক লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ২ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটের ওপরে।

No comments

Powered by Blogger.